মুঠোফোনে ‘ফ্রি ফায়ার ব্যাটল’ গেমস খেলার সুযোগ না দেওয়ায় অভিমানে বাড়ি ছাড়ার দুই দিন পর ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। আজ রোববার বিকেলে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁ থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধারের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া ওই শিশুর (১৩) বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার একটি গ্রামে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।

পরিবারের বরাত দিয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ওই কিশোর মুঠোফোনে অনলাইনে ‘ফ্রি ফায়ার’ খেলার জন্য টাকা চায়। তবে তার মা এতে আপত্তি জানান। মুঠোফোনের ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন ছেলেকে। তবে কিশোরটি এতে অভিমান করে গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়। রাতে বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও হদিস না পেয়ে তাঁর মা শনিবার বাগমারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর পুলিশ বিভিন্ন থানায় বেতারবার্তা পাঠায়। পাশাপাশি র‌্যাবও শিশুকে উদ্ধারের তৎপরতা চালায়।

এদিকে আজ সোমবার বিকেলে রাজশাহী নগরের রহমানিয়া রেস্টুরেন্টে কিশোরের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় র‌্যাব–৫–এর একটি দল কিশোরটিকে উদ্ধার করে বাগমারা থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

বাগমারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদ শেখ বলেন, উদ্ধারের পর কিশোরের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, সে ওই দিন বিকেলে তাহেরপুর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে রাজশাহী শহরে যায়। রেস্তোরাঁয় কাজ নেওয়ার জন্য শহরের সাহেববাজার এলাকায় অবস্থিত রহমানিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে যায়। সেখানে ক্যাশ টেবিলে থাকা ব্যবস্থাপকের কাছে চাকরির জন্য বললে তিনি ৫০০ টাকা বেতনে চাকরি দেন। গত দুই রাত থেকে সে অন্যদের সঙ্গে রেস্টুরেন্টেই থাকে। পরে ব্যবস্থাপক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি নিখোঁজ সংবাদ দেখে র‌্যাবকে খবর দেন। পরে র‌্যাব তাকে উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করে।

সন্ধ্যায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে শিশুকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এসআই জাহিদ শেখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র ব গম র

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়োগবঞ্চিত ৮৮ জনের পুলিশের এসআই পদে নিয়োগের পথ খুলল

পুরো ফলাফল প্রকাশ না করা এবং পুলিশের উপপরিদর্শকের (নিরস্ত্র) শূন্য পদে ৮৮ জনকে নিয়োগ দিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ওই নিয়োগ প্রশ্নে দুই বছর আগে দেওয়া রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন।

এই রায়ের ফলে পুলিশের উপপরিদর্শকের (নিরস্ত্র) শূন্য পদে ৮৮ জনের নিয়োগের পথ সুগম হলো বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।’

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে বি এম ইলিয়াসের সঙ্গে শুনানিতে আরও ছিলেন আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।

আইনজীবীদের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে পুলিশের সাব–ইন্সপেক্টর (এসআই–নিরস্ত্র) হিসেবে প্রকৃত শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালের ৪ মে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এ অনুসারে অন্যান্য প্রাথমিক পরীক্ষার পর একই বছরের ৩০ জুলাই লিখিত পরীক্ষা হয়। এতে ৫ হাজার ৮৩৯ জন উত্তীর্ণ হন। মৌখিক পরীক্ষা শেষে ১ হাজার ৪০০ শূন্য পদের বিপরীতে ৯২১ জনকে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর সুপারিশ করা হয়। এ অবস্থায় শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ না দেওয়ায় পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর আবেদন করেন রিট আবেদনকারীরা। এতে ফল না পেয়ে নিয়োগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন তাঁরা। এতে প্রতিকার না পেয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিয়োগবঞ্চিত ৮৮ জন ২০২৩ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পুরো ফলাফল প্রকাশ না করা এবং পুলিশের উপপরিদর্শক (নিরস্ত্র) হিসেবে শূন্য পদে রিট আবেদনকারীদের (৮৮ জন) নিয়োগ দিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুল বিচারাধীন অবস্থায় গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি প্রকৃত শূন্য পদে সরাসরি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এ অবস্থায় রিট আবেদনকারীরা তাঁদের জন্য শূন্য পদ সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৫ মে হাইকোর্ট আবেদন মঞ্জুর (ছয় মাসের জন্য শূন্য পদ সংরক্ষণ) করে আদেশ দেন। অর্থাৎ রিট আবেদনকারীদের (৮৮টি পদ) জন্য সংরক্ষণ করতে বলা হয়। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন।

শুনানি নিয়ে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রেখে মূল বিষয়বস্তুতে হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেন আদালত।

পুরো ফলাফল প্রকাশ না করার বিষয়ে রিট আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, প্রকৃত শূন্য পদে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে লিখিত ও মৌলিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ৯২১ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। তবে মৌখিক পরীক্ষায় কতজন উত্তীর্ণ হয়েছেন, তা সুনির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তখন এ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ গণমাধ্যমের খবরে আসে। যে কারণে পুরো ফলাফল প্রকাশ না করা ও লিখিত পরীক্ষাসহ পাঁচটি ধাপে উত্তীর্ণ ৮৮ জন নিয়োগ না দেওয়ার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়। হাইকোর্ট রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। ফলে ৮৮ জনের এসআই (নিরস্ত্র) শূন্য পদে নিয়োগের পথ খুলল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিয়োগবঞ্চিত ৮৮ জনের পুলিশের এসআই পদে নিয়োগের পথ খুলল
  • শিশু ধর্ষণের চেষ্টাকারীকে পুলিশে সোপর্দ
  • ৩ দিন পর বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ
  • সমন্বয়ক পরিচয়ে পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনতাই
  • সমন্বয়ক পরিচয়ে পুলিশকে মেরে আসামি ছিনতাই
  • পল্লবী থানায় ঢুকে যুবকের হামলা, ওসিসহ আহত ৩ কর্মকর্তা