জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে যে চার বছরের সম্মান বা অনার্স কোর্স রয়েছে এর মেয়াদ কমিয়ে তিন বছর করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। 

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা জানান শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এম আমিনুল ইসলাম। তিনি এ ব্যবস্থাকে একটি অভিনব অসাধারণ সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চার বছরের অনার্স কোর্সকে তিন বছরের কোর্স করা হবে। বাকি এক বছরে ডিপ্লোমা ও কারিগরি শিক্ষার ওপর ব্যাপকভাবে শিক্ষা দেওয়া হবে। তারপর তাদের দুটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।”

অধ্যাপক আমিনুল বলেন, “একটা অনার্সের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে, আরেকটা ডিপ্লোমার সার্টিফিকেট দেওয়া হবে; যে সার্টিফিকেটটা ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে সবার কাছে।”

তিনি মন্তব্য করেন, এতে শিক্ষার্থীর অনার্স পড়ার যে স্বপ্ন তা বাস্তবায়ন হবে, আবার তারা অনেক ভালো চাকরিও পাবে। নতুন ব্যবস্থায় কর্মসংস্থানে বেগ পেতে হবে না বলে মনে করেন বিশেষ সহকারী। 

ডিপ্লোমা বা কারিগরি ডিগ্রি নিয়ে অনেকেরই যে নাক সিটকানো মনোভাব রয়েছে, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরতে গিয়ে বিশেষ সহকারী আমিনুল বলেন, “এটা একটা ট্যাবু, স্টিগমা রয়েছে গোটা দেশের ভেতর-ডিপ্লোমা যদি পড়ে, কারিগরি যদি পড়ে, তাহলে এটা খুব খারাপ একটা বিষয় হবে। লোকের কাছে মুখ দেখাতে পারবে না।”

কারিগরি শিক্ষার আমূল পরিবর্তন আনা হবে জানিয়ে অধ্যাপক আমিনুল বলেন, “যেটার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল দেশের জন্য, সেটা সবচেয়ে অনুন্নত অবস্থায় আছে। তাদের যে শিক্ষক দরকার, তার ১৮% রয়েছে। তাদের প্র্যাক্টিকাল ও থিওরি আছে।”

এই অধ্যাপক বলেন, “প্র্যাক্টিকালের জন্য ল্যাবরেটরি নাই, ট্রেইনার নাই, টিচার নাই। তাই থিওরি পড়িয়ে দেওয়া হয়, পরে ভাইভা নেওয়া হয়। প্র্যাক্টিকাল করানোই হয় না, কিন্তু তার ভিত্তিতেই সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া হয়। এটার আমূল পরিবর্তন করা হবে।”

বিশেষ সহকারী বলেন, “এদের শিক্ষা যেন যথাযথ হয়, ল্যাবরেটরি যেন যথাযথ থাকে, ট্রেইনার যেন যথাযথ থাকে এবং এদের কাজ চলাকালীন সময়ে তাদের জন্য যেন বাইরে ভালো চাকরির ব্যবস্থা করা হয়, এ জন্য তাদের ট্রেইন করা হবে।”

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা.

বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক সাইদুর রহমান, কারিগরি ও মাদ্রাসার শিক্ষা বিভাগের সচিব কবিরুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ষ সহক র আম ন ল

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরার শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন, এক দিনে চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’

মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার আট বছর বয়সী শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন। বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে। শিশুটির সুস্থতার জন্য সেনাবাহিনী দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটির চিকিৎসা চলছে। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

সেনাবাহিনীর ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, শিশুটি আজ (বুধবার) চারবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছে। সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) দিয়ে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করা হয়েছে। তার রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি শিশুটির রক্তচাপ ৬০/৪০ মিমি পারদ কিংবা তার চেয়ে নিম্নমুখী।

সিএমএইচের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের চিকিৎসা পর্ষদ সর্বাধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতির মাধ্যমে শিশুটির জীবন রক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের এই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন শিশুটির মা। শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। শিশুর বোনের শ্বশুরকে সাত দিন, স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুর প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন মাগুরার আদালত।

গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিআইসিইউ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ