Samakal:
2025-04-12@09:05:52 GMT

‘শিঙা-তাবিজ এহন আর কেউ নেয় না’

Published: 9th, February 2025 GMT

‘শিঙা-তাবিজ এহন আর কেউ নেয় না’

‘এ… সাপ খেলা দেখাই, শিঙা লাগাই, দাঁতের পুক ফালাই, বাতের ব্যথা সারাই...’ কিংবা ‘লেইস-ফিতা, চুড়ি কিনবেন… লেইস-ফিতা…’ সুরে সুরে ডাকতেন বেদে নারীরা। দলবেঁধে আসা নানা বয়সী মানুষ কিনতেন তাদের কাছ থেকে। সেই দিন অতীত হয়েছে বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের। তাদেরই একটি দল বাস করছে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার তালতলায়। গ্রামটি উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের ইছামতী নদীর তীরে। নদীতেই ছোট ছোট নৌকায় বাস করছে অন্তত ৬০টি পরিবার। 

বৃহস্পতিবার সিরাজদীখান বাজারে ঝোলা কাঁধে বের হয়েছিলেন রাবেয়া বেগম (৫৭) নামে এক বেদে নারী। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছ থেইক্কা মানুষ আগে চুড়ি-ফিতা কিনলেও এখন বাড়ির বউ-ঝিরা হাটবাজারে গিয়া কিনে। এ ছাড়া যেহানে-সেহানে ডাক্তার থাকায় আমাগো কাছ থাইক্যা শিঙ্গা ও তাবিজ কেউ নেয় না।’ গ্রামেগঞ্জে ঘুরেও তাদের কোনো কাজ জোটে না। বাধ্য হয়ে মানুষের কাছে হাত পাতেন। এভাবেই যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালাতে হয় রাবেয়াদের। 

এসব পরিবারের দিন এখন কাটছে অতিকষ্টে। ডিশ অ্যান্টেনা-ইন্টারনেটের যুগে বেদেদের কাছ থেকে সাপ খেলা দেখায় আগ্রহ নেই কারও। অথচ এক সময় বেদে নারী-পুরুষ এলে গ্রামজুড়ে হুল্লোড় পড়ে যেত। তাদের অনেকে ঝুড়িভর্তি করে নিয়ে আসতেন লেইস-ফিতা, চুড়ি, আয়না ও নানা প্রসাধনসামগ্রী। এখন গ্রামের বাজারে গড়ে উঠেছে দোকানপাট। যে কারণে বেদে নারীদের কাছ থেকে কেউ কিনতে চান না। 

বংশপরম্পরায় ইছামতী নদীর তালতলায় বসবাস করে আসছে বেদে পরিবারগুলো। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেছে, ১৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে আরাকানরাজ বল্লার সঙ্গে পালিয়ে বেদেরা মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে আসে। তখন ইছামতীর পুরো যৌবন ছিল। মাছ পাওয়া যেত অনেক, চারপাশ ছিল বিশাল গাছের ছায়ায় ঢাকা। প্রচুর পাখি পাওয়া যেত, যা শিকার করে বেদেরা বিক্রি করত। কালের আবর্তে এই নদীর নানা জায়গায় এখন চর।

৭০ বছর বয়সী মনোয়ারা বেগমের স্মৃতিতে সোনালি দিনের কথা ঝিলিক দেয়। পূর্বপুরুষের মতো তাঁর জন্মও নৌকায়। খুব ছোটবেলায় পরিবারের সঙ্গে গ্রাম থেকে গ্রামে, গঞ্জ থেকে গঞ্জে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সেখানে ফেরি করে বিক্রি করেছেন চুড়ি-ফিতা ও তাবিজ। শিঙা লাগানো ও সাপখেলা দেখিয়েই শৈশব-কৈশোর কেটেছে মনোয়ারার। এখন তাদের তেমন উপার্জন নেই বললেই চলে। মনোয়ারা বলেন, বিভিন্ন গ্রামে যে স্বল্প আয়োজনে মেলা হয়, সেখানেই ছুটে যান। মাটির তৈরি সামগ্রী, চুড়ি-ফিতা-নেইলপালিশ নিয়ে যান। এসব বিক্রি করেই যে আয় হয়, এ দিয়েই কষ্টেসৃষ্টে সংসার চালাতে হয়। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এখন মাছ ধরেন। এতেও কিছুটা আয় হয়। যদিও নদীতে তেমন মাছ নেই। 

তালতলা বেদেপল্লির সর্দার মিনহাজ উদ্দিনের ভাষ্য, তাদের অনেকের নাম ভোটার তালিকায় উঠেছে। এরপরও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা। দেশের অন্য নাগরিকদের মতো সমান সুযোগ-সুবিধার দাবি করেন তিনি। 

সিরাজদীখানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা আক্তার বলেন, বেদেদের অনেকেই ভোটার হচ্ছে। এতে করে তাদের পরিচয় নির্দিষ্ট হচ্ছে। এ সম্প্রদায়ের সদস্যদেরও চিহ্নিত করা যায়। এতে তাদের মধ্যে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, গর্ভকালীন ভাতাসহ নাগরিক সুবিধা দেওয়া সহজ হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সরকারি সব সুযোগ-সুবিধাই তাদের দেওয়া হচ্ছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটে নবম গ্রেডে চাকরির সুযোগ

নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটে রাজস্ব খাতভুক্ত স্থায়ী পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশি নাগরিকেরা নির্ধারিত ফরমে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। 

অনলাইন ছাড়া কোনো আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না। অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও পরীক্ষার ফি জমাদান শুরুর ১৫ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০২৪ সালের ২৩ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কোটা নির্ধারিত হবে। 

নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট এ নিয়োগে নারী প্রার্থীদের আবেদন করার জন্য উৎসাহিত করেছে। নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটের নোটিশ বোর্ডে আবেদনের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। প্রবেশপত্র প্রাপ্তির বিষয়টি অথবা প্রার্থীর মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে যথাসময়ে জানানো হবে।

পদের বিবরণ ও বিস্তারিত

১. বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা

পদসংখ্যা: ১৫

গ্রেড: নবম

বেতন স্কেল: ২২,০০০-৫৩,০৬০ টাকা

আবেদনের বয়স: ৩২ বছর

আবেদনে শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে (ক) পুরকৌশল, তড়িৎকৌশল, যন্ত্রকৌশল, পানিসম্পদ কৌশল, কৃষি ইঞ্জিনিয়ারিং, রিভার ইঞ্জিনিয়ারিং, হাইড্রলিকস, হাইড্রলজি, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি; অথবা (খ) পদার্থবিদ্যা, ফলিত পদার্থবিদ্যা, গণিত, ফলিত গণিত, মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতকোত্তর বা সমমানের ডিগ্রি বা অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রিসহ অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতকোত্তর বা সমমানের ডিগ্রি।

আবেদন ফি

পরীক্ষার ফি বাবদ ২২৩ টাকা আবেদনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জমা দিতে হবে আবেদনকারীদের।

আবেদনের শেষ সময়

আবেদনপত্র জমার শেষ তারিখ ১৫ মে ২০২৫, বিকেল ৫টা।

আবেদনের বিস্তারিত জানতে ও দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ