Samakal:
2025-04-15@09:32:29 GMT

৩৫ জনের চুক্তিতে নেই সাবিনারা

Published: 9th, February 2025 GMT

৩৫ জনের চুক্তিতে নেই সাবিনারা

বৃহস্পতিবার বিশেষ কমিটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর সেদিন রাতেই আচমকা ফেডারেশনে যান বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। কোচ পিটার বাটলার ও নারী ফুটবলারদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব মেটাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তাবিথের উপস্থিতিতে সবাই ইতিবাচক সমাধানই ধরে নিয়েছিলেন। বিদ্রোহ করা ১৮ ফুটবলারের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলা বাফুফে সভাপতি সব ভুলে অনুশীলনে যোগ দিতে বলেন সাবিনা খাতুন-ঋতুপর্ণা চাকমাদের। কিন্তু নিজেদের দাবির পক্ষে অনঢ় থাকা মেয়েরা শনিবার বাটলারের অধীনে অনুশীলনে যোগ দেননি। তাতে সংকট নিরসনের আভাসও মিলছে না। 

এই অবস্থায় বিদ্রোহী মেয়েদেরও ক্যাম্প থেকে বের করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে প্ল্যান ‘বি’ বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। নতুন করে ৩৫ জন নারী ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে বাফুফে। সেই তালিকায় নেই আন্দোলন করা ১৮ জনের কেউই। রোববার ১২ জনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করবে বাফুফে। পর্যায়ক্রমে বাকি ২৩ জনের সঙ্গে এই সপ্তাহের মধ্যেই চুক্তি সম্পন্ন করা হবে বলে গতকাল সমকালকে জানিয়েছে বাফুফের বিশ্বস্ত একটি সূত্র, ‘সভাপতির কথা হচ্ছে মেয়েদের তো বোঝানো হয়েছে। তারা সেটা গ্রহণ করেনি। আমিও তাদের বলেছি, তারা নেয়নি। তাই এখন যারা ট্রেনিং করছে, তাদের মধ্য থেকে স্কোয়াড চূড়ান্ত করব। ওদের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলব। প্রথম যে ১২ জন অনুশীলন শুরু করেছে, তাদের দিয়ে শুরু করব। মোট ৩৫ জনের সঙ্গে চুক্তি করব আমরা। সেখানে আপাতত ওরা (বিদ্রোহী) নেই।’

নতুন করে ৩৫ জনের সঙ্গে চুক্তি করলেও বাফুফে ভবনের আবাসিক ক্যাম্পে থাকা আন্দোলনরত মেয়েদের তাড়িয়ে না দিয়ে কৌশল অবলম্বন করতে যাচ্ছেন কর্তারা। ‘চুক্তি না হলে নিয়মমতো মেয়েরা ক্যাম্পে থাকতে পারে না; কিন্তু আমরা তাদের বের করে দিচ্ছি না। আমরা তাদের সুযোগও দিচ্ছি, প্লাস সম্মানও দিচ্ছি। আমাদের ধারণা, যখন চুক্তি হয়ে যাবে, স্কোয়াড ঘোষণা হবে, তখন ওরা নিজেরাই চলে যাবে।’ 

এই কর্মকর্তার মতো সরাসরি কিছু না বললেও সভাপতি তাবিথ আউয়ালের কথাতেও অনেকটা স্পষ্ট সাবিনা খাতুনরা চুক্তিতে থাকছেন না। অনুরোধ করার পরও মেয়েদের অনুশীলনে যোগ না দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাফুফে সভাপতি গতকাল সমকালকে জানান, ‘বর্তমান চ্যালেঞ্জ উতরানোর জন্য আমরা অবশ্যই ধৈর্যশীল ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেব। আবার এই মুহূর্তে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে যেসব মেয়ে অনুশীলন করছে, তাদের নিয়েই ভাবছি।’ 

তবে ৩৫ জনের তালিকায় নাম না থাকলেও সাবিনাদের জন্য চুক্তিতে ঢোকার দরজা একেবারে বন্ধ করছে না বাফুফে। সব ভুলে অনুশীলনে যোগ দিলে আন্দোলন করা মেয়েরাও চুক্তিতে আসবেন বলে জানিয়েছে ওই সূত্রটি। সে ক্ষেত্রে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই অনুশীলনে ফিরতে হবে সাবিনা-মনিকাদের। কারণ এর মধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করবেন বাটলার। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই দলে বিদ্রোহীদের থাকার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ।

পিটার বাটলারকে সরিয়ে দিলেই মেয়েরা অনুশীলনে ফিরবেন। দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্রিটিশ কোচকে বাদ দেবে না বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে বাটলারকে ডেকে তাবিথ কড়া ভাষায় কথা শুনিয়েছেন বলে জানা গেছে। বাটলারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে অনুশীলন করছেন না মেয়েরা, সেগুলো নাকি প্রমাণিত হয়নি বিশেষ কমিটির তদন্তে। ঋতুপর্ণা চাকমা-মারিয়া মান্ডারা চাচ্ছেন লিখিত প্রতিশ্রুতি। যেখানে লেখা থাকবে বাটলার ভবিষ্যতে মেয়েদের নিয়ে কোনো বাজে মন্তব্য করবেন না। এই বিষয়টি করা যায় কিনা– প্রশ্নে বাফুফের ওই কর্মকর্তার জবাব এমন, ‘কিরণ (নারী উইংয়ের প্রধান) আপা ওদের বলেছে, তোমরা অনুশীলন শুরু করো, আমি প্রয়োজন হলে পর্যবেক্ষক রাখব, সে এক মাস তোমাদের ট্রেনিং সেশন পর্যবেক্ষণ করবে। তোমাদের সঙ্গে বাটলার কোনো খারাপ ব্যবহার করে কিনা, তা দেখবে। যদি করে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেব। সবার সঙ্গে আলাদা করে সভাপতি পর্যন্ত কথা বলেছেন। এর পর আর কী করার আছে আমাদের?’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ব থ আওয় ল ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েটের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ অন্যান্য ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তাঁরা প্রতিবাদী মানববন্ধন করেছেন। লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বুয়েটের মেকানিক্যাল বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আল ফারাবি ও আরমান হাসান লিখিত বিবৃতি পড়েন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বিএনপিপন্থী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্ররাজনীতিমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবির বিপরীতে শিক্ষাঙ্গনের অভ্যন্তরে এমন বর্বরোচিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে না জানাতেই তাঁরা দেখতে পান, ঘটনার প্রায় দুই মাস পর কুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতায় ২২ জন নিরপরাধ, আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত ও মিথ্যা।

কুয়েট প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, এই হামলার প্রকৃত তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া, অপরাধীদের যথাযথভাবে চিহ্নিত না করে কীভাবে আন্দোলনরত নিরীহ শিক্ষার্থীদের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো, তা বিস্ময়ের উদ্রেক করে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কুয়েট প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ। তাঁরা স্পষ্ট করে বলতে চান, এই প্রক্রিয়া কুয়েট প্রশাসন ও তদন্ত কমিটির নিষ্ক্রিয়তা, ব্যর্থতা ও পক্ষপাতিত্বের প্রতিফলন।

আরও পড়ুনকুয়েটের ভিসির পদত্যাগের এক দফা ঘোষণা, হলগুলোর তালা ভাঙছেন আন্দোলনকারীরা১ ঘণ্টা আগে

বিবৃতিতে বলা হয়, তাঁরা (বুয়েট শিক্ষার্থীরা) জানতে পেরেছেন, আন্দোলন দমন করার লক্ষ্যে কুয়েট প্রশাসন একের পর এক দমনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। যেমন হল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগে অসম্মতি জানালে পানি, বিদ্যুৎ, ওয়াইফাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে স্বৈরাচারী কায়দায় হল ত্যাগে বাধ্য করা হয়। ঈদের সময় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। অথচ বহিরাগতদের অনায়াসে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হয়। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ন্যায়সংগত দাবি নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দোষারোপ করে অপপ্রচার চালানো হয়। হলে প্রবেশ করতে না দিয়ে শিক্ষার্থীদের রাতে খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় থাকতে বাধ্য করে নিকৃষ্টতম নজির স্থাপন করেছে কুয়েট প্রশাসন। এটি নিঃসন্দেহে একটি নিন্দনীয় আচরণ।

বিবৃতিতে বলা হয়, তাঁরা (বুয়েট শিক্ষার্থীরা) মনে করেন, এই মামলা শুধু কুয়েটের ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নয়, বরং এটি দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক অধিকার হরণের প্রচেষ্টা। আজ যদি তাঁরা চুপ থাকেন, কাল হয়তো এই ধরনের প্রহসনের শিকার হতে হবে আরও অনেক শিক্ষার্থীকে। রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীদের দমন করার মাধ্যমে জুলাই আন্দোলনের ‘স্পিরিট’ নষ্ট করা সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য কল্যাণকর কিছু বয়ে আনবে না।

আরও পড়ুনকুয়েটে প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে চলছে সিন্ডিকেট সভা, বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ–মিছিল১৮ ঘণ্টা আগে

কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পাশে থাকার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, তাঁরা (বুয়েট শিক্ষার্থীরা) জানতে পেরেছেন, গতকাল সোমবার রাতে কুয়েটের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিরাপদ ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারী কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে বহিষ্কার করা কোনোক্রমেই কাম্য নয়। বুয়েট শিক্ষার্থীরা কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পাশে আছেন। এই মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার, প্রকৃত দোষীদের বিচার, কুয়েট ভিসি ও কুয়েট প্রশাসনের বিতর্কিত-নেতিবাচক ভূমিকার জবাবদিহি নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। বুয়েট শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট করে জানাতে চান, তাঁরা এই প্রহসনের বিরুদ্ধে। তাঁরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তাঁরা কুয়েটের শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের পাশে আছেন। অনতিবিলম্বে কুয়েট প্রশাসন যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এ দেশের ছাত্রসমাজ কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছেন তাঁরা।

আরও পড়ুনপয়লা বৈশাখেও হল খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান, সন্ধ্যায় সিন্ডিকেট সভা১৪ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ