৫৭ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে আব্দুল হাই ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 9th, February 2025 GMT
বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তাঁর স্ত্রী শিরিন আকতার ও ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়।
দুদক সূত্র, প্রায় ৫৭ কোটি টাকা কানাডায় পাচারসহ প্রায় ২০৬ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কানাডায় টাকা পাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ৫৮টি ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ নিয়ে ১২৪ কোটি ৯৩ লাখ ৬ হাজার ২৭৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে ৫৬ কোটি ১৬ লাখ ৬০ হাজার ২৬০ টাকা কানাডায় পাচার করেছেন।
৩৬ কোটি ৫১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর স্ত্রী শিরিন আকতারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এই মামলায় শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকেও আসামি করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, আব্দুল হাই বাচ্চু ও তাঁর স্ত্রী ছাড়াও তাঁদের ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিকের বিরুদ্ধে ৮৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭ টাকা কানাডায় পাচারসহ ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬৮৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায়ও ছেলের সঙ্গে বাবা আব্দুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণ নিয়ে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ইতিমধ্যে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ৫৮টি মামলা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুদক।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রী সন্তানসহ সাবেক কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, তাঁর স্ত্রী শিরিন আখতার ও ছেলে রেজওয়ান শাহনেওয়াজের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খানসহ চারজনের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ রোববার এ আদেশ দেন।
এর আগে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করে দুদক।
দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানায়, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং তাঁর অন্য আত্মীয়-স্বজনদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডার–বাণিজ্য, দলীয় পদ ও মনোনয়ন–বাণিজ্য, নিয়োগ–বাণিজ্য, সরকারি জমি আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ অবস্থায় আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী ও ছেলে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। শুনানি নিয়ে আদালত আব্দুর রাজ্জাক ও তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
এর বাইরে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমালের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত। দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এস এম পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। এস এম পারভেজ বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও দুদক জানতে পেরেছেন। আদালত শুনানি নিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
জাহিদ মালেক ও তাঁর ছেলের আয়কর নথি জব্দের আদেশ
এদিকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তাঁর ছেলে রাহাত মালেকের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আজ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি জাহিদ মালেক ও তাঁর ছেলে রাহাত মালেকের ২৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ১২ ডিসেম্বর জাহিদ মালেক ও রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, মামলায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে ৬১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ও তাঁর ছেলে রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
নাঈমুল ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাসাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও তাঁর স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত রোববার এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে তাঁদের স্ত্রী ও ছেলে–মেয়েদর ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তাঁদের ব্যাংক হিসাব স্থগিতের এ নির্দেশনা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়ে দেয়।