সাবেক বিচারপতি আব্দুর রউফের মৃত্যুতে আইন উপদেষ্টার শোক
Published: 9th, February 2025 GMT
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অর্ন্তবর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
রোববার এক শোক বার্তায় আইন উপদেষ্টা এই শোক প্রকাশ করেন।
এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান আসিফ নজরুল।
রোববার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯১ বছর বয়সে মারা যান সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) ।
তিনি ১৯৯০ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের পঞ্চম প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন সাবেক এই বিচারপতি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট ব চ রপত
এছাড়াও পড়ুন:
লঞ্চযাত্রী মা-মেয়ের মরদেহ ভাসছিল মেঘনায়
স্বামীর সঙ্গে রাগ করে সন্তান নিয়ে ভাইয়ের কাছে যেতে ঢাকাগামী লঞ্চে উঠেছিলেন তানিয়া বেগম (২৬)। তাঁকে ফেরাতে একই লঞ্চে ওঠেন স্বামী ও শ্বশুর। মঙ্গলবার ভোরে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট-সংলগ্ন মেঘনায় তানিয়া ও তাঁর চার বছরের সন্তান রাবেয়ার মরদেহ পাওয়া গেছে। তাদের মৃত্যু কীভাবে হলো, তার কূলকিনারা পাচ্ছেন না কেউ। তবে লঞ্চটি ঢাকায় পৌঁছার পর স্বামী আবদুর রহমান ও শ্বশুর ইসমাইল হোসেন আত্মগোপন করেছেন।
সোমবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় মা-মেয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার হন। এটা হত্যা, নাকি আত্মহত্যা– তা এখনও স্পষ্ট নয়। তানিয়ার বাবা দুলাল হাওলাদার স্বামী, শ্বশুরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গোসাইরহাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। শরীয়তপুর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মা-মেয়ের মরদেহ বুধবার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার আরমানিক ইউনিয়নের ভঙ্গা গ্রামের দুলাল হাওলাদারের মেয়ে তানিয়া। ৫ বছর আগে হিজলা উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের ইন্দুরিয়া গ্রামের দিনমজুর আবদুর রহমানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। রাবেয়া তাদের একমাত্র সন্তান।
মেহেন্দীগঞ্জের ভাসানচর-ঢাকা রুটের সম্রাট-২ লঞ্চের কেবিনবয় কামাল হোসেন জানান, তাদের লঞ্চটি সোমবার বিকেলে ভাসানচর থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হিজলার গঙ্গাপুর নামক স্টেশনে পৌঁছায়। তখন এক নারী যাত্রী শিশুসহ ট্রলারে এসে লঞ্চে ওঠেন। তাৎক্ষণিক ২১০ নম্বর সিঙ্গেল কেবিন ভাড়া নেন। কিছুক্ষণ পর আরেকটি ট্রলারে তিনজন পুরুষ লঞ্চে ওঠেন। পরে তারা জানতে পারেন, নারী যাত্রীর নাম তানিয়া এবং পরে ওঠা তিনজনের মধ্যে একজন তার স্বামী ও আরেকজন শ্বশুর।
কামাল হোসেনের ভাষ্য, পুরুষ তিনজন লঞ্চে ওঠার পরই তানিয়া কেবিনে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। স্বামী-শ্বশুর দরজা খোলার জন্য অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ নিয়ে ২১০ নম্বর কেবিনের সামনে জটলা চলে। এর পর লঞ্চের কর্মচারীরা যে যার কাজে চলে যান। সেহরির সময়ে তানিয়ার স্বামী ও শ্বশুর এসে জানান, তানিয়া ও তাঁর সন্তানকে কেবিনের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে না। কর্মচারীরা গিয়ে দেখেন দরজা খোলা, কেবিনের মধ্যে একটি বোরকা ও ছোট হাতব্যাগ পড়ে আছে। লঞ্চের সর্বত্র খুঁজেও তাদের পাওয়া যায়নি। সকাল সাড়ে ৭টায় লঞ্চ ঢাকায় সদরঘাটে পৌঁছলে তানিয়ার ভাইও সেখানে উপস্থিত হন।
তানিয়ার ভাই আমির হোসাইন জানান, সম্রাট-২ লঞ্চের ২১০ নম্বর কেবিনে ওঠার বিষয়টি তানিয়া ফোনে তাঁকে জানিয়েছিলেন। সকালে লঞ্চঘাটে গিয়ে তানিয়াকে কল দিলে ফোন বন্ধ পান। কিছুক্ষণ পর লঞ্চ সদরঘাটে পৌঁছলে তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও জয়নাল লঞ্চ থেকে নেমে এলোমেলো কথা বলে কৌশলে পালিয়ে যান।
সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে তানিয়ার বাবা দুলাল হাওলাদার মঙ্গলবার বিকেলে হিজলা থানায় জিডি করতে যান। তখন ডিউটি অফিসার দুটি মরদেহের ছবি দেখালে সেটা তার মেয়ে ও নাতনির বলে শনাক্ত করেন।
গোসাইরহাটের নরসিংহপুর নৌ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ইয়াসুনুল হক বলেন, গোসাইরহাট-সংলগ্ন মেঘনায় জেলেরা ভাসমান অবস্থায় একটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেন। সেটি উদ্ধার করতে গিয়ে তীরে ভাটায় কাদা-বালুর মধ্যে একজন নারীর মরদেহ পাওয়া যায়। সুরতহাল রিপোর্টে দুটি মরদেহে গুরুতর কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। নৌপুলিশ মামলাটি তদন্ত করবে।
তানিয়ার স্বামী আবদুর রহমানের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। আর শ্বশুর ইউসুফ মাঝির ফোন ধরেন তাঁর স্ত্রী বকুল বেগম। তিনি দাবি করেন, তাদের পুত্রবধূ ইচ্ছেমতো বাবার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি ছিল।