চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি মোড় প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন অটোরিকশার (ম্যাক্সিমা) চালকেরা। মামলা না দেওয়া এবং পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট জায়গা দেওয়ার দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চালকেরা সড়ক অবরোধ করেন।

আজ বেলা একটায় সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের মাঝখানে অটোরিকশা রেখে বিক্ষোভ করছেন চালকেরা। এতে লালদীঘি থেকে কোতোয়ালি পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দাবি আদায়ে নানা স্লোগানও দেন চালকেরা। আনোয়ার হোসেন নামের এক চালক প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থেকে চকবাজার পর্যন্ত চলাচল করেন তাঁরা। এ পথের বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়ানোর পর মামলা দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। যাত্রী ওঠানামার জন্য তাঁদের এখানে দাঁড়াতে হয়।

আনোয়ার হোসেনের অভিযোগ, কোতোয়ালি মোড়ে দাঁড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নেই। কিন্তু মোড়ে দাঁড়ালেই পাঁচ হাজার টাকার মামলা দেওয়া হচ্ছে। অথচ সারা দিন গাড়ি চালিয়ে দুই হাজার টাকাও উঠছে না। সড়কে চলাচল করার জন্য ট্রাফিক পুলিশকে চাঁদা দিতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

জসিম উদ্দিন নামের আরেক চালক দাবি করেন, লাইসেন্স, গাড়ির ট্যাক্স-টোকেনসহ কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও ট্রাফিক পুলিশ পার্কিংয়ের মামলা দিচ্ছে। এ কারণে রাস্তায় নামতে হয়েছে। হয়রানি বন্ধ করতে হবে। পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে দিতে হবে। চালকেরা জানান, কোতোয়ালি থেকে চকবাজার পর্যন্ত অর্ধশতাধিক অটোরিকশা নিয়মিত চলাচল করে।

হয়রানিমূলক মামলা কিংবা চাঁদা দাবির কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ মারিফুল করিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই মুহূর্তে পুলিশ হয়রানিমূলক মামলা করবে কিংবা চাঁদা দাবি করবে, এমন সুযোগ নেই। তারপরও এ বিষয় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করা হবে।

জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

আবদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে চালকদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আপাতত সড়ক থেকে চালকেরা উঠে গেছেন। যান চলাচল শুরু হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরার শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন, এক দিনে চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’

মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার আট বছর বয়সী শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন। বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে। শিশুটির সুস্থতার জন্য সেনাবাহিনী দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটির চিকিৎসা চলছে। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

সেনাবাহিনীর ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, শিশুটি আজ (বুধবার) চারবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছে। সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) দিয়ে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করা হয়েছে। তার রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি শিশুটির রক্তচাপ ৬০/৪০ মিমি পারদ কিংবা তার চেয়ে নিম্নমুখী।

সিএমএইচের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের চিকিৎসা পর্ষদ সর্বাধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতির মাধ্যমে শিশুটির জীবন রক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের এই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন শিশুটির মা। শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। শিশুর বোনের শ্বশুরকে সাত দিন, স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুর প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন মাগুরার আদালত।

গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিআইসিইউ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ