বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তাঁর স্ত্রী শিরিন আকতার ও ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়।

দুদক সূত্র, প্রায় ৫৭ কোটি টাকা কানাডায় পাচারসহ প্রায় ২০৬ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কানাডায় টাকা পাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ৫৮টি ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ নিয়ে ১২৪ কোটি ৯৩ লাখ ৬ হাজার ২৭৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে ৫৬ কোটি ১৬ লাখ ৬০ হাজার ২৬০ টাকা কানাডায় পাচার করেছেন।

৩৬ কোটি ৫১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর স্ত্রী শিরিন আকতারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এই মামলায় শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকেও আসামি করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, আব্দুল হাই বাচ্চু ও তাঁর স্ত্রী ছাড়াও তাঁদের ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিকের বিরুদ্ধে ৮৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭ টাকা কানাডায় পাচারসহ ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬৮৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায়ও ছেলের সঙ্গে বাবা আব্দুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়েছে।

দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণ নিয়ে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ইতিমধ্যে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ৫৮টি মামলা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুদক।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যুবলীগ নেতার ১৩ বছরের কারাদণ্ড

তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বগুড়ার বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা আব্দুল মতিন সরকারকে ১৩ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন বগুড়ার স্পেশাল জজ মো. শহীদুল্লাহ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের স্পেশাল পিপি আবুল কালাম আজাদ।

সাজাপ্রাপ্ত আব্দুল মতিন সরকার বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমান সরকারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ডজনখানেক হত্যা, অস্ত্র এবং মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে একাধিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

পাবনায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা 

রাঙ্গুনিয়া যুবলীগের নেতা ঢাকায় গ্রেপ্তার

এর আগে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মতিন সরকারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলা করেন বগুড়ার সমন্বিত দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। চার্জশীট দাখিল করেন ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।

দুদকের আইনজীবী (পিপি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‍“আব্দুল ‍মতিন সরকারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পাঠানো হয়। ওই মাসেই আব্দুল মতিন সরকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। মতিনের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধান করে দুদক ২ কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পায়। তিনি এই সম্পদের মধ্যে ১ কোটি ৪২ লাখ ১৯ হাজার ৪৯৩ টাকার তথ্য গোপন করেন।” 

তিনি আরো বলেন, “আব্দুল ‍মতিন সরকারের বিরুদ্ধে এই দুই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তথ্য গোপনের জন্য তাকে ৩ বছর এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূথ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।”

প্রসঙ্গত, মতিন সরকার বগুড়ার আলোচিত ধর্ষণ এবং মা মেয়েকে মাথা ন্যাড়া করে দেয়া কাণ্ডের নায়ক তুফান সরকারের বড় ভাই। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তির কথা বলে এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন তুফান। পরে তুফানের স্ত্রী ও তার বড় বোন নারী কাউন্সিলর এবং তুফানের লোকেরা ধর্ষণের শিকার ছাত্রী ও তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালান। এরপর দুজনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৮ জুলাই রাতে মামলা করেন। মতিনের ছত্রছায়াতেই তুফান বেপরোয়া জীবযাপন করতেন। বর্তমানে তুফান হত্যা মামলা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

ঢাকা/এনাম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক, তাঁর স্ত্রীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • যুবলীগ নেতার ১৩ বছরের কারাদণ্ড
  • বগুড়ায় যুবলীগ নেতা মতিনের ১৩ বছরের কারাদণ্ড