এলাকাবাসীর সহায়তায় মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন, কিন্তু পড়াশোনা নিয়ে শঙ্কায় প্রিয়া
Published: 9th, February 2025 GMT
প্রিয়া খাতুন এবার খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এই সাফল্য প্রিয়া ও তাঁর পরিবারে সদস্যদের অফুরন্ত আনন্দ এনে দিয়েছে। তবে প্রিয়াসহ তাঁর পরিবারএখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
এলাকাবাসীর সহায়তায় মেডিকেলে ভর্তির টাকার ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। তবে অর্থের অভাবে প্রিয়া খাতুনের মেডিকেলে পড়াশোনা চালিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
প্রিয়া খাতুনের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার দ্বাদশী ইউনিয়নের গোপীনাথ দিয়া গ্রামে। তিন বছর বয়সে প্রিয়ার বাবা ফয়জুল হক মারা গেছেন। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে প্রিয়া সবার ছোট। বাবা এলাকায় চায়ের দোকান করে তিন ভাই–বোন, নানি আর খালাসহ সাত সদস্যের সংসার চালাতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে মা মর্জিনা বেগম স্থানীয় বিভিন্ন খাবার হোটেল, রাস্তায় কাজ করে সংসার সামাল দেন। ভাই পরিবহনের ইঞ্জিনমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন। দুই বছর আগে বিয়ে করে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা থাকেন।
গতকাল শনিবার সকালে প্রিয়া খাতুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনশেডের একটি চৌচালা ঘর ছাড়া কিছুই নেই। তা–ও এটি তাঁদের নানাবাড়ি। বাবার সামান্য অর্থ দিয়ে নানাবাড়িতে ঘরটি করে সবাই বসবাস করেন। এক ঘরের মধ্যে তিন ছেলে–মেয়ে, নানি, খালাসহ সবাই বাস করেন। ঘরের মধ্যে কাঠের চৌকির একাংশজুড়ে বই পড়ে আছে।
আলাপকালে মা মর্জিনা বেগম, বড় বোন আকলিমা খাতুন শোনান টানাপোড়েনের মধ্যে প্রিয়ার সাফল্য ও জীবনসংগ্রামের কথা। মর্জিনা বেগম বলেন, ‘প্রিয়া ঘরের বারান্দায় সারা দিন পড়াশোনা করত। এইচএসসি পাসের পর ঢাকায় ফার্মগেট এলাকায় কোচিংয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করি। ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ এলাকার হোস্টেলে কাজের বিনিময়ে মা ও মেয়ে থাকা–খাওয়ার সুযোগ পাই। পাশাপাশি অন্যান্য বাসায় কাজ করে যা পেতাম, প্রিয়ার পড়াশোনায় ব্যয় করতাম। এভাবে পাঁচ মাস চলার পর পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরি।’
প্রিয়ার মা বলেন, ‘কোন দিন কী খাবার দিলাম, পোশাক লাগবে কি না, তা বলেনি। যখন যা পেরেছি, তা–ই দিয়েছি। এখন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নিজের ওষুধ কেনা, মেয়ের পড়াশোনার খরচ কীভাবে জোগাব। এই নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় দিন পার করছি।’
প্রিয়া খাতুন জানান, শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে সাফল্য পেয়েছেন। স্থানীয় আলাদিপুর আরসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ২০২২ সালে এসএসসিতে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ভর্তি হন রাজবাড়ী সরকারি কলেজে। সেখান থেকে ২০২৪ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে প্রথমবার মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েই সুযোগ পান খুলনা মেডিকেল কলেজে। স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ভর্তি হলেও প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার প্রয়োজন।
প্রিয়া খাতুন বলেন, ‘টাকার জোগান কীভাবে হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। তিন বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছি। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে মারা যান বাবা। ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখেছি চিকিৎসক হব। দরিদ্র মানুষের পাশে থেকে সেবা করে যাব। এ প্রত্যয় নিয়ে সবার সহযোগিতায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই।’
দ্বাদশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সহয গ ত
এছাড়াও পড়ুন:
বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় পাস আরাফাত সানি
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সদ্য সমাপ্ত আসরে বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন আম্পায়াররা। যদিও বিপিএল চলাকালীন তার খেলায় কোনো বাধা আসেনি এবং চিটাগং কিংসের হয়ে ফাইনালেও মাঠে নেমেছিলেন তিনি।
তবে সানির বোলিং ভবিষ্যৎ নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, সেটি কেটে গেছে। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন তিনি। বিসিবির একটি সূত্র গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে, তার বোলিংয়ে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি, ফলে বোলিং চালিয়ে যেতে তার আর কোনো বাধা নেই।
গত ১ ফেব্রুয়ারি লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ২৪ রানে জয় পায় চিটাগং কিংস। সে ম্যাচে চার ওভারে ৪১ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন সানি। এরপরই তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন আম্পায়াররা।
পরবর্তীতে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন তিনি এবং আজ সেই পরীক্ষার ফলাফল হাতে পান। বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে যদি আবারও তার অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ ওঠে, তবে তাকে দেশের বাইরে নিরপেক্ষ ল্যাবে পরীক্ষা দিতে হবে। এবারের বিপিএলে ১১ ম্যাচে ৮.১৭ ইকোনমি রেটে মোট ১১ উইকেট শিকার করেছেন সানি।
উল্লেখ্য, এর আগেও সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে তার এবং পেসার তাসকিন আহমেদের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরে অ্যাকশন সংশোধন করে তারা দুজনই আবার প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরে আসেন।