জিবাচিক ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নির্বাচন ঘিরে অসন্তোষ
Published: 9th, February 2025 GMT
দেওয়ানগঞ্জে দুই সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় স্থগিত হওয়া জিল বাংলা চিনিকল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ঘিরে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন সাধারণ সম্পাদক পদের দুই প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ হলে নির্বাচন সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। মৌসুম শেষের দিকেও নির্বাচন না হওয়ায় মিলের শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
জিল বাংলা চিনিকল (জিবাচিক) ওয়ার্কার্স ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৫০৫। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি ২০২২-২৪ মৌসুমের জন্য নির্বাচিত দ্বি-বার্ষিক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। ২০২৪-২৬ মাড়াই মৌসুমে ওই ইউনিয়ন কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে ২৮ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করে। সে মতে, গত ২৩ জানুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হয়। এর আগে কর্তৃপক্ষ সিআইসি শরিফুল ইসলামকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কমিশনার ও মসিউর রহমান, আমিনুল ইসলাম, শাহআলমকে সহকারী কমিশনার করে ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে। এ নির্বাচনে ১১টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মিলটির শ্রমিক কর্মচারীরা। তপশিল ঘোষণার দিন প্রতিটি পদে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তার মধ্যে সভাপতি পদে রফিকুল ইসলাম, রায়হানুল আজিম ইমরান, সুলতান মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রায়হানুল হক রায়হান ও শওকত হোসেন সোহাগ, রিয়াজুল কায়সার খোকন মোল্লা মনোনয়নপত্র জমা দেন।
তফসিল ঘোষণার দিন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শওকত হোসেন সোহাগ, রিয়াজুল কায়সার খোকন মোল্লার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। যে কারণে কর্তৃপক্ষ নির্বাচন সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করে। কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিস্থিতি অনুকূলে হলে শ্রমিক কর্মচারীদের পক্ষ থেকে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবনা আসত। কিন্তু তেমন কিছু পাওয়া যায়নি।
মিলটির সিনিয়র ফিটার আমির হোসেন জানান, ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ঘিরে সংঘর্ষের সঙ্গে মিলের শ্রমিক কর্মচারী ছাড়াও বহিরাগতদের দেখা গেছে। এমন অস্থিতিশীলতা মিল কর্তৃপক্ষের জন্য শুভকর নয়। আখ মাড়াই মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের উচিত সব প্রতিকূলতা এড়িয়ে নির্বাচন দেওয়া।
সভাপতি প্রার্থী সুলতান মিয়া জানান, জিবাচিক ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ঘিরে এমন অপ্রীতিকর ঘটনার উদ্ভব আগে হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রিয়াজুল কায়সার খোকন মোল্লার ভাষ্য, সংঘর্ষে তাঁর পক্ষের বেশ কিছু লোক আহত হয়েছেন। নির্বাচনে তাদের পক্ষ থেকে অপ্রীতিকর ঘটনার উদ্ভব না হলে সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা নেই। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য তাদের কাছে সংঘর্ষ হবে না মর্মে নিশ্চিতকরণ পত্র চাচ্ছে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শওকত হোসেন সোহাগ বলেন, ‘এখন পরিবেশ শান্ত। আমরা নির্বাচন চেয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে লিখিত দেব। আশা করছি, আর কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হবে না।’ প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিআইসি শরিফুল ইসলামের ভাষ্য, কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে নির্বাচন দেওয়া হবে।
জিবাচিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, পরিস্থিতি কেমন, তা শ্রমিক কর্মচারীরা বলতে পারবেন। পরিস্থিতি অনুকূলে হলে বা শান্তিপূর্ণ মর্মে শ্রমিক কর্মচারীদের পক্ষ থেকে নির্বাচন চেয়ে আবেদন এলেই পুনরায় নির্বাচন দেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর স থ ত ল ইসল ম স ঘর ষ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক এমডিসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ইউনিয়ন ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরীসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক সাবিকুন নাহার আজ রোববার ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দুটি করেছেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন আজ সাংবাদিকদের বলেন, ত্রাণ বিতরণ ও অতিরিক্ত বিল দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মোকাম্মেল হক চৌধুরীসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জনকে দুটি মামলাতেই আসামি করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, একটি মামলায় ২০২২ ও ২০২৩ সালে দরিদ্রদের মধ্যে ত্রাণ হিসেবে কম্বল বিতরণের কথা বলে অতিরিক্ত বিল দেখিয়ে প্রায় ২৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, ৭ লাখ ৮৫ হাজার কম্বলের অতিরিক্ত বিল দেখিয়ে এ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। মামলায় মোকাম্মেল হক চৌধুরী ছাড়াও ব্যাংকটির সাবেক দুই চেয়ারম্যান আহসানুল আলম ও মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোল্লা ফজলে আকবর, সাবেক পরিচালক মারজিনা শারমিন, মো. রাশেদুল আলম, শওকত হোসেন, মোহাম্মদ ফজলে মোরশেদ, হালিমা বেগম, ওসমান গণি, মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ মোস্তান বিল্লাহ, সাবেক পরিচালক (স্বতন্ত্র) মো. আবদুল কুদ্দুস ও মো. আবদুস সালামকে আসামি করা হয়েছে।
একই মামলায় ব্যাংকটির হেড অব এফএডি ও সিএফও রুহুল আমিন, হেড অব পিআরডি এ কে এম জহির উদ্দীন ইকবাল চৌধুরী, সিনিয়র ক্যাশ অফিসার মো. বোরহান উদ্দীন চৌধুরী, ক্যাশ ইনচার্জ আবদুল হালিম, অপারেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ রাশিদ শহীদকে আসামি করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সানি এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর জনি মিয়াকেও এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, দ্বিতীয় মামলায় বিভিন্ন অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে সিএসআর ফান্ড থেকে ১০ কোটি ১৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয়, বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ বিতরণের নামে ভুয়া ভাউচার তৈরি করে সেটি আসল দেখিয়ে অতিরিক্ত বিল তুলে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এ মামলায় মোকাম্মেল হক চৌধুরী ছাড়াও ব্যাংকটির সাবেক দুই চেয়ারম্যান আহসানুল আলম ও মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মোল্লা ফজলে আকবর, মারজিনা শারমিন, মো. রাশেদুল আলম, শওকত হোসেন, মোহাম্মদ ফজলে মোরশেদ, হালিমা বেগম, ওসমান গণি, মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ মোস্তান বিল্লাহ, মো. আবদুল কুদ্দুস, মো. আবদুস সালাম, রুহুল আমিন, এ কে এম জহির উদ্দীন ইকবাল চৌধুরীকে আসামি করা হয়েছে।