কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মুন্সি আব্দুল মজিদের আদালত এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কক্সবাজার জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বাদী একেএম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী এলাকার বাসিন্দা।

আরো পড়ুন:

কারাগারে পিন্টুর মৃত্যু
রাজশাহীতে শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

লিফলেট বিতরণে বাধা দেওয়ায় আ.

লীগের হামলা, গ্রেপ্তার ২

আইনজীবী সিরাজ উল্লাহ মামলার নথির বরাতে জানান, ২০১৪ সালে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের সময় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সংঘবদ্ধভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ২৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় এ কে এম কায়সারুল হক ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মোহাম্মদ রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেন।

দুদক তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির ঘটনায় নতুন করে ২৩ জনকে অভিযুক্ত করে মোট ২৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। পরবর্তীতে, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনসহ সব আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আজ মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ রুহুল আমিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার বাদী একেএম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী জানান, মামলাটি দায়েরের পর থেকেই প্রধান আসামিসহ অন্যান্য অভিযুক্তরা নানা জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। এমনকি তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজকে প্রভাবিত করে এজাহারে পুনঃলিখনের মাধ্যমে আসামির নাম পরিবর্তনসহ বিভিন্ন অনৈতিক উপায়ে মামলা প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া, তাকে হয়রানি করতে একাধিক মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি জানান, আদালত রুহুল আমিনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট। একইসঙ্গে ন্যায়বিচার পাবেন বলেও বাদী আশাবাদী।

ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে’

ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. তানভীর আহমেদ আশা প্রকাশ করেছেন, সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির (সিআরইউ) কার্যালয়ে সংগঠনের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বিদায়ী কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন।

জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, “সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। সাংবাদিকদের নিউজগুলো আমি সুশাসন ও নানা অভিযানে কাজে লাগিয়েছি। তাদের তথ্যের মাধ্যমে অনেক অ্যাকশান নিয়েছি। এজন্য রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে মিডিয়া উইং থাকে। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের কাজে সহযোগিতা করেন।”

আরো পড়ুন:

টেন্ডার জমা ‌নি‌য়ে ২ পক্ষের হাতাহাতি, ‌মারধরে সাংবাদিক আহত

আরএফইডির সভাপতি জেবেল, সম্পাদক রাব্বানী

জেলা প্রশাসক তার কিছু পরিকল্পনার কথাও জানান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার কিছু পরিকল্পনা আছে, এর মধ্যে রয়েছে দ্রব্যমূল্য হ্রাস, ঢাকার বিভিন্ন খাস জমিতে জনতার বাজার হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাজার কন্ট্রোল করা। চাইলেই কোনো সিন্ডিকেট যেন পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে। আমরা ঢাকার ২১টা খাল উদ্ধারের জন্য পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বাউনিয়া খালের মাধ্যমে আমরা এ কার্যক্রম শুরু করেছি। সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে এ প্রত্যাশা করছি।”

এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নতুন ভবন করে জায়গা মেনেজমেন্ট করার পরিকল্পনা আছেও বলে জানান তানভীর আহমেদ। তিনি বলেন, “তখন বিশৃঙ্খলভাবে ছড়িয়ে থাকা ভেন্ডার (দলিল লেখক) ও কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির জন্য আলাদা বড় পরিসরে অফিস করার পরিকল্পনা আমরা নিব।”

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকেই আদালত পাড়ায় সাংবাদিকদের উপস্থিতি বেড়েছে। সে সময় দেখেছি বসার জায়গা না থাকায় সাংবাদিকরা সারাদিন গাছতলায় অতিবাহিত করলেও নিরপেক্ষতার জন্য কখনো আইনজীবীদের থেকে সুবিধা নিতেন না। তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোর্টে কি হচ্ছে তা জাতির কাছে তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের মাধ্যমে রাষ্ট্রে বার্তা যায়। ছাত্র আন্দোলনেও সাংবাদিকদের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদালতে ফ্যাসিস্ট আসামিদের আদালতে আনা হলে সাংবাদিকরা তাদের অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরছেন। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তাদের রুমের স্পেস বড় করাসহ অফিসের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি জেলা প্রশাসক দেখবেন বলে প্রত্যাশা রাখছি।”

ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, “আদালত পাড়ার নিউজ আপনারা (সাংবাদিক) কাভার করেন। যার যে দলই থাক, সবাই সত্য প্রকাশ করবেন। ঢাকা আইনজীবীদের সঙ্গে আপনাদের সাংবাদিকদের সমন্বয় থাকবে বলে আশা করি। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সংগঠনটি আরো বড় হবে। অফিস রুম যেন আরো বড় হয় সেজন্য আমরা ঢাকা আইনজীবী সমিতি আপনাদের পাশে থাকব। ছাত্র-জনতার নতুন বাংলাদেশের যে আশা আকাঙ্ক্ষা তা আপনারা বজায় রাখবেন প্রত্যাশা করছি।”

কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট প্রশান্ত কুমার কর্মকার বলেন, “হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৪ বছর অতিবাহিত করল কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটি। প্রথমে ১২ জন দিয়ে শুরু। এখন প্রায় শতাধিক সাংবাদিক এই সংগঠনে। এই সংগঠনে পেশাদার মেইনস্ট্রিম গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাই কাজ করেন। সবাই নিরপেক্ষ জায়গা থেকে পেশাদারিত্ব বজায় রাখেন। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকরা জাতীয় পর্যায়ে অনেক বড় বড় সংবাদ প্রকাশ করেন। আমি প্রত্যাশা করবো, পেশাদার এই সংগঠনের জায়গার পরিধি বৃদ্ধি করা হয়। এছাড়া ডিসি প্রসিকিউশন বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানাব, আদালতে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টা দেখবেন।”

সংগঠনের সদ্য বিদায়ী সভাপতি হাসিব বিন শহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কোষাধাষ্য আব্দুর রশিদ মোল্লা, পুলিশের অপরাধ ও প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি নাসির উদ্দিন,  বর্তমান সভাপতি লিটন মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক মামুন খান প্রমুখ।

ঢাকা/মামুন/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে’
  • ভয় দেখিয়ে নয়, ভালবাসা দিয়ে জয় করতে হয়
  • ফের ৩ দিনের রিমান্ডে সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন
  • ফের ৩ দিনের রিমান্ডে সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ মামুন
  • ৮০ শতক জমি নিয়ে ১৮ বছরের টানাপোড়েন
  • বিচারক এজলাসে ওঠেননি, সাইবার ট্রাইব্যুনালে কোনো মামলার শুনানি হয়নি
  • সেই ডিসি রুহুল আমিন কারাগারে 
  • খালেদা জিয়ার ৮ মামলা বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
  • কাজে আসছে না খাগড়াছড়ির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার