গ্রেপ্তার আতঙ্কে গাজীপুরের দাক্ষিনখান পুরুষ শূন্য
Published: 9th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মারধর ঘটনার পর গাজীপুর মহানগরীর ৩১নং ওয়ার্ডের ধীরাশ্রম ও দাক্ষিনখান গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। গাজীপুরসহ সারাদেশে অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরুর খবরে ওই এলাকায় বয়স্ক নারীরা ছাড়া অন্য নারীরাও বাড়িঘর ত্যাগ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ির সোনালী রঙের প্রধান ফটকটি বন্ধ রয়েছে। ফটকের সামনে কাঁচ ভাঙা টুকরা ও কয়েকটি সম্মাননা স্মারক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। রাস্তার দুই পাশে অসংখ্য লাঠিসোটা, জুতা ও জামাকাপড় পড়ে আছে। রাস্তাটি দিয়ে লোকজনের চলাফেরা নেই বললেই চলে। আশপাশের এলাকার অনেকেই ভিন্ন পথ দিয়ে চলাচল করছেন।
আশপাশের বাড়িঘরগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাড়িতে কোনো পুরুষ লোক নেই। শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্তৃক বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পর সবাই পালিয়ে গেছে। কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কেবল বয়স্ক নারীরা বাড়িতে। পুরুষ লোকগুলো তাদের স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। সবার মাঝে একটি ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ির সামনের মসজিদটিও তালাবদ্ধ। আশপাশের পরিবেশ নীরব ও নিস্তব্ধ। ধীরাশ্রম—টঙ্গী সড়কের দুই পাশে ঘটনাস্থলের কাছে সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, রাতের বেলা ছাত্রদের নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। কেউ এগিয়ে গিয়ে ছাত্রদের রক্ষা করতে গেলে তাদেরও নাজেহাল হতে হয়েছে। ছাত্ররা আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুর করতে যায়নি। তারা ভাংচুর ও লুটপাট ঠেকাতে গিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন একজোট হয়ে ছাত্রদের বেধড়ক পিটিয়েছে। আহত ছাত্রদের হাসপাতালে নিতে গেলেও তারা বাধা দেয়। আর অভিযানের কথা শুনে বাড়ি ছেড়ে সবাই পালিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী ও হামলার ঘটনায় ৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ৩৫ জন ও জেলা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ৪০ জনকে।
ঢাকা/রেজাউল/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুনাইদ আহ্মেদ পলকের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ
সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের স্থাবর সম্পদ জব্দ ও ১৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
জুনাইদ আহ্মেদের স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ১৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, জুনাইদ আহ্মেদের রাজউকের ১০ কাঠার একটি প্লট ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ক্রোক করার আদেশ হওয়া অন্য ১৬টি জমি নাটোরে রয়েছে। এর বাইরে জুনাইদ আহ্মেদ ও তাঁর ছেলে, শাশুড়ির নামে থাকা ১৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ১২ ডিসেম্বর জুনাইদ আহ্মেদ ও তাঁর স্ত্রী আরিফা জেসমিনের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করে। মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, জুনাইদ আহ্মেদের ২৪টি ব্যাংক হিসাবে ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা তুলে নেওয়া হয়। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই টাকা লেনদেন হয়েছে।
গত ১৫ আগস্ট গ্রেপ্তার হন জুনাইদ আহ্মেদ। বিভিন্ন হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় জুনাইদ আহ্মেদের এ পর্যন্ত ৬৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।