পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় একটি পুকুরে ভাসমান অবস্থায় মর্জিনা বেগম (৬২) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের শালবাহান এলাকার একটি পুকুর থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া মডেল থানার পুলিশ।

মর্জিনা বেগম তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের পুরাতন বাজার-জিয়ানগর এলাকার প্রয়াত শামসুল হকের স্ত্রী। তিনি মানসিক রোগী ছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন মর্জিনা বেগম। গতকাল সকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। এর পর থেকে তাঁকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। পরে সন্ধ্যার দিকে শালবাহান এলাকায় একটি পুকুরে একজন নারীর লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে মর্জিনা বেগমের স্বজনেরা সেখানে গিয়ে লাশটি শনাক্ত করেন। তিনি কোনো স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন বলে ধারণা করছেন স্বজনেরা। গ্রামীণ কাঁচা সড়কের ধারের ওই পুকুরে তিনি হাঁটার সময় পা পিছলে পড়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগেও তিনি একাধিকবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত কবির প্রথম আলোকে বলেন, রাতে ওই নারীর লাশ উদ্ধারের সময় পরিবারের লোকজন লাশটি মর্জিনা বেগমের বলে শনাক্ত করেন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

রমেক হাসপাতালের সেই চিকিৎসক মাহবুবুরের বদলি চান সহকর্মীরা

অপচিকিৎসায় দুই রোগীর মৃত্যুসহ রিং বাণিজ্য ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ ওঠা রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মাহবুবুর রহমানকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার আবেদন করেছেন সহকর্মীরা।

গত মঙ্গলবার তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যত্র পদায়ন বা বদলির আবেদন জানিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছেন। এতে সই করেছেন কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হরিপদ সরকার, ডা. রবীন্দ্রনাথ বর্মণ, সহকারী অধ্যাপক ডা. আবু জাহিদ, ডা. হাসানুল ইসলাম, জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আশেকুর রহমান, সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল আলীম সরকারসহ ১১ চিকিৎসক।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ডা. মাহবুবুর কর্তৃক হার্টের রক্তনালিতে রিং পরানোয় অনিয়ম নিয়ে ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ করেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং রমেক হাসপাতাল কর্তৃক গঠিত পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি তদন্তও করেছে। কিন্তু ডা. মাহবুবুর অভিযোগকারীদের ভয়ভীতি ও অর্থনৈতিক প্রলোভন দেখিয়ে উত্থাপিত অভিযোগগুলো প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। এ অবস্থায় তিনি রমেকে থাকলে তাঁর অনিয়মের পুনরাবৃত্তি এবং রোগীদের প্রতিবাদের আশঙ্কাসহ সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে। 

প্রয়োজন না হলেও রোগীকে ‘আতঙ্কিত’ করে রিং স্থাপনে উৎসাহিত করা, হার্টের রক্তনালিতে একটি রিং (স্টেন্ট) স্থাপন করে তিনটির টাকা নেওয়া, রিং না বসিয়ে সার্জারি করেই রিংয়ের টাকা আদায় করাসহ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ আছে ডা. মাহবুবুরের বিরুদ্ধে। এসবের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হতেই তিনি বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির মাধ্যমে অভিযোগ তুলে নিতে ‘চাপ ও হুমকি’ দিচ্ছেন বলে ২২ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন আতোয়ার রহমান নামে এক ভুক্তভোগী। 

অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. মাহবুবুর বলেন, প্রত্যেক রোগীর হার্টে রিং স্থাপনের পর তাঁকে রিপোর্ট কপি এবং সিডি দেওয়া হয়। সেখানে বিস্তারিত তথ্য থাকে। এর পরও যদি কেউ অভিযোগ করেন, তাহলে এটা দুঃখজনক।

ডা. মাহবুবুরকে সরাতে কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণলায় সিদ্ধান্ত নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ