১০ বছরের মধ্যে মূল্যহীন হয়ে যেতে পারে বিটকয়েন, দাবি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের
Published: 9th, February 2025 GMT
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েন আগামী ১০ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ মূল্যহীন হয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ইউজিন এফ ফামা। তাঁর মতে, বিটকয়েনের কোনো ব্যবহারিক উপযোগিতা না থাকলে এটি শূন্যে মিলিয়ে যাবে।
গত বৃহস্পতিবার বিটকয়েনের দাম ৯ শতাংশ কমে যায়। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক প্রো–ক্রিপ্টো নীতির প্রভাব এখনো পুরোপুরি বাজারে প্রতিফলিত হয়নি। এতে ভবিষ্যতে বিটকয়েনের মূল্য আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউজিন এফ ফামা মনে করেন, আগামী এক দশকের মধ্যে বিটকয়েনের বাজারমূল্য শূন্যে নেমে আসতে পারে। ২০১৩ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ফামা সম্প্রতি ‘ক্যাপিটাল ইজ নট’ নামের একটি পডকাস্টে অর্থনীতিবিদ বেথানি ম্যাকলিন ও লুইগি জিঙ্গালেসের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ক্রিপ্টোকারেন্সি একধরনের ধাঁধার মতো। কারণ, এটি প্রচলিত অর্থনীতির মৌলিক নীতিগুলো ভঙ্গ করে। তাঁর মতে, একটি মুদ্রা দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকার জন্য তার মূল্য স্থিতিশীল হওয়া জরুরি। কিন্তু বিটকয়েনের দাম এতটাই অস্থির যে এটি কার্যকর বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, যে মুদ্রার মূল্য এভাবে ওঠানামা করে, সেটি কখনোই দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকতে পারে না।
আরও পড়ুনবিটকয়েন ওয়ালেট বন্ধ করবে এল সালভাদর০৫ জানুয়ারি ২০২৫বিটকয়েন নিয়ে বিতর্ক অনেক দিনের। এ বিষয়ে ফামা সতর্ক করে বলেন, বিটকয়েনের মতো অস্থির ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ যদি প্রচলিত আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে মিশে যায়, তবে তা অর্থনীতির জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি চাই, এটি ধ্বংস হোক। কারণ, তা না হলে আমাদের পুরো অর্থনৈতিক তত্ত্ব নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। হতে পারে, সেটি ইতিমধ্যেই ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের নতুন করে শুরু করতেই হবে।’
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বিটকয়েনের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত অবস্থানের ওপর। প্রথমবার প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ‘মূল্যহীন ও কল্পনানির্ভর’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি নিজস্ব মেমেকয়েন চালু করেন। যার বাজারমূল্য বর্তমানে ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বার্সেলোনা নয়, মেসি মায়ামিতেই থাকছেন
লিওনেল মেসির এখন খেলছেন ইন্টার মায়ামিতে। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তি চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর কোথায় যাবেন বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার? গুঞ্জন ছিল বার্সেলোনা বা নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজে যোগ দিতে পারেন এই ফরোয়ার্ড। তবে সেই জল্পনা-কল্পনাতে পানি ঢেলে দিয়ে ‘দ্য অ্যাথলেটিক’-এর দাবি, মেসির সাথে মায়ামির চুক্তি নবায়ন প্রক্রিয়া মোটামুটি চূড়ান্ত।
মেসি দারুণ খেলছে মায়ামিতে। ৩৭ বছর বয়সেও এই আর্জেন্টাইন তারকার বয়স যত বাড়ছে, ততই উজ্জ্বল হচ্ছে পারফরম্যান্স। বার্সেলোনার কিংবদন্তি এই বাঁ-পায়ের জাদুকর মায়ামির হয়ে ২০২৪-২৫ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৯ ম্যাচে ৮ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এমন ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’কে ছেড়ে দিবে না ক্লাবটি।
মেসির দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং মার্কেট ভেল্যুই ইন্টার মায়ামির ক্রীড়া বিভাগকে চুক্তি নবায়নের দিকে বাধ্য করেছে। ‘দ্য অ্যাথলেটিক’-এর সাংবাদিক ডেভিড অর্নস্টাইনের মতে, মেসির চুক্তি নবায়নের দ্বারপ্রান্তে ইন্টার মায়ামি। এই চুক্তি নবায়ন মায়ামির নতুন স্টেডিয়াম ‘মায়ামি ফ্রিডম পার্ক’-এর উদ্বোধনের সঙ্গেও মিল রেখে হতে পারে। যেখানে পরবর্তী মৌসুম থেকে ক্লাবটির ঘরোয়া ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ‘লাস গারসাস’-এর প্রধান আকর্ষণ হিসেবে মেসির উপস্থিতি এই সময়ে অপরিহার্য বলে ধরা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
মেসি ম্যাজিকে সেমিফাইনালে মায়ামি
গোল করেও মায়ামিকে জেতাতে পারলেন না মেসি
এছাড়াও মায়ামিতে মেসির জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখানে তিনি তার সাবেক বার্সেলোনা সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ, সার্জিও বুসকেটস এবং ইয়র্দো আলবার সঙ্গে খেলছেন। আর দলের কোচ হিসেবে আছেন তারই সাবেক সতীর্থ ও স্বদেশি, হাভিয়ের মাসচেরানো। এই ক্রীড়া প্রকল্পে মেসিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা (৪২), সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট প্রদানকারী (২১)। তাছাড়া তিনি ক্লাবের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রীড়া ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বও ৭ বারের ব্যালন ডি-ওর জয়ী।
মেসির এই ধারাবাহিকতা পেছনে কারণও আছে। মায়ামিতে খেলার সুবাদে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডায় অনিষ্ঠিতব্য ২০২৬ বিশ্বকাপ প্রস্তুতিটা দারুণভাবেই সারছেন ৩৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার। আর্জেন্টিনা ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করে ফেলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এটাই মেসির জাতীয় দলের হয়ে শেষ বড় টুর্নামেন্ট।
ইন্টার মায়ামির সভাপতি জর্জ মাসও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “তার (মেসির) ইচ্ছে হলো যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা এবং শিরোপা রক্ষা করা, যা আমাদের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” ২০২৪ সালের জুনে ‘ইএসপিএন আর্জেন্টিনা’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেসি নিজেও বলেছিলেন, “আমার মনে হয় ইন্টার মায়ামিই হবে আমার শেষ ক্লাব।”
ঢাকা/নাভিদ