দেওয়ানগঞ্জে দুই সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় স্থগিত হওয়া জিল বাংলা চিনিকল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ঘিরে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন সাধারণ সম্পাদক পদের দুই প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ হলে নির্বাচন সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। মৌসুম শেষের দিকেও নির্বাচন না হওয়ায় মিলের শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

জিল বাংলা চিনিকল (জিবাচিক) ওয়ার্কার্স ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৫০৫। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি ২০২২-২৪ মৌসুমের জন্য নির্বাচিত দ্বি-বার্ষিক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। ২০২৪-২৬ মাড়াই মৌসুমে ওই ইউনিয়ন কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে ২৮ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করে। সে মতে, গত ২৩ জানুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হয়। এর আগে কর্তৃপক্ষ সিআইসি শরিফুল ইসলামকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কমিশনার ও মসিউর রহমান, আমিনুল ইসলাম, শাহআলমকে সহকারী কমিশনার করে ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে। এ নির্বাচনে ১১টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মিলটির শ্রমিক কর্মচারীরা। তপশিল ঘোষণার দিন প্রতিটি পদে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তার মধ্যে সভাপতি পদে রফিকুল ইসলাম, রায়হানুল আজিম ইমরান, সুলতান মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রায়হানুল হক রায়হান ও শওকত হোসেন সোহাগ, রিয়াজুল কায়সার খোকন মোল্লা মনোনয়নপত্র জমা দেন।

তফসিল ঘোষণার দিন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শওকত হোসেন সোহাগ, রিয়াজুল কায়সার খোকন মোল্লার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। যে কারণে কর্তৃপক্ষ নির্বাচন সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করে। কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিস্থিতি অনুকূলে হলে শ্রমিক কর্মচারীদের পক্ষ থেকে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবনা আসত। কিন্তু তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। 

মিলটির সিনিয়র ফিটার আমির হোসেন জানান, ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ঘিরে সংঘর্ষের সঙ্গে মিলের শ্রমিক কর্মচারী ছাড়াও বহিরাগতদের দেখা গেছে। এমন অস্থিতিশীলতা মিল কর্তৃপক্ষের জন্য শুভকর নয়। আখ মাড়াই মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের উচিত সব প্রতিকূলতা এড়িয়ে নির্বাচন দেওয়া।

সভাপতি প্রার্থী সুলতান মিয়া জানান, জিবাচিক ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ঘিরে এমন অপ্রীতিকর ঘটনার উদ্ভব আগে হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রিয়াজুল কায়সার খোকন মোল্লার ভাষ্য, সংঘর্ষে তাঁর পক্ষের বেশ কিছু লোক আহত হয়েছেন। নির্বাচনে তাদের পক্ষ থেকে অপ্রীতিকর ঘটনার উদ্ভব না হলে সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা নেই। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য তাদের কাছে সংঘর্ষ হবে না মর্মে নিশ্চিতকরণ পত্র চাচ্ছে।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শওকত হোসেন সোহাগ বলেন, ‘এখন পরিবেশ শান্ত। আমরা নির্বাচন চেয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে লিখিত দেব। আশা করছি, আর কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হবে না।’ প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিআইসি শরিফুল ইসলামের ভাষ্য, কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে নির্বাচন দেওয়া হবে।

জিবাচিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, পরিস্থিতি কেমন, তা শ্রমিক কর্মচারীরা বলতে পারবেন। পরিস্থিতি অনুকূলে হলে বা শান্তিপূর্ণ মর্মে শ্রমিক কর্মচারীদের পক্ষ থেকে নির্বাচন চেয়ে আবেদন এলেই পুনরায় নির্বাচন দেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত ল ইসল ম স ঘর ষ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

চারবার হার্টবিট বন্ধ, শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আটবছর বয়সী শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন। বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও রয়েছে। 

বুধবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে। শিশুটির সুস্থতার জন্য সেনাবাহিনী দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটির চিকিৎসা চলছে। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

সেনাবাহিনীর ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, শিশুটি আজ (বুধবার) চারবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছে। সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) দিয়ে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করা হয়েছে। তার রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি শিশুটির রক্তচাপ ৬০/৪০ মিমি পারদ কিংবা তার চেয়ে নিম্নমুখী।

আট বছরের শিশুটি গত বুধবার (৫ মার্চ) বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও তার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ