মেঝেতে স্ত্রীর গলাকাটা লাশ, ঝুলছিলেন স্বামী
Published: 9th, February 2025 GMT
গাজীপুরে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর সোহাগ হোসেন (২৫) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস নিয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে মহানগরীর কোনাবাড়ী মেট্রোপলিটন থানার বাইমাইল এলাকার বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রতিবেশীদের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী মৌ আক্তারকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন সোহাগ।
নিহত সোহাগ হোসেন সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ উপজেলার ধাপ তেঁতুলিয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। তাঁর স্ত্রী মৌ আক্তার বৃষ্টি (২০) একই জেলার সান্দুরিয়া গ্রামের মোবারক হোসেনের মেয়ে। এ দম্পতি বাইমাইল মধ্যপাড়া কাদের মার্কেট এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন।
মৌ আক্তার বৃষ্টির চাচা রতন মিয়ার ভাষ্য, দুই বছর আগে সোহাগের সঙ্গে মৌয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাঁর ভাতিজি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তাঁর স্বামী সোহাগ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) ব্র্যাকের কোনাবাড়ী শাখার অ্যাকাউন্টস অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চলতি মাসের ১ তারিখে তারা বাইমাইলের ভাড়া বাসায় ওঠেন। তারা কেন এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা স্বজন বুঝতে পারছেন না।
বাড়ির মালিকের ছেলে দেওয়ান মোহাম্মদ রাসেল বলেন, সকাল থেকে সোহাগ-মৌ দম্পতির ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। অন্য ভাড়াটিয়ারা অনেকবার ডাকাডাকি করলেও দরজা খোলেননি। বিকেলে আবারও দরজার সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেন তারা। এ সময় দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখে ৯৯৯-এ কল দেওয়া হয়। পুলিশ বিকেল ৪টার দিকে এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। এ সময় মেঝেতে মৌয়ের গলাকাটা লাশ দেখতে পাওয়া যায়। গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল তাঁর স্বামী সোহাগের মরদেহ।
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, ৯৯৯-এ খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যা করেন। ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, তারা অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন তারা’
আজ সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, অতি দ্রুত নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করবে সরকার। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। জনগণও প্রত্যাশা করছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে সার্বিক বিষয়ে দলের উদ্বেগের বিষয়গুলো প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরা হবে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে এটা বিএনপির দায়িত্ব। বিএনপি সেই দায়িত্ব পালন করেছে।’
দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর দায় সরকার এড়াতে পারে না বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার দায় সরকার এড়াতে পারে না। কারণ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন বাহিনীর সামনেই একের পর এক ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট বিপন্ন হয়েছে। ফ্যাসিবাদীরা এসব বিষয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছে।
‘আমরা যেটা বারবার বলে এসেছি, এ সরকার অন্তর্বর্তী কালীন সরকার। সুতরাং দ্রুত নির্বাচনের জন্য আমরা তাদের আবারও তাগাদা দিয়েছি’ উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি জানান, তারা ন্যূনতম সংস্কারের ক্ষেত্রে আলোচনার পর দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে বলেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা দ্রব্যমূল্যের ব্যাপারে কথা বলেছি। এ সরকারের অন্যতম বড় ব্যর্থতা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। তারা কাজ করছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’ তিনি বলেন, বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি এসেছে। বিএনপি বলেছে, বিশেষ অভিযান ‘ডেভিল হান্টে’ যেন কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে কোনোভাবেই একমত হব না। আগে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। এর আগে কোনো নির্বাচন হবে না। এটা আগেও পরিষ্কার করে বলেছি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও সালাহউদ্দিন আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।