সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে একটি হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালত এ আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) এ এ এম হুমায়ুন কবীর জানান, পাঁচলাইশ থানার একটি হত্যা মামলায় নদভীর পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্র জানায়, এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাবেক এই সংসদ সদস্যকে আদালতে আনা হয়। শুনানি শেষে তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর বিরুদ্ধে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া এবং চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা দায়ের হয়। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার হন তিনি।

গত ২২ জানুয়ারি লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া থানার দুটি পৃথক মামলায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল আদালত। এরপর ২৬ জানুয়ারি চান্দগাঁও থানার আরও দুটি মামলায় দুই দিন করে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় নদভীকে।

আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ২০১৪ ও ২০১৮ সালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে সদ্যসমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

এম জি

.

উৎস: SunBD 24

এছাড়াও পড়ুন:

'দুই বেটি নিয়া হামার কোনো কষ্ট নাই'

‘বাহে, শনিবার রাইত ১০টার সময় ছাওয়াটার ব্যথা ওঠে। সে কি ব্যথা, আতালি পাতালি। গ্রামের দাই আসি অনেক চেষ্টা করিল। কই, কিছুই তো হইল না। এলা কি করং, অতো রাইতত হাসপাতাল যাইম কেমন করি! গাড়ি, ঘোড়া, রিকশা-কিছুই নাই। তারপর একখান অটোরিকশা জোগাড় করি ভোর ৫টার সময় ফুলবাড়ি থাকি লালমনিরহাট রওনা হইনো। শহরের সাপটানা বাজারের ক্লিনিকে হাজির হই হামরাগুলা। ক্লিনিকের লোকজন অপারেশন করি মোর ছোট নাতনিক দুনিয়ার মুখ দেখায়ছে।'

নববর্ষের প্রথম প্রহরে জন্ম নেওয়া নাতনির সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন জমিলা বেগম। বলতে থাকেন, ''বাহে, হামরা গরিব মানুষ, অতো কিছু বুঝি না, তোমরাগুলা এই গরিবের ছাওয়াক যে সম্মান কইরলেন, তাতে মনটা ভরি গ্যালো। হাউস করি নাতনির নাম রাখমো ‘বৈশাখি’।’’

লালমনিরহাট শহরের খোদেজা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সোমবার সকাল ৬টায় শাহ আলম ও হামিদা দম্পতির কোলজুড়ে আসে কন্যাশিশু। বাংলা বছরের প্রথম দিনে সন্তান উপহার পেয়ে তাদের পরিবারে বইছে খুশির বন্যা। এটি তাদের দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। বড় মেয়ে শিমু নার্সারি শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা কুমারপাড়া গ্রামের শাহ আলম মিয়া বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুরোনো খাতাপত্র, পত্রিকা, ভাঙ্গা টিন কিনে শহরে তা বিক্রি করেন। দিনে তিন থেকে চারশ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। পাঁচ শতকের বসতভিটায় তিন ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে তিনি বসবাস করেন। বসতভিটার ওইটুকু জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই তার। তাই সন্তানকে ক্লিনিকে রেখে টাকার সন্ধানে ছুটছেন। কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে হবে। শাহ আলম বলেন, ‘মুই বাহে হকার, দিন আনি দিন খাই। হামার নববর্ষ বলি কিছু নাই। দোয়া কইরবেন ছাওয়াক মুই নেখাপড়া শিখাইম। দুই বেটি নিয়া হামার কোনো কষ্ট নাই। আল্লাহ সুস্থ রাখছে, তাতে হামরা খুশি।'

শাহ আলমের এসব কথা শুনে ক্লিনিকের বিছানায় শুয়ে থাকা নবজাতকের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘আমি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করেছি। বাবা অটোরিকশা চালান। অভাবের সংসারে ইচ্ছা থাকার পরও লেখাপড়া করতে পারিনি। ২০১৪ বিয়ে হয়। পরের বছর প্রথম সন্তানের জন্ম হয়।' দুই মেয়েকে লেখাপড়া শেখানোর ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান তিনি। 

ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্বজিৎ জানান, বাড়িতে অনেক চেষ্টা করেও হামিদার নরমাল ডেলিভারি করাতে পারেনি পরিবার। সময় ক্ষেপণ করায় বেশ সমস্যা হয়েছিল। পরে অস্ত্রোপচার করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য। তাকে সহায়তা করেন ডা. হাবিব। ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য জানান, মা ও শিশু এখন সুস্থ রয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ