বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের অনুরোধেও শনিবার অনুশীলনে যোগ দেননি বিদ্রোহ করা ১৮ নারী ফুটবলার। দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুরোধে সাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল বলেই মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী ফুটবলার।
কোচ পিটার বাটলার যে আগের মতো বাজে আচরণ করবেন না, তার গ্যারান্টি নাকি ফেডারেশন থেকে দেওয়া হয়নি– এমন দাবিই গতকাল সমকালের কাছে তুলে ধরেছেন ওই ফুটবলার, ‘ধরেন আমরা ট্রেনিংয়ে গেলাম। আমরা তো ছয়-সাত মাস ধরে তাঁর (বাটলার) সঙ্গে ছিলাম। আমরা তো জানি তাঁর চরিত্র কেমন। সবকিছু ভুলে গেলাম, মেনে নিলাম। গ্যারান্টি কি আছে, তিনি আমাদের সঙ্গে এমন করবেন না? গ্যারান্টি তো নেই। আমাদের এমন কমিটমেন্ট দিতে হবে। আমাদের সঙ্গে ভালোভাবে বসে এটার নিশ্চয়তা দিতে হবে, তিনি এগুলো করবেন না। আমাদের সঙ্গে তো তা করা হয়নি। তাঁর (সভাপতি তাবিথ আউয়াল) সম্মানের দিক দিয়ে যদি বিবেচনা করি, তাহলে আমাদের ট্রেনিংয়ে যাওয়া উচিত ছিল। আমাদের ভালোর দিক বিবেচনা করলে ট্রেনিংয়ে যাওয়াটা খারাপ। এখন আমরা কোথায় যাব? আমরা এখন সমুদ্রে ভাসছি।’
ওই নারী ফুটবলারের দাবি, তারা অনুশীলনে যোগ দিলে হেরে যাবেন, ‘আমরা যদি অনুশীলনে যাই, তাহলে তো বিচার সমান হচ্ছে না। আমাদের সমস্যাগুলো তো আমরা বলেছি। এখন সভাপতি স্যারের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছি।’
২৬ ফেব্রুয়ারি ও ২ মার্চ আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে আন্দোলন করা মেয়েদের বিবেচনা করা হচ্ছে না। বিষয়টি দৃষ্টিপাত করলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ফুটবলারের জবাব, ‘তারা আমাদের চাচ্ছে না, নতুন টিম গঠন করবে। নতুনদের সুযোগ দেওয়ার দরকার মনে করছে তারা। এসব বিষয় নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। তারা পরিকল্পনা করছে ফুটবলের ভালোর জন্য। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। আমাদের গুরুত্ব যদি দেওয়া হতো, তাহলে অনেক আগেই দেওয়া হতো। এই সমস্যা শুধু আজ-কালের না, এটা অনেক আগের। স্যার অনুরোধ করেছেন আমাদের ট্রেনিংয়ে যেতে, কিন্তু একটা তো সমাধান প্রয়োজন।’
শেষ পর্যন্ত চুক্তিতে না নেওয়া এবং আমিরাত সফরের দলে না রাখলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যাওয়ার বিষয়টিও সামনে চলে এসেছে। একুশে পদকের জন্য মনোনীত হওয়া নারী ফুটবল দল সেই কাজটি করবেন না বলে জানান দলের অন্যতম সেরা এ তারকা, ‘বাফুফে যদি ভালো একটা সমাধান দেয়, তাহলে উচ্চ পর্যায়ে কেন যাব? আমরা বাফুফের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তাদের বিরুদ্ধে যাব না। আমরা তো বাফুফের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি, সব বলেছি কোচের বিরুদ্ধে। আত্মসম্মানের জন্য, ফুটবলের ভালোর জন্য আন্দোলন করছি। কোনো কারণ ছাড়াই ১৮ জন মেয়ে তো কোচের বিরুদ্ধে যেত না।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল র করব ন ন আম দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বিসিবিতে দুদকের অভিযান, মুজিববর্ষের আয়োজনে ২০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন সদস্য একটি অভিযান পরিচালনা করেছেন। অভিযান শেষে দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছেন।
বিসিবিতে প্রায় দেড় ঘণ্টার অভিযান পরিচালনার পর সংবাদ সম্মেলনে দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন জানান, তারা তিনটি অভিযোগ পাওয়ায় এই অভিযান পরিচালনা করেছেন। এর মধ্যে দুটি অভিযোগ হলো- বিপিএলের প্রথম ১০ আসরের টিকেট বিক্রির আয়ে অসঙ্গতি। অন্যটি হলো মুজিব শতবর্ষ আয়োজনে বিসিবির অর্থ আত্মসাত।
এছাড়া দুদকের প্রধান কার্যালয়ের চিঠিতে জানানো হয়, বিসিবি’র বিভিন্ন ক্রিকেট লিগের বাছাই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের জন্য টিম পাঠানো হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন পরে ২০২০-২১ সালে বিসিবির আয়োজিত মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আয়-ব্যয়ে গড়মিল আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষের আয়োজনে আয়-ব্যয়ে অস্বাভাবিকতা আছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ড-পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। যা যাচাইবাছাই করে এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রতিবেদন দাখিল করবো। পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কমিশন।’
মুজিববর্ষ আয়োজনের অসঙ্গতির প্রসঙ্গে আল-আমিন বলেন, ‘কনসার্টসহ বিসিবির সব আয়োজনে ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। তবে আসলে খরচ হয়েছে ৭ কোটি টাকার মতো। এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকার কিছু একটা হয়েছে, এমন অভিযোগ পেয়েছি আমরা। টিকেট বিক্রির ২ কোটি টাকাও দেখানো হয়নি। অর্থ আত্মসাতের পরিমাণ তাই বাড়তে পারে। আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। বিসিবির অর্থ বিভাগে কাগজপত্র পেয়েছি। সব কাগজপত্র হাতে পেলে সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারবো।’
বিপিএলের টিকেট বিক্রির আয়ে অস্বাভাবিকতা সম্পর্কে দুদকের এই সহকারী পরিচালক জানান, বিসিবি একাদশ আসরে ১৩ কোটি টাকা টিকিট বিক্রি থেকে আয় করেছে। যেখানে আগের আট বছরে আয় ছিল ১৫ কোটি। এখানে অস্বাভাবিকতা আছে। বিস্তারিত যাচাই করলেই বোঝা যাবে কী অসঙ্গতি এখানে আছে।
বিসিবির তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ২০১৪-১৫ মৌসুম থেকে ক্লাব নিবন্ধন ফি ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়। এতে টুর্নামেন্টে দলের অংশগ্রহণ কমে। গত ক’বছরে ৫টির বেশি দল তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে অংশ নেয়নি। অর্থ নিয়ে এই কারসাজির অভিযোগ পুরনো। দুদক জানিয়েছে, আগে ২-৩ বা সর্বোচ্চ ৪ দলের লিগ হতো। এখানে হয়তো কোনো কারণ আছে। কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, বোর্ডের কোনো প্রভাব ছিল কিনা দেখা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, দুদককে তাদের অনুসন্ধানের বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।