বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন দল ফরচুন বরিশালের খেলোয়াড়েরা ট্রফি নিয়ে বরিশালে আসবেন এই ঘোষণায় বরিশালের বেলস পার্কে জড়ো হয়েছিলেন হাজারো জনতা। অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময় বেলা দুইটার আগেই সেখানে জনতার ঢল নামে। কিন্তু জোড়া ট্রফি নিয়ে খেলোয়াড়দের মঞ্চে আসতে আসতে বেজে যায় প্রায় বিকেল ৪টা। ততক্ষণে প্রচণ্ড ভিড়, ভ্যাপসা গরম আর ঠেলাঠেলিতে দর্শকদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। তামিম–মুশফিকরা মঞ্চে উঠতে উঠতে শুরু হয় চরম বিশৃঙ্খলা। ফলে দর্শকদের উদ্দেশে ট্রফি উঁচিয়ে ধরে দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন তাঁরা।

আজ রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ফলে এবারের বিপিএলজয়ী ফরচুন বরিশালের নির্ধারিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও কনসার্ট পণ্ড হয়ে যায়।

সরেজমিনে ও দলের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার বেলা ২টার দিকে বিশেষ বিমানে গতবারের এবং এবার চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পাওয়া দুটি শিরোপা নিয়ে বরিশাল বিমানবন্দরে পৌঁছান ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ খেলোয়াড়েরা। তাঁদের বরণ করতে আগে থেকেই বিমানবন্দরে অবস্থান নেন উচ্ছ্বসিত মানুষ। বিমান অবতরণ করার পর তামিমদের বহরকে বরণ করে নেন ফরচুন বরিশাল দলের কর্ণধার মো.

মিজানুর রহমানসহ অন্যরা। সেখানে বরিশালবাসীর উষ্ণ অভ্যর্থনায় সিক্ত হন দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়েরা।

এরপর ফরচুন বরিশালের বাসে নগরের বিসিক শিল্প এলাকায় ফরচুন কার্যালয় উদ্দেশে রওনা হন খেলোয়াড়েরা। মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রা সহকারে তাদের শহরে নিয়ে আসা হয়। বরিশাল বিমানবন্দর থেকে নগরের কাউনিয়া বিসিক শিল্প এলাকার ফরচুন শুজ কোম্পানির কার্যালয় পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে জড়ো হন হাজারো মানুষ। সড়কের দুই পাশে দাঁড়ানো নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে মুঠোফোনে ছবি তুলেছে, উচ্ছ্বাসে মেতেছে।

রেকর্ড গড়ে বিপিএলের ট্রফি আবারও লঞ্চে তুলল বরিশাল

এদিকে বেলা ২টা থেকেই বরিশাল নগরের ঐতিহাসিক বেলস পার্কে জড়ো হতে থাকেন হাজারো মানুষ। তাঁরা লাল জার্সি পরে, হাতে ফরচুন বরিশালের লোগোসংবলিত লাল পতাকা নিয়ে নেচে-গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বেলা ৩টার মধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় বিশাল আয়তনের বেলস পার্ক। সেখানে চলে দর্শকদের অপেক্ষার পালা। বাড়তে থাকে ভিড়। কড়া রোদ-ভ্যাপসা গরমের মধ্যে মানুষ লাল ফরচুনের লোগোসংবলিত জার্সি পরে, হাতে লাল পতাকা নিয়ে নেচে-গেয়ে আনন্দে মাতে।

এবারের বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালকে স্বাগত জানাতে হাজির হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। আজ রোববার বিকেলে বরিশাল নগরের ঐতিহাসিক বেলস পার্কে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব লস প র ক ব প এল নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যার প্রতিবাদ করে গাজাবাসীর জন্য রাইখানদের প্রার্থনা

গণহত্যার প্রতিবাদ করে জালিম ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে মজলুম গাজাবাসীর মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছে পটুয়াখালীর রাখাইন সম্প্রদায়।

গাজায় গণহত্যা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের শিকার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর জন্য কুয়াকাটায় মাহা সাংগ্রাই জলকেলি উৎসবে এক মিনিট নীরাবতা পালন করে রাখাইন সম্প্রদায়।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুক্রবার রাখাইন জলকেলি উৎসবের শুরুতে গাজায় গণহত্যার শিকার ফিলিস্তিনিদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: রাইজিংবিডি 

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব
বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে

অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি

শুক্রবার দুপুরে (১৮ এপ্রিল) কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার-সংলগ্ন রাখাইন মাঠে জলকেলি উৎসবের প্রারম্ভে সবাই দাঁড়িয়ে এই নীরবতা পালন করেন।

রাখাইনদের অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গাজাবাসীর জন্য বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয় বলেও জানিয়েছেন সম্প্রদায়টির ধর্মগুরুরা।

গণহত্যা অভিযানে গাজা ও ফিলিস্তিন নিশ্চিহ্ন করতে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাখাইনদের এসব উদ্যোগ মানবতার জন্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন সেখানকার মানুষ।

রাখাইন জলকেলি উৎসব দেখতে আসা কলাপাড়ার আলীপুর এলাকার বাসিন্দা মো. হোসেন মিয়া বলেন, “আজ জলকেলি দেখতে রাখাইন মাঠে এসেছি। এখানে এসে একেবারেই অবাক হয়েছি। তারা অনুষ্ঠানের শুরুতেই গাজাবাসীর জন্য নীরবতা পালন করেছে।”

“নিপীড়িত গাজাবাসীর জন্য তাদের সহমর্মিতা আমাকে আপ্লুত করেছে,” বলেন হোসেন মিয়া।

মহিপুর থেকে আসা মো. আবদুস সালাম বলেন, “এমনিতেই রাখাইনদের সঙ্গে আমাদের একটি সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। আজ তারা গাজাবাসীর জন্য প্রার্থনা করেছে। তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আরো বেড়ে গেল।”

মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধবিহারের উপাধ্যক্ষ উত্তম মহাথের বলেন, “আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে গাজাবাসীর জন্য প্রায়ই বিশেষ প্রার্থনা করি। শুধু গাজাবাসীই নয়, পৃথিবীর সকল দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ যুদ্ধ বন্ধ হোক- এটাই আমাদের প্রার্থনা।”

“ আমরা মানুষ হিসেবে সবাইকে সবার প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের অনুরোধ জানাচ্ছি,” বলেন উত্তম মহাথের।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, “গাজাবাসীর প্রতি রাখাইন সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে মানবতার সঙ্গে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্প্রীতি তারা দেখিয়েছেন, এ জন্য তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

“রাখাইন সম্প্রদায় ভিন্ন ধর্মালম্বী হলেও মানবতার ধর্ম সবার এক। তাই রাখাইন সম্প্রদায় এই নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে তাদের সম্প্রীতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করল।”

শুক্রবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী রাখাইন জলকেলি উৎসব, যাতে শামিল হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিদেশিরাও।

উৎসব শুরুর দিন ঐতিহ্যবাহী জলকেলিতে মেতে উঠতে দেখা যায় রাখাইনদের। তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের আনন্দ করতে দেখা যায়। উৎসবে সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

ঢাকা/ইমরান/রাসেল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ