ডেভিল হান্ট পুলিশি অ্যাকশন, সেনাবাহিনী সহায়তা করবে
Published: 9th, February 2025 GMT
যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তাদের ডেভিল হান্ট অপারেশনের আওতায় এনে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। ডেভিল হান্টে কারা নেতৃত্ব দেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পুলিশি অ্যাকশন। পুলিশ কাজ করবে এবং সেনাবাহিনী এতে সহায়তা করবে। পুলিশের এই নাজুক অবস্থায় তাদের দিয়ে এই অপারেশন চলবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যে সকল দেশে বিপ্লব হয়েছে সেখানে পরাজিত শক্তিকে কেউ রাখেনি। এই সরকার অতটা অমানবিক হতে পারেনি। আমরা পুলিশকে রিফর্ম করেছি।
রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ সম্পর্কে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের অনেক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটাকে স্বাভাবিক করতে এই অপারেশন চালানো হবে। ডেভিল হান্টের তাৎপর্য কি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রতিটি অপারেশনের একটি কোড নেম হয়। এই অপারেশনকে ফোকাস করার জন্য।
ডেভিল হান্ট অপারেশন যারা পরিচালনা করছে তাদের ক্ষমতা কতটুকু? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের যে ক্ষমতা আছে সেই ক্ষমতাই পাবে। ৫ আগস্টের পর যাদের নামে মামলা হয়েছে তারা ডেভিল হান্টের আওতায় আসবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ যখন ধরবে তখনই দেখতে পারবেন। ডেভিল হান্টে কেউ গ্রেপ্তার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা গতকাল (শনিবার) থেকে কাজ শুরু করেছে৷ চট করে সবকিছু বলা যাবে না। যতদিন প্রয়োজন হয় ততদিন এই অপারেশন রাখা হবে।
সিনিয়র সচিব বলেন, ছয় মাস আগে সরকার পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। সে সময় আমাদের পুলিশ বাহিনীর বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মানসিকভাবে দুর্বল ও বেশকিছু সমস্যা হয়েছে। অনেক থানা পোড়ানো হয়েছিল। এসব কারণেই সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এই পরিস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে আমরা অনেকগুলো পরিকল্পনা নিয়েছি। এর অনেকগুলো চলমান আছে, অনেকগুলো প্রয়োগ করতে যাচ্ছি। তার একটা ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’।
তিনি বলেন, এই অপারেশন যৌথভাবে সকলে মিলে একটা ফোকাসড ওয়েতে কিছু কাজ করবে। দেশের স্থিতিশীল অবস্থাকে অস্থিতিশীল করার যে চেষ্টা হচ্ছে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই অপারেশন চলবে। এজন্য আইনানুগ পদ্ধতিতে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন সেটা নেওয়া হবে। সেটার জন্য সকল বাহিনীকে প্রস্তুত ও ব্রিফিং করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের কাজ চলমান রয়েছে।
নাসিমুল গনি বলেন, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে আগে যে আকারে আইন প্রয়োগ করা হতো আমরা সেভাবে হাঁটতে পারবো না। সেজন্য আইন প্রয়োগের সঙ্গে যারা জড়িত সকল স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত হয়ে কীভাবে আইনটাকে প্রয়োগ করতে পারি সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, পুলিশের কেউ ভয়ে এবং চাপে পড়ে অন্যায় করেছে। কিছু অতিউৎসাহী ছিল তারা পালিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন হচ্ছে। আমরা চাই পুলিশ কোমর সোজা করে দাঁড়াক।
তিনি বলেন, আমাদের সিস্টেমের মধ্যে যেন একটা ভালো প্যাকটিস রেখে যেতে পারি। আর যেন দেশে আয়নাঘর তৈরি না হয়। এ রকম পরিস্থিতি যাতে আর তৈরি না হয়। আমাদের সিস্টেমে যারা কাজ করবেন তারা যেন সঠিকভাবে কাজ করতে পারেন। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হবে, যেখানে ঢাকা ও গাজীপুরের ১৫০ জন কর্মকর্তা থাকবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
চারুকলায় দুটি মোটিফে আগুন রহস্যজনক নয়, পরিকল্পিত: ঢাবি সাদা দল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দল। অবিলম্বে অগ্নিকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক আবদুস সালাম ও অধ্যাপক মো. আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়। আজ ভোরে দুটি মোটিফ আগুনে পুড়ে যায়। এর মধ্যে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। আর শান্তির পায়রা মোটিফটি আংশিক পুড়ে গেছে।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, চারুকলা অনুষদের চার দেয়ালের ভেতরে তৈরি করা এসব প্রতিকৃতিতে আগুন দেওয়া নিছক কোনো রহস্যজনক নয়। এটি একটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড। এ ঘটনায় ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের দোসর কিংবা ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের হাত থাকার সম্ভাবনা বেশি।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাদা দলের নেতারা। তাঁরা বলেন, পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা পালনের লক্ষ্যে তৈরিকৃত প্রতিকৃতিসহ অন্যান্য জিনিসের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল না। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর চারুকলার শোভাযাত্রা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকা অত্যাবশ্যক ছিল।
ঢাবি সাদা দলের নেতারা অবিলম্বে চারুকলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। সেই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফ পুড়ে যাওয়ায় চারুকলা অনুষদ যা জানাল৫ ঘণ্টা আগেচারুকলা অনুষদ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফটি কে বা কারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বলেছে, অনেকগুলো মোটিফের মধ্যে দুটি মোটিফ পুড়ে যাওয়ার ঘটনাটি রহস্যজনক। পুলিশ এ নিয়ে তদন্ত করছে।
আরও পড়ুনচারুকলায় আগুনে পুড়ে গেল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ৬ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনশুধু দুটি মোটিফে আগুন লাগা রহস্যজনক বলছে ফায়ার সার্ভিস, তদন্তে পুলিশ৪ ঘণ্টা আগে