চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ করে অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভ
Published: 9th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি মোড় প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন অটোরিকশার (ম্যাক্সিমা) চালকেরা। মামলা না দেওয়া এবং পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট জায়গা দেওয়ার দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চালকেরা সড়ক অবরোধ করেন।
আজ বেলা একটায় সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের মাঝখানে অটোরিকশা রেখে বিক্ষোভ করছেন চালকেরা। এতে লালদীঘি থেকে কোতোয়ালি পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দাবি আদায়ে নানা স্লোগানও দেন চালকেরা। আনোয়ার হোসেন নামের এক চালক প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থেকে চকবাজার পর্যন্ত চলাচল করেন তাঁরা। এ পথের বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়ানোর পর মামলা দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। যাত্রী ওঠানামার জন্য তাঁদের এখানে দাঁড়াতে হয়।
আনোয়ার হোসেনের অভিযোগ, কোতোয়ালি মোড়ে দাঁড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নেই। কিন্তু মোড়ে দাঁড়ালেই পাঁচ হাজার টাকার মামলা দেওয়া হচ্ছে। অথচ সারা দিন গাড়ি চালিয়ে দুই হাজার টাকাও উঠছে না। সড়কে চলাচল করার জন্য ট্রাফিক পুলিশকে চাঁদা দিতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জসিম উদ্দিন নামের আরেক চালক দাবি করেন, লাইসেন্স, গাড়ির ট্যাক্স-টোকেনসহ কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও ট্রাফিক পুলিশ পার্কিংয়ের মামলা দিচ্ছে। এ কারণে রাস্তায় নামতে হয়েছে। হয়রানি বন্ধ করতে হবে। পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে দিতে হবে। চালকেরা জানান, কোতোয়ালি থেকে চকবাজার পর্যন্ত অর্ধশতাধিক অটোরিকশা নিয়মিত চলাচল করে।
হয়রানিমূলক মামলা কিংবা চাঁদা দাবির কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ মারিফুল করিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই মুহূর্তে পুলিশ হয়রানিমূলক মামলা করবে কিংবা চাঁদা দাবি করবে, এমন সুযোগ নেই। তারপরও এ বিষয় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করা হবে।
জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
নববর্ষের সঙ্গে মিল রেখে সন্তানের নাম রাখা হবে
বাংলা নববর্ষের সকালে রাজিব ও তানিয়ার কোল জুড়ে আগমন হলো ৩য় পুত্র সন্তানের। সোমবার তিন কেজি ৩ গ্রাম ওজন নিয়ে ফরিদপুর শহরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে সকাল ৯টা ১০ মিনিটে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করেন শিশুটি।
বছরের প্রথম দিনে নতুন অতিথিকে পেয়ে বাঁধভাঙা আনন্দে ভাসছে তাদের পরিবার।
সাইদুল ইসলাম রাজিব ও তানিয়া আক্তার ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট হাউজিং স্টেট এলাকার খসরু ব্যাংকার এর বাসার ভাড়াটিয়া। রাজিব শহরে গাড়ির ব্যবসায় করেন। দীর্ঘদিন তারা ফরিদপুর শহরে বসবাস করেন। স্ত্রী তানিয়া আক্তারের বাড়ি শহরের গোয়ালচামট রথখোলা এলাকায়। এই দম্পতির ৯ বছর ও ২ বছরের পুত্র সন্তানের পর ৩য় পুত্র সন্তান জন্ম নিলো।
গত রাতে তানিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিজারের পর মা ও শিশু সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন ডা. দিলরুবা জেবা।
শিশু হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আক্কাস হোসেন বলেন, মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন।
পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা জানান, ফুটফুটে পুত্র সন্তান উপহার পেয়ে তারা অনেক খুশি। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে জন্ম হওয়ায় নববর্ষের সঙ্গে মিল রেখে তার নাম রাখবো।
বাবা রাজিব বলেন, আমি গাড়ির ব্যবসার কাজে বেশির ভাগ সময় বাইরে বাইরে থাকি। এজন্য বাসায় ফিরেই আগে স্ত্রী ও সন্তানদের খোঁজ নিতাম। তবে আমার স্ত্রীর ওপর আমার ভরসা অনেক। তার সক্ষমতাও অনেক। আমার পরিবারের লোকজন সবসময় তার কেয়ার নিতেন। সেই সাথে তানিয়ার মা বোন কাছাকাছি থাকায় তারাই সব সময় সাহস দিয়ে থাকতেন আমার স্ত্রীকে। এজন্য বলতে পারেন আমি অনেকটা নিশ্চিন্তে থাকতাম।
তিনি বলেন, ধর্মীয় রীতিনীতি সব সময় পালন করেছি, করবো। তবে কোন প্রকার কুসংস্কার নিয়ে আমরা ভাবি না। ১১ বছর আগে তানিয়ার সঙ্গে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় আমাদের। আমাদের বাড়ি ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদি এলাকায়। আমি ফরিদপুর শহরে প্রায় ২০ বছর ধরে গাড়ির ব্যবসা করি। পারিবারিক ভাবেই আমাদের বিয়ে হয়। যদিও ৩য় সিজার নিয়ে একটু টেনশনে ছিলাম। সকাল সাড়ে ৯টার পরে নার্স এসে ছেলেকে কোলে তুলে দিলে প্রথমেই আমি আযান দেই। তারপর তার নানীর কোলে তুলে দেই। পহেলা বৈশাখের মতো বিশেষ দিনে জন্ম গ্রহণ করাটা আমাদের কাছে আনন্দের তবে সেটা দিনক্ষণ ঠিক করে নয়। ডাক্তারের পরামর্শে আজ সিজার অপারেশন হয়। সন্তানের আগমন ও মায়ের সুস্থতা নিয়ে আমাদের বেশি চিন্তা ছিল। পহেলা বৈশাখ আমাদের মাথাতেই ছিল না। আপনারাই বরং আমাদের বিশেষ উপলক্ষ করে দিলেন, স্মরণ করিয়ে দিলেন। আমার নবাগত সন্তানকে পহেলা বৈশাখের আনন্দের স্বাদ পাইয়ে দিলেন। এজন্য সমকাল কর্তৃপক্ষকে আমি আমার অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাই। আগামীতে সন্তান যখন তার জন্মদিন ও বৈশাখ নিয়ে আনন্দ করবে সেটাই আমার কাছে বেশি আনন্দের হবে।
শিশু হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আক্কাস হোসেন বলেন, মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন। আমাদের নার্স ও ডাক্তাররা নিয়মিত দেখভাল করছেন। তিনি আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ হিসেবে ওই শিশুটিকে কোন প্রকার আয়োজনে অংশগ্রহণ করাতে পারিনি। হাসপাতালেও বৈশাখ উপলক্ষে কোন আয়োজন করা হয়নি। তবে ব্যক্তিগত ভাবে কেউ কেউ একজন আরেকজনকে উইশ করে থাকতে পারে। একই দিনে আমাদের হাসপাতালে আরও ৪টি শিশু জন্মগ্রহণ করেছেন। রাত্রি নাগাদ আরও একটি বা দুটি শিশু জন্ম নিতেও পারে। আপনারা এসে হাসপাতালে নববর্ষ উৎসবকে মনে করিয়ে দিলেন। আগামীতে এ বিষয়গুলো নিয়ে কিছু করা যায় কিনা সেটা ভাবনায় রাখলাম।
নবজাতকের নানী বাবলী বেগম সমকালকে জানান, আমরা ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলি কোন কুসংস্কার নয়। রোববার ডাক্তারের কাছে মেয়েকে নিয়ে নিয়মিত চেকআপ করাতে আসলে ডাক্তার পরামর্শ দেন সিজারের সময় হয়ে গেছে আপনারা প্রস্তুতি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান। ভর্তি হয়ে ডাক্তারকে জানালে তিনি সকালে অপারেশন করবেন বলে সময় দিয়ে যান। আল্লাহ আমাদের একটি সুস্থ পুত্র সন্তান দান করেছেন। এই সন্তানকে ভবিষ্যতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ। তবে তার জন্য এখন থেকেই কোনো লক্ষ্য ঠিক করে দিতে চাই না, যে তোমাকে এটা বানাবো বা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানাবো, বা এটা হতে হবে বা ওটা হতে হবে এরকম টা নয় আমাদের কাছে।