রাজশাহী কলেজে ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ
Published: 9th, February 2025 GMT
রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মীকে আটকের পর মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে তাঁকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেন একদল শিক্ষার্থী। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে বোয়ালিয়া মডেল থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ছাত্রলীগের ওই কর্মীর নাম আতিকুর রহমান। তিনি রাজশাহী কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায়। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের আগে কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের বি-ব্লকে থাকতেন তিনি।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে আতিকুর রহমান মুসলিম ছাত্রাবাসের সামনে একটি চায়ের দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁকে চিনতে পেরে ধরে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাঁকে ছাত্রাবাসের সামনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। পরে পুলিশে সোপর্দ করা হয় তাঁকে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আতিকুর মুসলিম ছাত্রাবাসের বি-ব্লকের বাসিন্দা ছিলেন। তখন তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর নানা সময়ে নির্যাতন ও হয়রানি করেছিলেন। তাঁর মুঠোফোন ঘেঁটে দেখা গেছে, তিনি এখনো নিয়মিত ছাত্রলীগের বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেন এবং সংগঠনটির বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছেন।
ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের শেষে আতিকুর রহমানকে রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের সামনে একটি গাছে বেঁধে রাখেন একদল শিক্ষার্থী। পরে পুলিশ এসে তাঁকে নিয়ে যায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
গাজীপুর সদর উপজেলার রাজবাড়ি মাঠে আজ শনিবার বেলা দেড়টার দিকে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন।
আজ ভোর চারটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাঁদের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ওই পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলেছে, ‘গাজীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসী মোজাম্মেল-জাহাঙ্গীরের চাপাতিবাহিনীর হামলার প্রতিবাদে আজ শনিবার বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন সারা দেশের আপামর ছাত্রজনতা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা।’
গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন একদল বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় স্থানীয় কিছু ব্যক্তি তাঁদের কয়েকজনকে আটক করে মারধর করেন। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানিয়েছে, একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দক্ষিণখানে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা চালান। তাঁরা বাড়ির ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করেন। এ সময় মসজিদের মাইকে মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। মাইকিং শুনে আশপাশের লোকজন বাড়িটি ঘিরে ফেলেন। তাঁরা ভাঙচুরকারী কয়েকজনকে মারধর করেন।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঠান। সেখান থেকে গুরুতর আহত কয়েকজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এই হামলার প্রতিবাদে গতকাল দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের নেতা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমাদের কাছে খবর আসে ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে আমাদের শিক্ষার্থীরা রওনা হন। দ্রুত ১৫-১৬ জন ঘটনাস্থলে চলে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লুটপাট হচ্ছে। এতে বাধা দিলে পেছন থেকে হুট করে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়। তাদের হাতে রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই ১৫ জনকে ছাদে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদেরও পেটানো হয়।’ আজ ‘মার্চ টু গাজীপুর’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজীপুরে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা, মাইকে ঘোষণা দিয়ে মারধরে আহত ১৫৭ ঘণ্টা আগে