গানে গানে ঋত্বিক ঘটক ও কাওসার আহমেদকে স্মরণ
Published: 9th, February 2025 GMT
উপমহাদেশের অন্যতম চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের স্মরণে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রয়াত গীতিকবি কাওসার আহমেদ চৌধুরীর লেখা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন নাফিস কামাল। ঋত্বিক ঘটকের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে শিল্পী নাফিস কামাল এ ঘোষণা দেন। ২২ ফেব্রুয়ারি গীতিকবি কাওসার আহমেদ চৌধুরীর প্রয়াণ দিবসে মুক্তি পাবে এ গানের ভিডিও। সেদিন গানটি নাফিসের ইউটিউব চ্যানেল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। নাফিস কামাল জানান, ঋত্বিক ঘটক ও কবি কাওসার আহমেদ চৌধুরীর সম্পর্কের গভীর ভাব, আবেগ আর শূন্যতার বেদনা নিয়ে রচিত হয়েছে ‘স্মরণে ঋত্বিক’।
গানটির প্রযোজক সংস্থা কুল এক্সপোজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল হক টিংকু বলেন, “কবি নিজে তাঁর এই অনবদ্য গানটি নাফিস কামালের হাতে তুলে দিয়েছেন সংগীতায়নের জন্য। যদিও এর সুরারোপ তিনি শুনে যেতে পারেননি। আর ঋত্বিক ঘটককে আমরা হারিয়েছি সেই ১৯৭৬ সালে। তবে দু’জনের হৃদয়ে ছিল এক গভীর বাংলাদেশ, এক অখণ্ড বাঙালি চেতনা। এই গানের চিত্রায়নে তাঁর প্রতিফলন ঘটেছে।” গানটিতে সুরারোপ করেছেন সৈয়দ কল্লোল। তিনি বলেন, ‘গানটির মধ্যে শিল্প, সাহিত্য, সংগীত ও চলচ্চিত্র চর্চার বর্ণনার মাধ্যমে উঠে এসেছে বাংলার মানুষের জীবন সংগ্রাম, দুর্দশা ও আত্মপরিচয়ের সন্ধান। স্টুডিও আবোল তাবোল টিম গানটি অ্যানিমেটেড ফর্মে চিত্রায়ণ করছে।’
এদিকে, সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে কাওসার আহমেদ চৌধুরীর একমাত্র সন্তান প্রতীক তাঁর বাবার অপ্রকাশিত গানটি রিলিজ হচ্ছে জেনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন গানের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের প্রতি। তিনি তাঁর বাবার গানটির মূল স্ক্রিপ্ট থেকে শুরু করে সেই সময়কার কিছু ফটোগ্রাফ ও দুর্লভ তথ্য প্রদান করে সহায়তা করেছেন। গানটির ভিডিও স্ক্রিপ্ট ও পরিচালনা করেছেন সাগর সেন ও শেহাজ সিন্ধু।
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে ‘এই দেশে এক শহর ছিল’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়ে বেশ আলোচনায় এসেছিলেন কণ্ঠশিল্পী নাফিস কামাল। কাওসার আহমেদ চৌধুরীর লেখা ও নকীব খানের সুরে এই গানটি প্রচার হয়েছিল ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে। এরপর ‘ঋণী সমুদ্র’সহ আরও অনেক গানে তাঁকে পাওয়া গেছে। বেশ বিরতির পর ‘স্মরণে ঋত্বিক’ গানটি করেছেন তিনি।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করার পর ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ পাস করে ব্রিটিশ সফটওয়্যার ফার্মে কিছুদিন চাকরি করেন নাফিস কমাল। তারপর গার্মেন্টস ব্যবসায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ গায়ক। দীর্ঘদিন নিজের ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে ব্যস্ত থাকায় গানের ক্যারিয়ার থেকে একটু দূরে থাকলেও গান সবসময়ই তাঁর হৃদয়ের খুব কাছে ছিল। মানুষ এখনও তাঁর গান পছন্দ করে। শ্রোতাদের ভালোবাসা থেকেই দীর্ঘদিন পর আবার গান শুরু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকলেও গানকে সবসময়ই মিস করতাম। আমি কোনো কাজ করলে, সেটা গুরুত্ব সহকারে করার চেষ্টা করি। গানটাও সবসময় ভালোভাবে করতে চেয়েছি। শ্রোতাদের ভালোবাসা থেকেই দীর্ঘদিন পর আবার নতুন গান করেছি। সামনে বেশকিছু নতুন গান নিয়ে হাজির হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। আশা করি, শ্রোতা-দর্শকের আমার নতুন গানটি ভালো লাগবে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রমেক হাসপাতালের সেই চিকিৎসক মাহবুবুরের বদলি চান সহকর্মীরা
অপচিকিৎসায় দুই রোগীর মৃত্যুসহ রিং বাণিজ্য ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ ওঠা রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মাহবুবুর রহমানকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার আবেদন করেছেন সহকর্মীরা।
গত মঙ্গলবার তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যত্র পদায়ন বা বদলির আবেদন জানিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছেন। এতে সই করেছেন কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হরিপদ সরকার, ডা. রবীন্দ্রনাথ বর্মণ, সহকারী অধ্যাপক ডা. আবু জাহিদ, ডা. হাসানুল ইসলাম, জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আশেকুর রহমান, সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল আলীম সরকারসহ ১১ চিকিৎসক।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ডা. মাহবুবুর কর্তৃক হার্টের রক্তনালিতে রিং পরানোয় অনিয়ম নিয়ে ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ করেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং রমেক হাসপাতাল কর্তৃক গঠিত পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি তদন্তও করেছে। কিন্তু ডা. মাহবুবুর অভিযোগকারীদের ভয়ভীতি ও অর্থনৈতিক প্রলোভন দেখিয়ে উত্থাপিত অভিযোগগুলো প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। এ অবস্থায় তিনি রমেকে থাকলে তাঁর অনিয়মের পুনরাবৃত্তি এবং রোগীদের প্রতিবাদের আশঙ্কাসহ সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে।
প্রয়োজন না হলেও রোগীকে ‘আতঙ্কিত’ করে রিং স্থাপনে উৎসাহিত করা, হার্টের রক্তনালিতে একটি রিং (স্টেন্ট) স্থাপন করে তিনটির টাকা নেওয়া, রিং না বসিয়ে সার্জারি করেই রিংয়ের টাকা আদায় করাসহ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ আছে ডা. মাহবুবুরের বিরুদ্ধে। এসবের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হতেই তিনি বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির মাধ্যমে অভিযোগ তুলে নিতে ‘চাপ ও হুমকি’ দিচ্ছেন বলে ২২ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন আতোয়ার রহমান নামে এক ভুক্তভোগী।
অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. মাহবুবুর বলেন, প্রত্যেক রোগীর হার্টে রিং স্থাপনের পর তাঁকে রিপোর্ট কপি এবং সিডি দেওয়া হয়। সেখানে বিস্তারিত তথ্য থাকে। এর পরও যদি কেউ অভিযোগ করেন, তাহলে এটা দুঃখজনক।
ডা. মাহবুবুরকে সরাতে কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণলায় সিদ্ধান্ত নেবে।