তিন বন্দির মুক্তির পর ১৮৩ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিলো ইসরায়েল
Published: 9th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস আরও তিন জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। বিনিময়ে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল আরও ১৮৩ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা।
গাজা থেকে মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলিরা বন্দিরা হলেন- এলি শারাবি, ওহাদ বেন আমি ও অর লেভি। তাদের শনিবার সকালে রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তারা ইসরায়েলে তাদের পরিবারের সাথে একত্রিত হন। অন্যদিকে, ইসরায়েলি কারাগার থেকে মক্তির পর ফিরে আসা ফিলিস্তিনিদের নিয়ে পশ্চিম তীরের রামাল্লায় উৎসব চলছে।
তাদের প্রতিনিধিরা বলেছেন, তাদের সবার স্বাস্থ্য সেবা প্রয়োজন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত বা সুনির্দিষ্ট আর কিছু বলা হয়নি। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ২১ জন ইসরায়েলি বন্দি ও ৫৬৬ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছেন।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত ৩৩ জন বন্দি ও এক হাজার ৯০০ জন ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ইসরায়েল অবশ্য জানিয়েছে, ৩৩ জন বন্দির মধ্যে আট জন মারা গেছে।
শনিবার শারাবি, বেন আমি ও লেভিকে মধ্য গাজায় দেইর আল-বালাহ এলাকায় রেড ক্রসের কাছে তুলে দেওয়া হয়। একজন হামাস কর্মকর্তা ও রেড ক্রস প্রতিনিধি কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে বন্দি হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ করেন। এরপর বন্দিদের মঞ্চে আনা হয়। এ সময় সশস্ত্র ব্যক্তিরা তাদের ঘিরে ছিলেন।
গত মাসে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এটি পঞ্চম বন্দি বিনিময়।
এদিকে মুক্তি কার্যক্রমকে ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কথা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি)। সংস্থাটি বলেছে, “আমরা মধ্যস্থতাকারীসহ সব পক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি যাতে করে সামনে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি মর্যাদাকর ও গোপনীয় হয়”।
পরে ইসরায়েল ১৮৩ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়। সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ৭০ জন যাবজ্জীবন কিংবা দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন। আর ১১১ জনকে গাজা যুদ্ধের সময় আটক করা হয়েছিল। বাকী সাতজনকে তখনও পাঠানো হয়নি।
ফিলিস্তিন প্রিজনার্স ক্লাব এএফপিকে জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে সাতজনকে রামাল্লার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়া সব বন্দিকেই স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা দিতে হবে।
মুক্তি পাওয়াদের মধ্যে পশ্চিম তীরে হামাসের সুপরিচিত নেতা ৬১ বছর বয়সী জামাল আল তাউইলও রয়েছেন। বিভিন্ন সময় তিনি প্রায় ১৯ বছর ইসরায়েলের কারাগারে কাটিয়েছেন। তার কন্যা বুশরা আল-তাউইল গত জানুয়ারিতে মুক্তি পেয়েছেন। তাদের সাম্প্রতিককালে কোনও অভিযোগ ছাড়াই আটক করা হয়েছিল।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: জন ফ ল স ত ন ইসর য় ল বন দ ক
এছাড়াও পড়ুন:
ফুল ভাসিয়ে শুরু হলো বিজু উৎসব, সুন্দর পৃথিবীর প্রার্থনা
পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে আর নতুন বছরকে বরণ করে নিতে চাকমা সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী বিজু উৎসব আজ শনিবার শুরু হয়েছে; পাশাপাশি শুরু হয়েছে তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু উৎসব। উৎসবের প্রথম দিনে নদী, ছড়া, ঝরনাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুল ভাসিয়ে সুন্দর পৃথিবীর জন্য মঙ্গল কামনা করেছেন নারী, পুরুষ আর শিশুরা। পাহাড়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা আগামী কয়েক দিন নানা নামে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায়ের উৎসব উদ্যাপন করবেন।
খাগড়াছড়িআজ ভোর থেকে জেলার নদী, ছড়া, ঝরনাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে ‘ফুল বিজু’ শুরু হয়। ফুল ভাসিয়ে সুন্দর পৃথিবীর জন্য প্রার্থনা করেন চাকমা নারী-পুরুষ ও শিশুরা। নারীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন-হাদি ও পুরুষেরা ধুতি পরে উৎসবে যোগ দেন।
ভোরে পানছড়ি উপজেলার রাবার ড্যাম এলাকায় চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসাতে ভিড় করেন স্থানীয় চাকমা জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা। তাঁদেরই একজন প্রবীণ মালতী দেবী চাকমা। চার কিলোমিটার দূরে রাঙাপানিছড়া এলাকা থেকে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘একসময় সন্তানদের নিয়ে ফুল ভাসাতে আসতাম। এখন বয়স বাড়ায় কষ্ট হলেও নাতি-নাতনিদের সঙ্গে এসেছি মনের শান্তির জন্য। এবার প্রাণভরে প্রার্থনা করলাম, সবাই মিলেমিশে যেন ভালো থাকতে পারি, পৃথিবী যেন শান্তি থাকে।’
ফুল ভাসাতে আসা এক তরুণী মেমোরি চাকমা বলেন, ‘আমরা বন্ধুরা মিলে চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসিয়ে আগামী দিনের সুখশান্তি কামনা করেছি। এখানে শত শত নারী-পুরুষ উৎসবে যোগ দিয়েছেন। আমি ও সারা বছর অপেক্ষায় থাকি এ দিনটার জন্য।’
উৎসব দেখতে রাবার ড্যাম এলাকাটিতে ভিড় জমান সমতলের লোকজনও। রাজশাহী থেকে এ উৎসব দেখতে আসা মকবুল হোসেন ও সালমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৭ সালে একবার রাঙামাটিতে ফুল ভাসানো উৎসব দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। এবার এসে আবারও মুগ্ধ হলাম।’
সরেজমিনে উল্টাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান সুব্রত চাকমার সঙ্গেও কথা হয়। তিনি বলেন, বিজু আদিকাল থেকেই চলে আসছে। বিজু মানে আনন্দ, হইহুল্লোড়, বিজু মানে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো। বিজু মানে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি করা।
বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন চাকমারা বিজু পালন করেন। আজ ফুল বিজু, ১৩ এপ্রিল রোববার মূল বিজু, ১৪ এপ্রিল নু’অ বজর বা নতুন বছর, আর পয়লা বৈশাখের পর দিন পালিত হয় ‘গোজ্যেপোজ্যে দিন’ হিসেবে। উৎসবের প্রথম দিনে পূজা-অর্চনা ও বাড়িঘর পরিষ্কার করে সাজানো হয়। দ্বিতীয় দিনে অতিথি আপ্যায়ন ও খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়। তৃতীয় দিনে হাঁস-মুরগি ও পশুপাখিদের খাবার দেওয়া, গরাইয়া নৃত্য ও বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেওয়া হয়।
কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে ফুল বিজুকে বরণ করছে এক শিশু। আজ সকালে রাঙামাটি শহরের কেরানি পার্কের দক্ষিণ এলাকায়