পদোন্নতি পেলেন ১১৯ সচিবসহ প্রশাসনের ৭৬৪ জন সাবেক কর্মকর্তা
Published: 9th, February 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় ১৬ বছরে জনপ্রশাসন থেকে অবসরে যাওয়া সাবেক ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত এই পদোন্নতি দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ১১৯ জন সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
আজ রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে। সচিব ছাড়াও গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড) পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন ও উপসচিব পদে চারজনকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়। সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সুপারিশের আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পদোন্নতি বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বঞ্চনা নিরসনে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের আমলে ২০০৯ সাল থেকে গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সরকারি চাকরিতে নানাভাবে বঞ্চনার শিকার এবং এ সময়ের মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির প্রধান ছিলেন সাবেক অর্থসচিব এবং বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খান। কমিটি ১০ ডিসেম্বর তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়।
কমিটির কাছে মোট ১ হাজার ৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে মারা যাওয়া কর্মকর্তাদের পক্ষে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের করা ১৯টি আবেদন ছিল। যাচাই-বাছাই করে কমিটি ৭৬৪ জনের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করে।
ওই ৭৬৪ কর্মকর্তার মধ্যে কমিটি ৯ জনকে চার ধাপ, ৩৪ জনকে তিন ধাপ, ১২৬ জনকে দুই ধাপ ও ৫৯৫ জনকে এক ধাপ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। সেই সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন দেওয়ার পর এখন প্রজ্ঞাপন জারি করল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা পদোন্নতির তারিখ থেকে প্রাপ্যতা অনুযায়ী সব আর্থিক সুবিধা পাবেন। তাঁরা তাঁদের বকেয়া বর্তমান অর্থবছরে ৫০ শতাংশ এবং বাকি ৫০ শতাংশ পরবর্তী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) পাবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল ইসলাম
সদ্য সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলামকে পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত করেছে সরকার। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশ বাহিনীর ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে তাঁকে আইজিপির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগের দিন গতকাল বুধবার সরকারি চাকরি থেকে তিনি স্বাভাবিক অবসরোত্তর ছুটিতে (এলপিআর) যান। এখন তাঁর অবসরোত্তর ছুটি স্থগিত করে পরবর্তী দুই বছরের জন্য তাঁকে রাষ্ট্রদূত করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অবসরোত্তর ছুটি ও সংশ্লিষ্ট সুবিধা স্থগিত করে, অন্য সব পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক ত্যাগ করার শর্তে ১০ এপ্রিল থেকে দুই বছরের জন্য ময়নুল ইসলামকে পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট দ্বাদশ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা ময়নুল ইসলামকে আইজিপির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ভেঙে পড়া পুলিশি ব্যবস্থার মধ্যে সাড়ে তিন মাস আইজিপির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আইজিপি হওয়ার আগে এই কর্মকর্তা ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট ছিলেন।
এরপর ২০ নভেম্বর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা বাহারুল আলমকে ময়নুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত করে আইজিপি হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য ময়নুল ইসলামের চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। তবে সে সময় তাঁকে কোনো দূতাবাসে পাঠানো হয়নি। সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী ৯ এপ্রিল তিনি অবসরে যান।