মুঠোফোনে গেমস খেলতে না দেওয়ায় বাড়িছাড়া কিশোর, দুদিন পর রেস্তোরাঁ থেকে উদ্ধার
Published: 9th, February 2025 GMT
মুঠোফোনে ‘ফ্রি ফায়ার ব্যাটল’ গেমস খেলার সুযোগ না দেওয়ায় অভিমানে বাড়ি ছাড়ার দুই দিন পর ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে উদ্ধার করেছে র্যাব। আজ রোববার বিকেলে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁ থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধারের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া ওই শিশুর (১৩) বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার একটি গ্রামে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
পরিবারের বরাত দিয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ওই কিশোর মুঠোফোনে অনলাইনে ‘ফ্রি ফায়ার’ খেলার জন্য টাকা চায়। তবে তার মা এতে আপত্তি জানান। মুঠোফোনের ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন ছেলেকে। তবে কিশোরটি এতে অভিমান করে গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়। রাতে বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও হদিস না পেয়ে তাঁর মা শনিবার বাগমারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর পুলিশ বিভিন্ন থানায় বেতারবার্তা পাঠায়। পাশাপাশি র্যাবও শিশুকে উদ্ধারের তৎপরতা চালায়।
এদিকে আজ সোমবার বিকেলে রাজশাহী নগরের রহমানিয়া রেস্টুরেন্টে কিশোরের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় র্যাব–৫–এর একটি দল কিশোরটিকে উদ্ধার করে বাগমারা থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বাগমারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদ শেখ বলেন, উদ্ধারের পর কিশোরের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, সে ওই দিন বিকেলে তাহেরপুর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে রাজশাহী শহরে যায়। রেস্তোরাঁয় কাজ নেওয়ার জন্য শহরের সাহেববাজার এলাকায় অবস্থিত রহমানিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে যায়। সেখানে ক্যাশ টেবিলে থাকা ব্যবস্থাপকের কাছে চাকরির জন্য বললে তিনি ৫০০ টাকা বেতনে চাকরি দেন। গত দুই রাত থেকে সে অন্যদের সঙ্গে রেস্টুরেন্টেই থাকে। পরে ব্যবস্থাপক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি নিখোঁজ সংবাদ দেখে র্যাবকে খবর দেন। পরে র্যাব তাকে উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করে।
সন্ধ্যায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে শিশুকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এসআই জাহিদ শেখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এসআইয়ের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ
মামলার তদন্তের সময় ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠির নলছিটি থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মাইনউদ্দিন খান রোববার পুলিশের বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি বরাবর রোববার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি অনুলিপি দিয়েছেন আইজিপির কমপ্লেন সেল ও ঝালকাঠির পুলিশ সুপারকে। যদিও এসআই শহিদুল দাবি করেছেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা।
মাইনউদ্দিন খান উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের জুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। ২০২৩ সালের ১৫ মে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা (পিটিশন মামলা নম্বর-৪৩/২০২৩) করেন দপদপিয়া ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. সাইফুল আকন। এতে ১ নম্বর আসামি করা হয় মাইনউদ্দিন খানকে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এসআই শহিদুল আলম আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল আকনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এর আগেই তিনি মামলা থেকে মাইনউদ্দিন খানকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এতে রাজি না হলে মাইনউদ্দিনের মোবাইল ফোন (ডিভাইস) জব্দ ছাড়াই ফরেনসিক রিপোর্ট অনুসরণ না করে মনগড়া প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ মে আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জেলহাজতে পাঠানো হয় মাইনউদ্দিন খানকে। ১০ দিন পর ২৮ মে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
মাইনউদ্দিন খানের অভিযোগ, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ১০ মিনিটে শহিদুল আলমের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর থেকে তাঁর ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন খানের নম্বরে কল আসে। রিসিভ করার পর ওই পুলিশ কর্মকর্তা মিথ্যা মামলায় মাইনউদ্দিন খানকে আবারও জেল খাটানোসহ নানা হুমকি-ধমকি দেন।
মাইনউদ্দিন খান বলেন, এসআই শহিদুল আলম একই থানায় দীর্ঘদিন ধরে আছেন। এ কারণে ঘুষ-দুর্নীতিতে জড়িয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। নিরীহ জনগণকে হয়রানি, হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। পরিবার নিয়ে তিনি আতঙ্কিত।
এসআই শহিদুল আলম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার সবই মিথ্যা। আমি ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। মাইনউদ্দিন খানের ভাই গিয়াসকে কল করে হুমকি দেওয়ার ঘটনাও সত্য নয়।’
লিখিত আকারে কোনো অভিযান না পেলেও বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালাম। তাঁর ভাষ্য, শহিদুল ইসলাম একজন ভালো কর্মকর্তা হিসেবেই পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। জেলার পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায় সোমবার বিকেলে বলেন, তিনি এমন কোনো অভিযোগ হাতে পাননি।