ম্যাটস শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিতে শাহবাগে অবরোধ
Published: 9th, February 2025 GMT
উচ্চশিক্ষার সুযোগ ও উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শূন্য পদে নিয়োগ প্রদানসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে ‘সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে শাহবাগ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো১.
২. প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন, কোর্সের নাম পরিবর্তনসহ ২০২১ সালের কোর্স কারিকুলামের অসংগতি সমাধান করে নতুন ইন্টার্ন লগবুক প্রণয়ন করতে হবে
৩. বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদান করতে হবে
৪. প্রস্তাবিত অ্যালাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড খসড়া আইনের নাম পরিবর্তনসহ প্রস্তাবিত সব ধারায় সংশোধনীসহ বাস্তবায়ন করতে হবে।
আরও পড়ুনআয়ারল্যান্ড দিচ্ছে স্কলারশিপ, সুযোগ পাবেন যাঁরা৮ ঘণ্টা আগেআন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোয় চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের এখন পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সাড়ে চার বছর মেয়াদি মেডিকেল ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করা দক্ষ জনবল থাকার পরেও তাঁদের উপেক্ষা করে কমিউনিটি ক্লিনিকে সাধারণ শিক্ষায় পড়াশোনা করা নন-মেডিকেল ব্যক্তিদের দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে সাধারণ জনগণ মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসাসেবার নামে বঞ্চিত হচ্ছে।
বর্তমানে সারা দেশে ১৬টি সরকারি ও প্রায় ২০০টি বেসরকারি ম্যাটস ডিপ্লোমা মেডিকেল ডিগ্রি ‘ডিএমএফ’ কোর্স পরিচালনা করে আসছে। বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০২২ ও বিএমডিসির সর্বশেষ তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে ডিপ্লোমা মেডিকেল শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। এ ছাড়া বিএমডিসি নিবন্ধিত ডিএমএফের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৫৫ হাজার ডিএমএফ উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন উপ–স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রসহ জেলা সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
আরও পড়ুননবম শ্রেণিতেই মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসার বিভাজন চাই না: শিক্ষা উপদেষ্টা ৩ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম য টস
এছাড়াও পড়ুন:
ঠিকাদারের সঙ্গে ঘুষের টাকা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা, প্রকৌশলী বললেন, ‘তর্ক করেন না তো’
মেহেরপুরে গাংনী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের এক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঠিকাদারের কাছে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘুষের টাকা নিয়ে তাঁর সঙ্গে এক ঠিকাদারের বাগ্বিতণ্ডার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম শহিদুল ইসলাম। তিনি গাংনী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও একটি অনলাইন পোর্টালের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওটিতে এম এ মান্নান নামের ওই ঠিকাদারের সঙ্গে উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামকে তাঁর কার্যালয়ে কথা বলতে শোনা যায়। শহিদুলের উদ্দেশে মান্নান বলেন, ‘১ পার্সেন্ট কীভাবে নেবেন আপনি?’ জবাবে শহিদুল বলেন, ‘তর্ক করেন না তো।’ মান্নান আবার বলেন, ‘না, না তর্ক করা না তো। আপনি সাইটে গেলেও ২–৩ হাজার করে নেবেন এক দিনে। আবার এদিকে ট্যাকা ১ পার্সেন্ট করেও নেবেন। হেই আমি কীভাবে দেব?’ এ সময় শহিদুলকে বলতে শোনা যায়, ‘চেঁচাচ্ছেন কেন?’
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গাংনীর রায়পুর ইউনিয়নের শালদহ গ্রাম্য বাজার থেকে কৃষিমাঠ পর্যন্ত ৬৯৩ মিটার পাকা সড়ক তৈরির কাজ পেয়েছেন মেহেরপুর পৌর শহরের বাসিন্দা কাজী শাহিন বিশ্বাস। তবে কাজটি করছেন গাংনী উপজেলার এম এ মান্নান। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের অক্টোবরে শুরু হয়ে চলতি বছরের জুলাইয়ে শেষ হওয়ার কথা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত রোববার উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের কার্যালয়ের যান ঠিকাদার এম এ মান্নান। তখন তাঁদের মধ্যে এসব কথোপকথন হয়। ওই কার্যালয়ের দুজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ওয়ার্ক অর্ডারের ভিত্তিতে প্রতি প্রকল্প থেকে ১ শতাংশ হারে ঘুষ দাবি করেন উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম। কিছু প্রকল্পে তিনি চাহিদামতো ঘুষের টাকা পাননি। এ জন্য তিনি আরও বেশি টাকা দাবি করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন ঠিকাদার এম এ মান্নান। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়।
ঠিকাদার এম এ মান্নান অভিযোগ করেন, প্রকৌশলী শহিদুল নিয়মিতভাবে ঘুষ আদায়ে চাপ দেন। চলমান কাজ পরিদর্শনের সময় প্রতিদিন ৩-৫ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে কাজের বিভিন্ন অজুহাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরির পাশাপাশি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। অনেক সময় বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়, না হলে কাজ আটকে যায়।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঠিকাদার এম এ মান্নান একটি কাজের বিল উত্তোলনের জন্য কয়েক দিন ধরে চাপ দিচ্ছিলেন। কাজ শেষ না করে বিল দিলে ঝামেলায় পড়তে হবে, এ কারণে তাঁকে কাজ শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছিল। তিনি একজনকে সঙ্গে এনে ভিডিও ধারণ করে নিয়ে গেছেন। সেখানে তিনি একাই কথা বলছেন। আমাকে হেয় করার জন্য ভিডিওটি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
ঘুষের টাকার লেনদেনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা হবে বলে জানিয়েছেন গাংনী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন। মেহেরপুর এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আবদুর রশিদ মিয়া বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ নেওয়ার সুযোগ নেই। যদি কেউ ঘুষ নেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’