ফ্লোরিডায় নারীদের মধ্যমণি জায়েদ, নিজে নাচলেন নারীদেরও নাচালেন
Published: 9th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হলো ‘একতারা বসন্ত উৎসব’। সেই উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিলেন জায়েদ খান। নব্বই দশকের জনপ্রিয় সব চলচ্চিত্রের গানে এই নায়ক সেখানে পারফর্ম করেছেন। ফ্লোরিডা থেকে জায়েদ জানান, শুধু তিনি একা নন, তার সঙ্গে বাংলা গানে নেচেছেন আমেরিকান একঝাঁক নারী। তিনি বলেন, আমাদের জনপ্রিয় সব নায়ক নায়িকাদের ছবি দিয়ে বিলবোর্ড সাজানো হয়েছে।
একতারা বসন্ত উৎসবের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে আলিফ আলাউদ্দিন, পারভেজ, ঋতুপর্ণা ব্যানার্জী, ডিজে রাহাতও পারফর্ম করেছেন।
জায়েদ বলেন, আমি প্রথম বাংলাদেশি নায়ক যিনি ফ্লোরিডা-তে পারফর্ম করেছি। এখানে স্টেজে আমেরিকান মেয়েরা আমার সঙ্গে পারফর্ম করছে। আমি বলেছি, আমেরিকান মেয়েদের বাংলা গানে নাচতে হবে। আয়োজকরা খুবই আন্তরিকভাবে এতে সম্মতি দিয়েছেন।
একতারা বসন্ত উৎসবের সিইও ইমরান জনি বলেন, পুরো আমেরিকায় স্নো-ফল হলেও ওয়েদারের কারণে শুধুমাত্র ফ্লোরিডাতে বসন্ত বিরাজ করছে। এজন্য এখানে প্রতিবার বসন্ত উৎসব করে থাকি। এবার আমাদের আকর্ষণ জায়েদ খান। তার কারণে পাবলিক রেসপন্স অনেক বেশি।
স্থানীয় সময় ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ‘একতারা বসন্ত উৎসব’ উদযাপিত হয়েছে বলে জানান আয়োজক কমিটি।
গেল জুনে নিউইয়র্কে যান জায়েদ খান। তারপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার বিভিন্ন রাজ্যে স্টেজ শো-তে অংশ নিচ্ছেন তিনি। সেই সঙ্গে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র ‘ঠিকানা’য় যোগ দিয়েছেন। সেখানে প্রথমবারের মতো উপস্থাপক হিসেবে দেখা যাবে তাকে।
জায়েদ জানান, ঠিকানার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিনোদনমূলক একটি টকশো উপস্থাপনা করবেন, যেখানে শোবিজ ও চলচ্চিত্রের তারকারা উপস্থিত থাকবেন। শিগগিরই এটি প্রচারে আসার কথা রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বসন ত উৎসব আম র ক একত র
এছাড়াও পড়ুন:
ফুল ভাসিয়ে শুরু হলো বিজু উৎসব, সুন্দর পৃথিবীর প্রার্থনা
পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে আর নতুন বছরকে বরণ করে নিতে চাকমা সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী বিজু উৎসব আজ শনিবার শুরু হয়েছে; পাশাপাশি শুরু হয়েছে তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু উৎসব। উৎসবের প্রথম দিনে নদী, ছড়া, ঝরনাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুল ভাসিয়ে সুন্দর পৃথিবীর জন্য মঙ্গল কামনা করেছেন নারী, পুরুষ আর শিশুরা। পাহাড়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা আগামী কয়েক দিন নানা নামে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায়ের উৎসব উদ্যাপন করবেন।
খাগড়াছড়িআজ ভোর থেকে জেলার নদী, ছড়া, ঝরনাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে ‘ফুল বিজু’ শুরু হয়। ফুল ভাসিয়ে সুন্দর পৃথিবীর জন্য প্রার্থনা করেন চাকমা নারী-পুরুষ ও শিশুরা। নারীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন-হাদি ও পুরুষেরা ধুতি পরে উৎসবে যোগ দেন।
ভোরে পানছড়ি উপজেলার রাবার ড্যাম এলাকায় চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসাতে ভিড় করেন স্থানীয় চাকমা জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা। তাঁদেরই একজন প্রবীণ মালতী দেবী চাকমা। চার কিলোমিটার দূরে রাঙাপানিছড়া এলাকা থেকে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘একসময় সন্তানদের নিয়ে ফুল ভাসাতে আসতাম। এখন বয়স বাড়ায় কষ্ট হলেও নাতি-নাতনিদের সঙ্গে এসেছি মনের শান্তির জন্য। এবার প্রাণভরে প্রার্থনা করলাম, সবাই মিলেমিশে যেন ভালো থাকতে পারি, পৃথিবী যেন শান্তি থাকে।’
ফুল ভাসাতে আসা এক তরুণী মেমোরি চাকমা বলেন, ‘আমরা বন্ধুরা মিলে চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসিয়ে আগামী দিনের সুখশান্তি কামনা করেছি। এখানে শত শত নারী-পুরুষ উৎসবে যোগ দিয়েছেন। আমি ও সারা বছর অপেক্ষায় থাকি এ দিনটার জন্য।’
উৎসব দেখতে রাবার ড্যাম এলাকাটিতে ভিড় জমান সমতলের লোকজনও। রাজশাহী থেকে এ উৎসব দেখতে আসা মকবুল হোসেন ও সালমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৭ সালে একবার রাঙামাটিতে ফুল ভাসানো উৎসব দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। এবার এসে আবারও মুগ্ধ হলাম।’
সরেজমিনে উল্টাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান সুব্রত চাকমার সঙ্গেও কথা হয়। তিনি বলেন, বিজু আদিকাল থেকেই চলে আসছে। বিজু মানে আনন্দ, হইহুল্লোড়, বিজু মানে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো। বিজু মানে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি করা।
বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন চাকমারা বিজু পালন করেন। আজ ফুল বিজু, ১৩ এপ্রিল রোববার মূল বিজু, ১৪ এপ্রিল নু’অ বজর বা নতুন বছর, আর পয়লা বৈশাখের পর দিন পালিত হয় ‘গোজ্যেপোজ্যে দিন’ হিসেবে। উৎসবের প্রথম দিনে পূজা-অর্চনা ও বাড়িঘর পরিষ্কার করে সাজানো হয়। দ্বিতীয় দিনে অতিথি আপ্যায়ন ও খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়। তৃতীয় দিনে হাঁস-মুরগি ও পশুপাখিদের খাবার দেওয়া, গরাইয়া নৃত্য ও বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেওয়া হয়।
কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে ফুল বিজুকে বরণ করছে এক শিশু। আজ সকালে রাঙামাটি শহরের কেরানি পার্কের দক্ষিণ এলাকায়