সাবেক এমপি নদভী দুই দিনের রিমান্ডে
Published: 9th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) এএএম হুমায়ুন কবীর বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নগরের পাঁচলাইশ থানার দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই নগরীর পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর এলাকায় ফয়সাল আহমেদ শান্ত নামে এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। ওই ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। ওই মামলায় এজাহারে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী আসামি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নদভীর বিরুদ্ধে জেলার সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও নগরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা হয়। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ঢাকায় গত ১৫ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন তিনি।
২০১৪ ও ২০১৮ সালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন নদভী। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে তিনি হেরে যান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন নদভ
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ দুজনের চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই বিকেল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলছিল। প্রতিদিনের মতো জুরাইনে ইট ভাঙার কাজ শেষ করে যাত্রবাড়ীর বাসায় ফিরছিলেন দুই সন্তানের মা পারভীন। সেখানে আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ এক শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে পারভীনের বাঁ চোখে গুলি লেগেছিল।
বরিশালের হাতেম আলী কলেজে আন্দোলন করতে গিয়ে ৪ আগস্ট ডান চোখসহ শরীরের তিন জায়গায় গুলি লেগেছিল শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলামের। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা চলছিল তাঁরও।
কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পারভীন ও তরিকুল দুজনেই এক চোখ প্রায় হারাতেই বসেছিলেন। তবে গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর গ্রিন রোডের ভিশন আই হাসপাতালে সফলভাবে দুজনের চোখের কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে পারভীন ও তরিকুলের চোখের ব্যান্ডেজ খোলেন চিকিৎসকেরা। এই প্রতিবেদক তখন সেখানেই ছিলেন। পারভীন ও তরিকুল ক্ষতিগ্রস্ত চোখ দিয়ে এখন কিছুটা দেখতে পাচ্ছেন। চিকিৎসা শেষে ও বিশ্রামের পর তাঁদের দৃষ্টি অনেকটাই ফিরে আসতে পারে বলে আশা করছেন চিকিৎসকেরা।
আজ বিকেলে চোখের ব্যান্ডেজ খোলার পর পারভীন তাঁর চোখে গুলি লাগার ঘটনাটি সবিস্তার বললেন। লক্ষ্মীপুরের মেয়ে পারভীনের বয়স ৩০ বছর। তাঁর দুই ছেলে ৯ বছর বয়সী ইব্রাহিম ও ৪ বছরের ইয়াসিন। স্বামী–সন্তান নিয়ে যাত্রবাড়ী এলাকায় থাকেন তিনি।
পারভীন বললেন, ১৮ জুলাই জুরাইনে কাজ শেষ করে বিকেলে বাসায় ফিরছিলেন। জুরাইনের ব্রিজের নিচে এসে দেখেন, রাস্তায় কোনো গাড়ি নেই, মানুষ দৌড়াদৌড়ি করছে। পরে দয়াগঞ্জ পর্যন্ত হাঁটেন। সেখানেও প্রতিবন্ধকতা দেখে যাত্রাবাড়ীর দিকে মোড় নেন। যাত্রবাড়ী গিয়ে দেখেন, কেউ মারা গেছেন, কারও হাত নেই, কারও পা নেই। রাস্তায় রক্ত আর রক্ত। এ সময় রাস্তার ওপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকা এক ছাত্রকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশ সমানে গুলি করতে থাকে। এতে ওই ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়। একটি গুলি লাগে তাঁর নিজের চোখে। ছাত্রটি তাঁর কোলেই মারা যায় বলে তিনি জানান।
ওই ঘটনার কথা মনে হলে এখনো ঘুমাতে পারেন না পারভীন। আক্ষেপ করে বললেন, ‘ঢাকা শহর আইছিলাম অনেক স্বপ্ন লইয়া। আইয়া তো চোখই হারাইয়া ফালাইলাম। ভিশন আই হাসপাতাল থেকা কয়েকজনে মিল্লা আমারে একটা চোখ দান করছে। আল্লাহ যেন তাদের ভালো করে।’
চোখের ব্যান্ডেজ খোলার পর তরিকুলের চোখ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে