কক্সবাজারের সাবেক ডিসি রুহুল আমিন কারাগারে
Published: 9th, February 2025 GMT
কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মুন্সি আব্দুল মজিদের আদালত এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কক্সবাজার জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী একেএম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী এলাকার বাসিন্দা।
আরো পড়ুন:
কারাগারে পিন্টুর মৃত্যু
রাজশাহীতে শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
লিফলেট বিতরণে বাধা দেওয়ায় আ.
আইনজীবী সিরাজ উল্লাহ মামলার নথির বরাতে জানান, ২০১৪ সালে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের সময় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সংঘবদ্ধভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ২৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় এ কে এম কায়সারুল হক ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মোহাম্মদ রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেন।
দুদক তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির ঘটনায় নতুন করে ২৩ জনকে অভিযুক্ত করে মোট ২৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। পরবর্তীতে, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনসহ সব আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আজ মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ রুহুল আমিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী একেএম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী জানান, মামলাটি দায়েরের পর থেকেই প্রধান আসামিসহ অন্যান্য অভিযুক্তরা নানা জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। এমনকি তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজকে প্রভাবিত করে এজাহারে পুনঃলিখনের মাধ্যমে আসামির নাম পরিবর্তনসহ বিভিন্ন অনৈতিক উপায়ে মামলা প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া, তাকে হয়রানি করতে একাধিক মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি জানান, আদালত রুহুল আমিনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট। একইসঙ্গে ন্যায়বিচার পাবেন বলেও বাদী আশাবাদী।
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনা আলমকে আটকের ঘটনায় ৩৮ নাগরিকের নিন্দা
মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৩৮ নাগরিক। একই সঙ্গে মেঘনা আলমকে দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তি দিতে এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আইনজীবী, আইনের শিক্ষক ও মানবাধিকারকর্মী রয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের পর ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় তাঁর কোনো হদিস ছিল না। পরে ১০ এপ্রিল রাতে তাঁকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে হাজির করা হয় বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তারের সময় তাঁকে তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করতে দেওয়া হয়নি।
বিবৃতিতে ৩৮ নাগরিক বলেন, এই পদক্ষেপের বিস্তৃত প্রভাব নিয়ে তাঁরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিপীড়নমুক্ত করার যে লক্ষ্য ছিল, তা এমন কর্তৃত্ববাদী পদক্ষেপের কারণে ক্ষুণ্ন হয়েছে। যেভাবে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা ন্যায়বিচার, জবাবদিহি ও মানবিক মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধার নীতি থেকে বিচ্যুতি তুলে ধরেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই পরিস্থিতিতে মেঘনা আলমকে দ্রুত এবং শর্তহীন মুক্তি দেওয়ার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর কাছে জরুরিভাবে আহ্বান জানাচ্ছি, যেন কী কারণে তাঁকে আটক করা হয়েছে তা দ্রুত তদন্ত করা যায়, দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া যায় এবং মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের জন্য তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়। একই সঙ্গে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আবেদা গুলরুখ, ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, ওমর ফারুক, কাজী জাহেদ ইকবাল, মানজুর-আল-মতিন, প্রিয়া আহসান চৌধুরী, তাসলিমা ইয়াসমিন প্রমুখ।