বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল হাসনাত খানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মতিউর রহমান এই আদেশ দেন।

এর আগে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রংপুর থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এদিন পুলিশের আরো তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বাগেরহাটের ফকিরহাট থানায় দায়ের করা একটি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে আবুল হাসনাত খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে।

মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম মিঠু অভিযোগ করেছেন, আবুল হাসনাত খান বিভিন্ন সময় উসকানিমূলক বক্তব্য ও নির্দেশনা দিয়ে সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনের পাঁয়তারা করেছেন।

বাগেরহাট জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌশলী (পিপি) মাহবুব মোরশেদ লালন বলেন, “সাবেক তিন সংসদ সদস্য, সাবেক পুলিশ সুপারসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ আবুল হাসনাত খানকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”

তিনি আরো বলেন, “আবুল হাসনাত খান পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নানা অন্যায় করেছেন, যা তার বিভিন্ন বক্তব্যে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।”

এই মামলায় বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানসহ আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া বাগেরহাট-২ আসনের আরেক সাবেক সংসদ সদস্য মীর শওকত আলী বাদশা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ কামরুজ্জামান টুকু, সাধারণ সম্পাদক ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা সরদার নাসির উদ্দিন, শেখ হেলাল উদ্দিনের একান্ত সচিব ফিরোজুল ইসলাম জোমাদ্দারও মামলার আসামি হয়েছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট দুপুরে ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি গোলচত্বর এলাকায় আসামিরা জড়ো হয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালান। তারা ছাত্র জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন, আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটান এবং হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিকবার গুলি চালান।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খান ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘একটি ব্যালট, একটি বুলেট’ এবং ‘যেখানে উন্নয়ন, সেখানেই ধ্বংস’ এমন মন্তব্য করে সমালোচিত হন তিনি। তার এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

২০২৪ সালের ২৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি বাগেরহাটের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা/শহিদুল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, তারা অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন তারা’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, অতি দ্রুত নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করবে সরকার। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। জনগণও প্রত্যাশা করছে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে সার্বিক বিষয়ে দলের উদ্বেগের বিষয়গুলো প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরা হবে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে এটা বিএনপির দায়িত্ব। বিএনপি সেই দায়িত্ব পালন করেছে।’

দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর দায় সরকার এড়াতে পারে না বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার দায় সরকার এড়াতে পারে না। কারণ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন বাহিনীর সামনেই একের পর এক ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট বিপন্ন হয়েছে। ফ্যাসিবাদীরা এসব বিষয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছে।

‘আমরা যেটা বারবার বলে এসেছি, এ সরকার অন্তর্বর্তী কালীন সরকার। সুতরাং দ্রুত নির্বাচনের জন্য আমরা তাদের আবারও তাগাদা দিয়েছি’ উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি জানান, তারা ন্যূনতম সংস্কারের ক্ষেত্রে আলোচনার পর দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে বলেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা দ্রব্যমূল্যের ব্যাপারে কথা বলেছি। এ সরকারের অন্যতম বড় ব্যর্থতা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। তারা কাজ করছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’ তিনি বলেন, বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি এসেছে। বিএনপি বলেছে, বিশেষ অভিযান ‘ডেভিল হান্টে’ যেন কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে কোনোভাবেই একমত হব না। আগে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। এর আগে কোনো নির্বাচন হবে না। এটা আগেও পরিষ্কার করে বলেছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও সালাহউদ্দিন আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ