বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি ও ই-ক্যাবে প্রশাসক, ১২০ দিন পরেও নির্বাচনের কোনো ঘোষণা নেই
Published: 9th, February 2025 GMT
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের সবচেয়ে পুরোনো সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতিতে (বিসিএস) ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (ই-ক্যাব) প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আদেশে বলা হয়েছে, প্রশাসক ১২০ দিনের মধ্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবে। তবে ১২০ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো কোনো নির্বাচনের ঘোষণা আসেনি। দুই সংগঠনই বলছে, সময় বাড়ানো হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০ আগস্ট বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য একযোগে পদত্যাগ করেন। এরপর ২ সেপ্টেম্বর এক তলবি সভার মাধ্যমে স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামকে অন্তর্বর্তীকালীন আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়। এ সভায় বিসিএসের বেশ কয়েকজন সাবেক সভাপতিসহ সদস্যদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সমিতির এ সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য পরিচালক, বাণিজ্য সংগঠনে (ডিটিও) পাঠানো হয়। তবে ডিটিও বিষয়টি অনুমোদন করেনি। পরে সংগঠনে প্রশাসক নিয়োগের অফিস আদেশ দেওয়া হয়েছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিসিএসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাহিদ আফরোজকে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই প্রশাসকের দায়িত্ব ছিল ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু ডিসেম্বরের ২৪ তারিখে সময়সীমা অতিক্রম করলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচন আয়োজনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
নাহিদ আফরোজকে আজ রোববার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি একটু বাইরে আছি, ৩০ মিনিট পরে ফোন দেন।’ এরপর ৩০ মিনিট পরে তাঁকে ফোন দিলে তিনি আর ফোন ধরেননি। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি বিসিএসের সভা ডাকলেও সেটি স্থগিত করা হয়।
স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এখানে অনেক ভুতুড়ে সদস্য রয়েছেন, যাঁদের কোনো কাগজপত্র ঠিক নেই। সেগুলোকে আমরা বাদ দিতে বলেছি। কিন্তু সেটাও সম্ভব হয়নি। আমরা বলেছি, যেহেতু লোকবল কম, তাহলে বিসিএসের একটা সহায়ক কমিটি করে দিতে।’
এদিকে একই অবস্থা ই–ক্যাবেও। ই-ক্যাবের ২০২২-২৪ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে শমী কায়সার পদত্যাগ করেন ১৩ আগস্ট। এরপর ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (ই-ক্যাব) সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর। তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল সেলের উপসচিব মুহাম্মদ সাঈদ আলীকে ই-ক্যাবের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। গত বুধবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুতই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করব আশা করছি, আগামী রোববার ঘোষণা হতে পারে।’
১২০ দিন বেঁধে দেওয়ার পরেও কেন এত দেরি হলো, এই প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ সাঈদ আলী আরও বলেন, ‘এটা এক্সটেন্ড করা হয়েছে, মানে সময়টা বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি কোনো জটিলতা না থাকলে রোববারই তফসিল ঘোষণা হবে।’
এ ব্যাপারে আজ রোববার আবার প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ই-ক্যাবের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ তবে বিস্তারিত তফসিল এখনো ঘােষণা করা হয়নি।
ই-ক্যাবের সদ্যবিদায়ী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন বলেন, একজন ব্যবসায়ীই একজন ব্যবসায়ীর পালস বুঝবেন। যেহেতু এটা বাণিজ্য সংগঠন, সেহেতু একটা নির্বাচনের মাধ্যমে তাঁদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১২০ দ ন ব স এস প রথম স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকাকে হত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে ফাহিম
রাজধানীর মিরপুরে ফারজানা ইয়াসমিন নামে ঢাকা সেন্ট্রাল ওমেনস কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলায় প্রেমিক তানজিদ জোবায়ের ফাহিমকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন।
এদিন চার দিনের রিমান্ড শেষে ফাহিমকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক পলাশ খান। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীর ভাই নওশেদ আহম্মেদ বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় ফাহিমকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ২৮ মে ফারজানা ইয়াসমিন কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যখন সে বাসায় ফিরে আসে না, তখন পরিবারের সন্দেহ হয় সে কোনো সম্পর্কে জড়িয়েছে অথবা সম্পর্ক করে কাউকে বিয়ে করেছে। এরপর গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার মেঝ বোন সাজিয়া সুলতানার ইমু নম্বরে ফোন করে জানান, তিনি ফারজানা নাসরিনকে ২/১ দিনের মধ্যে তাদের বাসায় নিয়ে যাবে। অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে সে ফোন কেটে দেয়।
এরপর ওইদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুনরায় অজ্ঞাত ব্যক্তি সাজিয়া সুলতানার ইমুতে কল করে জানান, ফারজানা নাসরিন মৃত্যুবরণ করেছে। তখন সাজিয়া সুলতানা বিষয়টি নওশেদ আহম্মেদকে জানায়।
নওশেদ আহম্মেদ অজ্ঞাত ব্যক্তির মোবাইল নম্বরে ফোন করে নাম জিজ্ঞাসা করলে তার নাম ফাহিম বলে প্রকাশ করেন। এরপর মিরপুর ৬০ ফিট ছাপড়া মসজিদের কাছে গিয়ে তাকে ফোন করতে বলেন। নওশেদ আহম্মেদ মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। থানা পুলিশ এবং সিআইডি ক্রাইমসিন ইউনিট তাৎক্ষণিকভাবে তাকে নিয়ে মিরপুর মডেল থানার উত্তর পীরেরবাগে তানজিদ জোবায়ের ফাহিমের বাসায় গিয়ে ফারজানা নাসরিনের মৃতদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।
নওশেদ আহম্মেদ অভিযোগ করেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে যেকোনো সময় তানজিদ জোবায়ের ফাহিমসহ অজ্ঞাতনামারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ফারজানা নাসরিনকে দীর্ঘদিন ঘটনাস্থলে আটক রেখে অসামাজিক কার্যকলাপ করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করে।
ঢাকা/মামুন/এসবি