পুতিনের সঙ্গে কথা হয়েছে, জেলেনস্কির সঙ্গে হবে; দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চান ট্রাম্প
Published: 9th, February 2025 GMT
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে টেলিফোনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন বলে নিউইয়র্ক পোস্ট খবর প্রকাশ করেছে।
শনিবার রাতে নিউইয়র্ক পোস্ট ট্রাম্পের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। নিউইয়র্ক পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে (মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ) বসে ট্রাম্প তাদের ওই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি কতবার পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ট্রাম্প বলেন, এ প্রশ্নের জবাব না দেওয়াই ভালো। তিনি (পুতিন) মানুষের মৃত্যু বন্ধ হওয়া দেখতে চান।
আরও পড়ুনইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি না করে পুতিন রাশিয়াকে ধ্বংস করছেন: ট্রাম্প ২১ জানুয়ারি ২০২৫নিউইয়র্ক পোস্টে ট্রাম্পের ওই সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর রাতে রয়টার্স থেকে এ বিষয়ে জানতে ক্রেমলিন এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু কারও কাছ থেকেই সাড়া মেলেনি।
গত মাসের শেষ দিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, পুতিন ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলতে প্রস্তুত আছেন। ওয়াশিংটনও প্রস্তুত, এমন কথা শোনার অপেক্ষায় আছে মস্কো।
শুক্রবার ট্রাম্প আরও বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি খুব সম্ভবত আগামী সপ্তাহে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলবেন।
আরও পড়ুনইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পুতিন আলোচনায় না বসলে ট্রাম্প কি নিষেধাজ্ঞা দেবেন২২ জানুয়ারি ২০২৫আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের তৃতীয় বার্ষিকী। এই যুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই ইউক্রেনের নাগরিক।
ট্রাম্প নিউইয়র্ক পোস্টকে বলেছেন, পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সব সময়ই ভালো এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে তাঁর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে।
এ নিয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য ট্রাম্প দেননি।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আশা করি এটা দ্রুত হবে। প্রতিদিনই লোকজন প্রাণ হারাচ্ছেন। ইউক্রেনে এ যুদ্ধ খুবই বাজে প্রভাব ফেলেছে। আমি জঘন্য এই জিনিসটি শেষ করতে চাই।’
আরও পড়ুনইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি না করে পুতিন রাশিয়াকে ধ্বংস করছেন: ট্রাম্প ২১ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উইয়র ক প স ট বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী খলিলের মুক্তির দাবিতে নিউইয়র্কের আদালতের বাইরে শত শত মানুষের বিক্ষোভ
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে বিতাড়িত করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের ওপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার এই মেয়াদ বাড়ান যুক্তরাষ্ট্রের এক বিচারক। এদিন শুনানি চলাকালে নিউইয়র্কের আদালতের বাইরে শত শত মানুষ খলিলের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন খলিল। গত রোববার তাঁকে গ্রেপ্তার করেন মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা।
খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার বিরুদ্ধে গত সোমবার সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেন ডিস্ট্রিক্ট জজ জেসি ফারম্যান। তিনি গতকাল শুনানির পর একটি লিখিত আদেশে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ান।
খলিলকে গ্রেপ্তার করাটা অসাংবিধানিক কি না, তা বিবেচনা করার জন্য আরও সময় নেওয়ার লক্ষ্যে বিচারক এমন আদেশ দিয়েছেন।
গতকাল নিউইয়র্ক শহরের আদালতকক্ষে শুনানি চলার সময় বাইরে খলিলের মুক্তির দাবিতে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেন। তাঁরা মুহুর্মুহু স্লোগান দেন, ‘মাহমুদ খলিলকে এখনই মুক্তি দিন।’
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের একটি নথি দেখেছে রয়টার্স। নথিটির বরাতে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, ২৯ বছর বয়সী খলিলকে একটি আইনি বিধানের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অভিবাসীদের কারও উপস্থিতিকে যদি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হচ্ছে না বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে, তাহলে তাঁকে বিতাড়িত করার কথা এই বিধানে বলা আছে।
গতকাল আদালতে খলিলের আইনজীবী রামজি কাসেম বলেন, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার হওয়ায় তাঁর মক্কেলকে শনাক্ত করে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
খলিলকে গ্রেপ্তারের পর প্রথমে নিউ জার্সিতে আটক রাখা হয়। পরে তাঁকে লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালতের সবশেষ আদেশের ফলে খলিল সম্ভবত আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত লুইজিয়ানার আটককেন্দ্রেই আটকাবস্থায় থাকবেন। তাঁর আইনজীবীরা চান, তাঁকে নিউইয়র্কে ফিরিয়ে আনা হোক। তাঁকে আটকাবস্থা থেকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হোক।
ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত খলিলের স্ত্রী একজন মার্কিন নাগরিক। খলিল ২০২২ সালে শিক্ষার্থী ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যান। তিনি গত বছর স্থায়ী বাসিন্দা হন।
গতকাল আদালতের সংক্ষিপ্ত শুনানিতে আইনজীবী কাসেম বলেন, লুইজিয়ানার আটককেন্দ্র থেকে তাঁর মক্কেল আইনজীবী দলের সঙ্গে ফোনে মাত্র একবার কথা বলতে পেরেছেন। কিন্তু কথা শেষ হওয়ার আগেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফোনের কথোপকথন সরকারি কর্তৃপক্ষ রেকর্ড করেছে, নজরদারি চালিয়েছে।
খলিলকে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট। সংস্থাটি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নির্দেশে তারা খলিলের গ্রিন কার্ড বাতিল করার পরিকল্পনা করেছে।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার১০ মার্চ ২০২৫