ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় সিলেটের সাবেক এসপি কারাগারে
Published: 9th, February 2025 GMT
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা মামলায় জেলার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মান্নানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি রংপুর রেঞ্জে পুলিশ সুপার হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন। গত শুক্রবার রাতে রংপুর থেকে তাঁকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ রোববার দুপুরে তাঁকে সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালতের বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মোল্লা বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আব্দুল মান্নান কুমিল্লা ও সিলেটের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর তিনি রংপুর রেঞ্জ কার্যালয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে গত শুক্রবার রাতে তাঁকে আটক করা হয়। এসপি থাকতে তাঁর বিরুদ্ধে সংসদ নির্বাচন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বলপ্রয়োগের অভিযোগ আছে। এ ছাড়া সিটিটিসির পুলিশ সুপার থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে জঙ্গি নাটক সাজানোর একাধিক অভিযোগ আছে।
গোলাপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, গত ৮ জানুয়ারি সেন্টু চন্দ্র নন্দী নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আব্দুল মান্নানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিধি অনুযায়ী তাঁকে থানায় আনার পর কারাগারে পাঠানো হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে নেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি গঠন, পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ করেছেন পদবঞ্চিতরা।
কমিটি গঠনে বৈষম্য হয়েছে দাবি করে সোমবার দিনভর ঢাকা-রাজশাহী-রংপুর মহাসড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
আন্দোলনে পদবঞ্চিতদের সমন্বয়ক মুন্তাসির মেহেদী হাসান বলেছেন, জেলা কমিটি গঠনের নামে বৈষম্যমূলক পকেট কমিটি করা হয়েছে। যে কারণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অনেক প্রতিনিধিরা আন্দোলন করছেন। ইতোমধ্যে ঘোষিত কমিটি থেকে ৫৩ জন পদত্যাগ করেছেন। যার কপি দ্রুত কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানো হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঘোষিত কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পদ দেওয়া হয়েছে। অথচ জেলা সদরসহ উপজেলা পর্যায়ে আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখা অনেকেই কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নামে বৈষম্যের বিষয়টি আমরা অবগত করার চেষ্টা করেছি। কেউ তাতে গুরুত্ব না দেওয়ায় মহাসড়ক ব্লকেড করেছেন পদবঞ্চিতরা।
বিষয়টি নাকচ করে সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির নবনির্বাচিত আহ্বায়ক সজীব সরকার বলেন, আগামী ৬ মাসের জন্য জেলা, ৯টি উপজেলা ও থানার সমন্বয়ে জেলার আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্বে সব উপজেলা, থানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের পর সম্মেলনের মাধ্যমে জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় ছাত্রদল ও শিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠনের ছাত্র প্রতিনিধিরা একসঙ্গে আন্দোলন করেছি। সরকার পতনের পর সবাই যার যার সংগঠনে ফিরে গেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে দিতে চাইলে অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ নেই। যারা পদবঞ্চিত হয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই দুই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তারাও কমিটিতে পদ পাননি। পাশাপাশি কিছু ছাত্র প্রতিনিধি বাদ পড়েছেন যারা উপজেলা, থানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কমিটিগুলোতে স্থান পাবেন।
ব্লকেড প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। এরপর ঘণ্টাখানেক বিরতি দিয়ে আবারো অবরোধ শুরু করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত ২৮৪ সদস্য বিশিষ্ট সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
এতে সজীব সরকারকে আহ্বায়ক, মেহেদী হাসানকে সদস্য সচিব, ইকবাল হোসেন রিপনকে মুখ্য সংগঠক ও টি এম মুশফিক সাদকে মুখপাত্র করা হয়। এরপর থেকে এ কমিটি নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।