রংপুরের পীরগঞ্জে নিহত দেলোয়ারা বেগমের (৩০) বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধারের পর তাঁর চার বছর বয়সের মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে। আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়া গ্রামে মাটি খুঁড়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

থানা-পুলিশের ভাষ্য, নিহত শিশুটির নাম সায়মা বেগম। মাস দেড়েক আগে তাকে হত্যা করা হয়। পরে বাড়ির পাশে গোবরের গর্তে শিশুটির লাশ পুতে রাখা হয়িছিল। মা-মেয়েকে খুনের ঘটনায় আতিকুল ইসলাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি জড়িত। গতকাল শনিবার তাঁকে আটক করা হয়।

নিহত দেলোয়ারা বেগম নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বাসিন্দা। তাঁর বিয়ে হয়েছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে। পরে স্বামীর সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়। আতিকুল ইসলামের বাড়ি পীরগঞ্জের বড় বদনাপাড়া গ্রামে। দেলোয়ারা ও আতিকুল একত্রে গ্রামগঞ্জে গানবাজনা করে বেড়াতেন।

পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, গত শুক্রবার মাথাহীন দেলোয়ারা বেগমের লাশ একটি মরিচখেত থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় আতিকুল ইসলামকে আটক করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া স্বীকারোক্তিতে গতকাল বেলা তিনটার দিকে উদ্ধার করা হয় দেলোয়ারার বিচ্ছিন্ন মাথাসহ ব্যাগ ও একটি বক্স। গতকাল রাতে থানায় জিজ্ঞাসাবাদে আতিকুল জানান, দেলোয়ারা বেগমের চার বছরের শিশুসন্তানকেও তিনি হত্যা করে মাস দেড়েক আগে মাটি খুঁড়ে লাশ পুতে রেখেছেন। আতিকুলকে সঙ্গে নিয়ে আজ সকালে শিশুটি লাশ উদ্ধারে মাঠে নামে পুলিশ।

আরও পড়ুনপীরগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের শিকার সেই নারীর বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার১৪ ঘণ্টা আগে

ওসি এম এ ফারুক জানান, দেলোয়ারা বেগমকে হত্যার ঘটনায় পীরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক অনন্ত কুমার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে গত শুক্রবার রাতে থানায় মামলা করেন। আটক আতিকুলকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য আজ দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি এম এ ফারুক আরও জানান, মাস দেড়েক আগে ঠিক কী কারণে শিশু সায়মাকে এবং পরে শিশুর মা দেলোয়ারাকে হত্যা করা হয়েছে, সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। হত্যার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরের জাজিরায় আবারও সংঘর্ষ, মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শতাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

গতকাল রোববার দুপুরে জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে এক তরুণের হাতের কব্জিতে গুরুতর ক্ষত হয় এবং আরও একজন আহত হন।

জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুন ঢালী ও জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই দুই নেতা আত্মগোপনে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জসিম তালুকদার ও নুর আলম সরদার।

রোববার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। এ সময় নুর আলম সরদারের অনুসারীরা প্রতিপক্ষের ওপর ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে। এরপর উভয় পক্ষ ঘণ্টা-ব্যাপী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারামারি। পরে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সংঘর্ষের কিছু দৃশ্য স্থানীয় এক ব্যক্তির সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হয়, যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক পক্ষের সমর্থকরা বালতিতে করে ককটেল নিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে নিক্ষেপ করছেন। তাদের হাতে ছিল টেঁটা, রামদা, ছেনদা, বল্লম, ডাল-সুরকি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র।

সম্প্রতি জাজিরার বিলাশপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় খইয়ের মতো ককটেল বিস্ফোরণ দেশজুড়ে আলোচিত হয়। গত ৫ এপ্রিল সেখানে দুই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা এখনও আলোচনায় রয়েছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো ছাব্বিশপারা এলাকায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল আখন্দ বলেন, গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কিছু হাতবোমা বিস্ফোরিত হয় বলে জানতে পেরেছি। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ