জংলির পর এবার জনির সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পালা...
Published: 9th, February 2025 GMT
জংলি সিনেমার পোস্টারে জংলি রূপে দেখা দিয়েছে সিয়ামকে। যে পোস্টারে সিয়াম ছিলেন ভয়ংকর, মুখ থেকে বের হয়ে আছে জিহ্বা। যা থেকে চুঁইয়ে পড়ছে রক্তজল। বিভৎস সেই দৃশ্য নজর কেড়েছিল অনুরাগীদের। তারও আগের পোস্টারে সিয়াম ছিলেন রাফ অ্যান্ড টাফ লুকে। পোস্টারে সিয়ামের কাঁধে ছিল কাক। কিন্তু এবার একেবারে বিপরীতে! জংলি সিয়ামের সঙ্গে কোনো মিল নেই। লম্বা নয় খোচা খোচা দাড়ি মুখে, জেল করা চুল, বসে আছেন বাইকে। এককথায় একেবারে আরবান লুক। আর এই লুকের পোস্টারে দেখা মিলছে পায়রার।
রোববার এমন লুকের পোস্টারই প্রকাশ করলে জংলি টিম। আর এই পোস্টারের মাধ্যমে বহু দিন পর চকলেট হিরোর ইমেজে দেখা গেল সিয়ামকে। ফলে অনুরাগীদের প্রশ্ন তাহলে জংলিতে সিয়ামের ডাবল রোল? উত্তর জানতে যোগাযোগ করা হয় সিনেমাটির পরিচালক এম রাহিমের সঙ্গে। নাহ, মুখ খুলেননি তিনি। শুধু বললেন, সব কিছু জানতে প্রেক্ষাগৃহে এসে সিনেমাটি দেখতে হবে।
পোস্টারটি নিজের সামাজিক অ্যাকাউন্টে শেয়ার দিয়ে সিয়াম লিখেছেন, আমি আছি 'জনি'র সাথে। জংলির সাথে তো পরিচয় হলো ঠিকই, এবার জনির সাথে পরিচিত হবার পালা। জনি আসছে 'জংলি' নিয়ে এই ঈদুল ফিতরে।
সিয়াম জানিয়ে দিলেন আরবান এই চরিত্রের নাম জনি। এই জনির বিপরীতে আছেন জংলি চরিত্রটি। দুই চরিত্রের রহস্যের বিষয়টি খোলাসা হবে ঈদুল ফিতরে।
‘জংলি’তে সিয়াম আহমেদের বিপরীতে আছেন শবনম বুবলী ও প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। ২০২৪ সালের শুরুতে শুটিং শুরু হয় এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’ ছবির। গত বছর প্রেক্ষাগৃহে যখন ঈদুল ফিতরের ছবি নিয়ে মাতামাতি, ঠিক তখনই ছবিটির ফার্স্ট লুক পোস্টার আসে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে তখনই জানানো হয়, সিয়াম অভিনীত ছবিটি ঈদুল আজহায় মুক্তি পাবে। তবে শুটিংয়ের কিছু অংশ বাকি থাকায় তখন ছবিটি মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এবার পরিচালক এম রাহিম বললেন, 'গত বছর ঈদে মুক্তির কথা থাকলেও কাজ শেষ করতে না পারায় মুক্তি দিতে পারিনি। কারণ আমরা আমাদের কাজটাকে সর্বোচ্চ মানের করতে চেয়েছি। হাতে সময় পাওয়ায় সেটা করতে পেরেছি বলে আমার বিশ্বাস। পুরোপুরি উৎসবে মুক্তি দেওয়ার মতো করেই ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে। জংলি এমন একটি সিনেমা যে সিনেমায় অ্যাকশন, রোমান্স ও পারিবারিক গল্প সবই থাকবে। দর্শক একটি সিক্যুয়েন্সের জন্যেও পর্দা থেকে চোখ ফেরাতে পারবে না। আমার বিশ্বাস দর্শকরা হল থেকে মুগ্ধতা নিয়ে বের হবে।'
‘জংলি’তে বিভিন্ন চরিত্রে আরও অভিনয় করেছেন, দিলারা জামান, শহীদুজ্জামান সেলিম, রাশেদ মামুন অপু, সোহেল খান, এরফান মৃধা শিবলু প্রমুখ। এর আগে সিয়ামকে নিয়ে অ্যাকশনধর্মী সিনেমা ‘শান’ বানিয়েছিলেন এম রাহিম। ‘জংলি’তেও সেই ধারা অব্যহত রেখেছেন নির্মাতা। জংলি’ ছবির গল্প লিখেছেন আজাদ খান, চিত্রনাট্য করেছেন যৌথভাবে মেহেদী হাসান ও কলকাতার সুকৃতি সাহা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স য় ম আহম দ এম র হ ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনে বাঘের মুখ থেকে জীবিত উদ্ধারের লোমহর্ষক ঘটনা
সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের টাইগার রিজার্ভ এলাকায় এক বনকর্মী বাঘের মুখে থেকে বেঁচে ফিরেছেন। একেবারে হামলে পড়ে লোকটির শরীর খাবলে নিচ্ছিল বাঘটি। তবে শেষরক্ষা হলেও সেই ঘটনা নিয়ে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়।
সোমবারেরই (১০ ফেব্রুয়ারি) ঘটনা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নগেনাবাদে সুন্দরবন ঘেঁষা গ্রামে বাঘের হামলার এই ঘটনা ঘটে। অবশ্য তখন বনকর্মীদের ক্যামেরা চালু ছিল।
ফুটেজে দেখা যায়, বনকর্মীরা সংখ্যায় ৮ থেকে ১০ জন ছিলেন। তাদের গায়ে ছিল কালো টি-শার্ট। এসময় হঠাৎ করে বাঘটি তাদের দিকে আসার পরই চিৎকার শোনা যায়। ওই সময়ে বাঘটি বনকর্মীদের একজনের ওপর হামলে পড়ে।
আরো পড়ুন:
হরিণের মাংস জব্দ, শিকারি চক্রের ৩ সদস্য শনাক্ত
সুন্দরবনে কাকড়া আহরণে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা
তখন অন্যারা বাঘটিকে পিটিয়ে তাদের সহকর্মীকে ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে বাঘটি বনকর্মীকে ছেড়ে বনের গহীনে দৌড়ে চলে যায়।
বাঘের হামলায় আহত বনকর্মীকে উদ্ধার করে প্রথমে কাছের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (ডিএফও) নিশা গোশ্বামী বলেন, স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
তিনি আরো বলেন, ওই বনকর্মীর শরীরে বাঘের কাঁমড়ের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল।
সোমবার সকালে মৈপীঠ কোস্টাল থানার নগেনাবাদ এলাকায় একটি বাগানে লুকিয়ে থাকতে দেখা যায় বাঘটিকে। সেই মতো তাকে তাড়াতে যায় বনকর্মীদের একটি দল। সঙ্গে ছিলেন এলাকার বাসিন্দারাও। তখনই বাঘটি ওই বনকর্মীকে প্রথমে থাবা মারে এবং তার হাতে কামড় বসায়। সোমবার সকালে লোকালয়ে চলে এসে সুন্দরবনের বাঘ। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।
মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নগেনাবাদ ৯ নম্বর মুলার জেটি ঘাটের কাছে রবিবার বিকালে স্থানীয় রাজকুমার সাফুঁই নামে এক যুবক বসেছিলেন। ঠিক তখনই তার নজরে আসে যে জেটিঘাট-সংলগ্ন শ্মশান ঘাটের কাছে একটি বাঘ ঘোরাঘুরি করছে। সে অবস্থায় বাঘ বাঘ চিৎকার করে ওই যুবক সাইকেল ফেলে দৌড়ে বাড়িতে চলে যান।
মূহূর্তের মধ্যে গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে বাঘ ঢোকার খবর। এরপর ওই যুবকের কাকা শম্ভু সাফুঁই লাঠি সোটাসহ এলাকার লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে গ্রাম লাগোয়া ম্যানগ্রোভের ঝোঁপঝাড়ের মধ্যে এসে দেখেন বাঘের টাটকা পায়ের ছাপ। যদিও বাঘ তাদের নজরে আসেনি। ততক্ষণে বাঘটি লোকজনের ঝোঁপঝাড়ে মধ্যে লুকিয়ে পড়ে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম থেকে সেই বাঘ ঢোকার খবর জানানো হয় বনদপ্তরের রায়দিঘি রেঞ্জের অন্তর্গত নলগোড়া বিট অফিসে। সেই সঙ্গে জানানো হয় স্থানীয় মৈপীঠ উপকূল থানায়। বাঘ ঢোকার খবর পেয়ে দ্রুত নৌকায় জাল নিয়ে পৌঁছান বনকর্মীরা।
জেটি ঘাটে চলে আসেন পুলিশ কর্মীরাও। এরপর যাতে বাঘটি কোনোভাবে রাতে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়তে না পারে, সে জন্যই গ্রামের দিক বরাবর নাইলনের জাল লাগিয়ে দেওয়া হয়। যদিও বাঘটি গ্রামের দিকে জালের কাছে চলে এসেছিল বলে দাবি গ্রামবাসীদের। বাঘটি আবার রাতের অন্ধকারে নিজের জঙ্গলে ফিরে যেতে পারে, সে জন্য জঙ্গলের দিকটা যেমন খুলে রাখা হয়েছিল, তেমনি গ্রামের দিকে নদী বাঁধের ওপর রাতে প্রহরার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার সকাল হলে আবার গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে বাঘের অবস্থান জানার কাজ শুরু করে বনকর্মীরা। আর তখনই ঘটে দুর্ঘটনা।
ঢাকা/কংসবিনক/রাসেল