ভুল ধারণা ১: অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে পড়তেই অনেক টাকা আয় করা যায়

অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং তাঁদের পরিবার মনে করে, শিক্ষার্থী ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছাতে পারলেই টাকা আয় করা যাবে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলালেই বোঝা যাবে এটি একটি ভুল ধারণা। বাস্তবে অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষার্থী ভিসাধারীরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা কাজ করার বৈধতা পান। আর ঘণ্টাপ্রতি আয় অন্তত ২৪ অস্ট্রেলীয় ডলার। অর্থাৎ বৈধভাবে একজন শিক্ষার্থী মাসে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। কিন্তু সরকারি হিসাব অনুযায়ী টিউশন ফি ছাড়াই একজন শিক্ষার্থীর মাসিক খরচ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার বেশি। এ প্রসঙ্গে মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি অভিজ্ঞতা ও হাতখরচ চালানোর জন্য খণ্ডকালীন কাজ করি। আসলে অস্ট্রেলিয়া সরকার ভিনদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রক্রিয়াটা এমনভাবে সাজিয়েছে, যেন আমরা নিজের দেশের টাকা অস্ট্রেলিয়ায় এনে খরচ করি। তাই কেউ যদি মনে করেন, এখানে পড়তে এসে অনেক টাকা রোজগার করে আবার দেশেও পাঠাবেন, তাহলে ভুল করবেন। বরং টিউশন ফির জন্য ভালো অঙ্কের টাকা বাংলাদেশ থেকে আনতে হবে।’

ভুল ধারণা ২: ভিসা পাওয়া সহজ, খরচ কম

মনে হতে পারে, অস্ট্রেলিয়ার ‘সাবক্লাস ৫০০ স্টুডেন্ট ভিসা’ পাওয়া অনেক সহজ আর খরচও কম। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। দেশটিতে দীর্ঘদিন অভিবাসন আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘একটা সময় অনেক সাধারণ কলেজের ডিপ্লোমা কোর্সেও স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যেত। এখন বাছাইকৃত ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া শিক্ষার্থী ভিসা মঞ্জুর হওয়ার হার অনেকটাই কম। গেল বছর আবেদনকারীর প্রায় ৩০ শতাংশ বাংলাদেশি ভিসা পাননি। আর অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষার্থী ভিসার খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। প্রাথমিকভাবে ভিসা নিয়ে একজন শিক্ষার্থীর অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছাতেই প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়। তবু আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়ায় আসছে এবং আরও আসবে।’

আরও পড়ুনবিদেশে পড়তে চাই, কিন্তু কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন প্রোগ্রাম আমার জন্য৩ ঘণ্টা আগে

ভুল ধারণা ৩: পড়াশোনা শেষ করলেই স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া যাবে

অস্ট্রেলিয়ায় দক্ষ পেশাজীবীর চাহিদার তালিকা আছে। অনেকের ধারণা, এই তালিকায় থাকা পেশা–সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা শেষ করলেই অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া যাবে। আর তা না হলেও অন্তত স্থায়ী বাসিন্দার ভিসায় আবেদন করা যাবে। কিন্তু শিক্ষার্থী ভিসার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বাসিন্দার ভিসার প্রায় তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজের ভিসা হলো ‘সাবক্লাস ৪৮২ স্কিল ইন ডিমান্ড ভিসা’। এই ভিসা থেকে ‘সাবক্লাস ১৮৬’ ভিসার মাধ্যমে কেউ অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারেন। সদ্য পড়াশোনা শেষ করে কাজের ভিসায় আবেদন করেছেন ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। তাঁর বক্তব্য, ‘বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থী ভিসা করার সময় এজেন্সি থেকে বলেছিল ফুড টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা শেষ করলেই চাকরির মাধ্যমে স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারব। কিন্তু বাস্তবতা এত সহজ নয়।’

ভুল ধারণা ৪: নিশ্চিন্ত জীবনযাত্রা

উন্নত দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার জীবনযাপনে অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ঠিক। কিন্তু জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়, সাংস্কৃতিক পার্থক্য এবং কাজ ও পড়াশোনার চাপ অনেককেই হতাশায় ফেলে দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বলেন, ‘গরমের দিনে ৪০ ডিগ্রির ওপর তাপমাত্রা, আবার শীতে ১০ ডিগ্রির নিচের ঠান্ডায় অভ্যস্ত হতে সময় লেগেছে। জিনিসপত্রের দাম শুনে বাংলা টাকায় হিসাব করতে করতেও মানসিক চাপে পড়তে হয়।’

ভুল ধারণা ৫: ভিসার নীতিমালা সামনে সহজ হবে

অভিবাসন আইনজীবী নিজাম উদ্দিনের মতে, ‘ভিসা দিন দিন সহজ হচ্ছে, এমন প্রলোভন দেখিয়ে অনেকে শিক্ষার্থীকে অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন এজেন্সি ভিসা করিয়ে দেয়। সম্প্রতিই ভিসার মধ্যে ইংরেজির স্কোর বাড়ানোসহ আরও অনেক আবশ্যিক শর্তে কঠোরতা আনা হয়েছে। আবার শিক্ষার্থী ভিসায় মোট মঞ্জুর হওয়া ভিসার সংখ্যাও কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে এরপরও নিয়ম মেনে যাঁরা আবেদন করছেন, তাঁদের ভিসা হওয়ার হারই বেশি।’

বিপদ এড়াতে ৩ পরামর্শ

১.

আগেই পড়াশোনা করুন: কোর্স, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভিসা নীতিমালা সম্পর্কে আগেই ভালোমতো খোঁজ নিন। স্রেফ এজেন্সির কথায় ভরসা রেখে বিমানে চড়ে বসবেন না।

২. বাস্তবসম্মত বাজেট তৈরি করুন: শুধু টিউশন ফি নয়, থাকা-খাওয়া ও জরুরি তহবিলের পরিকল্পনা করুন।

৩. মানসিকভাবে প্রস্তুত হোন: নতুন সংস্কৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর মানসিকতা রাখুন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য শ ষ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘পাতাল লোক ২’, উন্নয়নের স্বপ্ন আর একজন হাতিরামের গল্প

মহামারির দিনগুলোতে ঘরবন্দী মানুষ একটু স্বস্তি খুঁজছে। নিজের আশপাশ, সমাজব্যবস্থা, পরিবেশ, রাজনীতি—নানা কিছু নিয়ে চিন্তা করছে। এমন সময় অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওতে মুক্তির পর অন্তর্জালে ব্যাপকভাবে চর্চিত হয় ‘পাতাল লোক’। জাতে ক্রাইম-থ্রিলার, তবে পরতে পরতে রাজনীতি, সমাজব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্মাতা। সহজেই সিরিজটি ভারতের অন্যতম সেরা সিরিজের একটি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। আলোচিত সেই সিরিজের দ্বিতীয় মৌসুম এল চার বছর অপেক্ষার পর! অনেকে হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন হাতিরাম চৌধুরী আর আনসারির গল্প। কিন্তু গত মাসে দীর্ঘ বিরতির পর ফিরে এসে তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন, অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়।

একনজরে
সিরিজ: `পাতাল লোক ২'
ধরন: ক্রাইম-থ্রিলার
ক্রিয়েটর: সুদীপ শর্মা
নির্মাতা: অবিনাশ অরুণ
পর্বসংখ্যা: ৮
অভিনয়: জয়দীপ আহলাওয়াত, ঈশ্বক সিং, তিলোত্তমা সোম
স্ট্রিমিং: অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও

কী ঘটেছিল প্রথম মৌসুমে
অনেক চরিত্র একই, তবে গল্পের দিক থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় মৌসুমের খুব একটা সম্পর্ক নেই। তবু একবার প্রথম কিস্তি ফিরে দেখে স্মৃতি ঝালিয়ে নেওয়া যাক। গল্প শুরু হয় সঞ্জীব মেহরাকে দিয়ে। ভারতের অন্যতম এক টিভি চ্যানেলের ডাকসাইটে উপস্থাপক তিনি। সঞ্জীব মেহরার কারণে বড় অনেক শিল্পপতি, এমনকি মন্ত্রীদেরও অপদস্থ হতে হয়েছে মিডিয়ার সামনে। সাংবাদিকতার দিক থেকে কাউকেই ছাড় দিতে রাজি নন সঞ্জীব। হয়তো তেমনই এক শত্রুতার জেরে দিল্লি পুলিশ এক বেনামি ফোনকল পেয়ে চার যুবককে গ্রেপ্তার করে। এই চার যুবক নাকি সঞ্জীব মেহরাকে খুন করার পরিকল্পনা করছিল। তদন্তের দায়ভার পড়ে আউটার যমুনা থানার ইন্সপেক্টর হাতিরাম চৌধুরীর ওপর।

`পাতাল লোক ২'-এর দৃশ্য। আইএমডিবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের র‌্যাম্পে রুনার ঝলক, নজর কাড়লেন ১০ ছবিতে
  • আদালতে শমসের বললেন, ‘আমি বিএনপি করতাম’, পল্টিবাজ নেতা বললেন পিপি
  • ১ মাস ৯ দিন শুরু হলো টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য বিক্রয়, ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি
  • মামলার হাজিরা দিতে যাচ্ছিলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী তরুণের মৃত্যু
  • শাফিন আহমেদ স্মরণে কনসার্ট, গাইবে দলছুট-আর্টসেলসহ পাঁচ ব্যান্ড
  • দশ জনের দল নিয়েও বার্সার বড় জয় 
  • ‘আগের ছন্দে বোলিং করতে পারছি’
  • যুক্তরাজ্যে টিউলিপ সিদ্দিকের অবৈধ তহবিল জব্দ করবে বাংলাদেশ
  • বিরুদ্ধ সময় কাটিয়ে সেঞ্চুরিতে রোহিতের আনন্দাশ্রু
  • ‘পাতাল লোক ২’, উন্নয়নের স্বপ্ন আর একজন হাতিরামের গল্প