ভারতীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাংলাদেশি পোস্টার, তুমুল বিতর্ক
Published: 9th, February 2025 GMT
চিকিৎসার জন্য প্রতিবছর বহু বাংলাদেশি ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে যান। এ নিয়ে ভারতীয়দের গর্বের শেষ নেই। সেদেশেই নবজাতক শিশু ও মায়েদের সুরক্ষায় বাংলাদেশি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অনুকরণ হচ্ছে! এমন ছোট্ট একটি পোস্টারের কারণে তুমুল আলোচনা চলছে।
অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টি তাদের জানা নেই। তাহলে কীভাবে এল এই পোস্টার, তা নিয়ে চলছে বিতর্ক।
পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের আইসিইউর ঠিক পাশে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকৃত ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ারের পোস্টার। সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর সেই সন্তানকে কীভাবে পরিচর্যা করা প্রয়োজন, সেসব বিষয়ে সচেতনতার কথা লেখা রয়েছে এই পোস্টারে।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে শরীরে পেট্রোল ঢেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪
ভারতের সরকারি-বেসরকারি সমস্ত হাসপাতালেই দেওয়া হয় ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার পোস্টার। তবে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে সেই পোস্টারের বাংলাদেশ সরকারের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু লোগো ব্যবহারই নয়, অভিযোগ রয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গোটা পোস্টার কপি করে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের সুপার ধীমান মন্ডলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমি জানি না। তবে এ ধরনের লোগো ব্যবহার করা যায় না। কে লাগিয়েছে, কেন লাগানো হয়েছে, খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
এরপর সেই পোস্টার সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়।
দুই দেশের শীতল কূটনৈতিক সম্পর্কের মাঝে এমন ছোট্ট ঘটনাতেও রাজনৈতিক রঙ লাগতে সময় লাগেনি। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে হাসপাতালে হাজির হন বিজেপির চিকিৎসক সেলের সদস্যরা। সঙ্গে ছিলেন দলের নেতাকর্মীরা। সুপারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তারা। শেষ পর্যন্ত সুপার গাফিলতির কথা কার্যত স্বীকার করে নেন।
ধীমান মন্ডল বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে কে পোস্টার লাগিয়েছে, তাকে খুঁজে বের করা হবে। পুলিশকেও জানানো হয়েছে।
বিজেপির পক্ষ থেকে হাসপাতাল সুপার ধীমান্ড মন্ডলের কাছে প্রতিবাদ জানিয়ে এবং দায়ীকে খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীমান মন্ডল।
বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত। এখানে যে কোনো সরকারি হাসপাতাল বা সরকারি দপ্তরে কোনো পোস্টার দিতে হলে সেখানে ভারত সরকার বা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পোস্টার দেওয়া উচিত। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের একটি পোস্টারে বাংলাদেশের লোগো ব্যবহার করা হলো। আমরা তীব্র বিরোধিতা করছি। এই বিষয়টি কেন করা হলো, দেখা দরকার সরকারের প্রতিনিধিদের। যারা এই কাজ করল, তাদের কঠোর শাস্তিরও দরকার।”
সমালোচনায় সরব হয়ে পাল্টা শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ধমান জেলার সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির পর থেকে এ রাজ্যকেও অশান্ত করার চেষ্টা করছে কেউ কেউ। সরকারি হাসপাতালের ভেতরেও চক্রান্ত করে কেউ বাংলাদেশের লোগো লাগিয়ে দিয়েছে। আমরা সুপারকে থানায় অভিযোগ জানানোর জন্য বলব। যে এই ঘটনার সাথে জড়িত, তার বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও পুলিশকে জানান হবে।”
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের দেয়ালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো দেওয়া পোস্টার ঘিরে শুক্রবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
ঢাকা/সুচরিতা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ সরক র র ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
৭ বছর পর চুয়েট ছাত্রলীগের ছয় নেতার নামে মামলা
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ২০১৮ সালে দুই শিক্ষার্থীকে মারধর, চাঁদাবাজি এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। এতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের চুয়েট শাখার সাবেক ৬ নেতাকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সাত বছর পর মামলা দুটি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাহমুদুল ইসলাম ও জামিল আহসান।
রাউজান থানায় ওই মামলায় আসামিরা হলেন– চুয়েটের তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ ইমাম বাকের, সাখাওয়াত হোসেন, অতনু মুখার্জি, নিলয় দে, মেহেদী হাসান ফরহাদ ও মোহাম্মদ ফখরুল হাসান ফাহাদ। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জামিল সমকালকে বলেন, নির্যাতন শেষে বাকের বলেছিল, হাসিনা আরও ১০ বছর ক্ষমতায় থাকবে। অর্থাৎ তারা ভেবে নিয়েছিল ওই নির্যাতনের জন্য তাদের কখনও জবাবদিহি করতে হবে না। এজন্যই মামলাটি করেছি।
মামলায় কারণে শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেননি মাহমুদুল। তিনি বলেন, ওই ঘটনার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে আমার জীবনে।