নামিবিয়ার প্রতিষ্ঠাতা স্যাম নজুমা মারা গেছেন
Published: 9th, February 2025 GMT
আফ্রিকার দেশ নামিবিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট স্যাম নুজোমা মারা গেছেন। রাজধানী উইন্ডহোকে ৯৫ বছর বয়সে মারা গেছেন তিনি। নামিবিয়ার প্রেসিডেন্ট নাঙ্গোলো এমবুমবা আজ রোববার এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দিয়েছেন। খবর-বিবিসি
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ লড়াইয়ের নেতৃত্ব দেন নুজোমা। ১৯৯০ সালে সাউথ ওয়েস্ট পিপলস অর্গানাইজেশন নামে পরিচিত নামিবিয়ার মুক্তি আন্দোলনে তার নেতৃত্ব স্বাধীন হয় নামিবিয়া। স্বাধীনতার পর নুজোমা ওই বছরই দেশটির প্রেসিডেন্ট হন এবং ২০০৫ সাল পর্যন্ত দেশটির নেতৃত্ব দেন।
অবসরের পরও দেশটিতে তিনি খুবই জনপ্রিয় ও সম্মানিত ছিলেন। নামিবিয়ার ব্যাংক নোটে নামিবিয়ার ‘জাতির পিতা’ হিসেবে তার ছবি ব্যবহার রয়েছে।
মৃত্যুর আগে ২০২২ সালে সর্বশেষ জনসমক্ষে হাজির হয়েছিলেন তিনি। ওভামবো গোত্রের এক দরিদ্র কৃষকের ঘরে জন্ম নেন নজুমা। তিনি ছিলেন তার বাবা-মায়ের দশ সন্তানের মধ্যে বড়। ১৯৬০ সালে সাউথ ওয়েস্ট পিপলস অর্গ্যানাইজেশনের (এসডব্লিউএপিও) নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন। সে বছরই নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন নজুমা। ১৯১৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকারগুলো নামিবিয়া কুক্ষিগত করে রেখেছিল।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নামিবিয়ার ‘জাতির পিতা’ নুজোমা মারা গেছেন
নামিবিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট স্যাম নুজোমা ৯৫ বছর বয়সে মারা গেছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্যালয় রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ১৯৯০ সালের ২১ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর নামিবিয়ার নেতৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন নুজোমা। ২০০৫ সালে পার্লামেন্টের এক আইনের মাধ্যমে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘নামিবিয়ান জাতির প্রতিষ্ঠাতা পিতা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
তবে তার শাসনামল প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনারও মুখোমুখি হয়। গণমাধ্যমের প্রতি তার কঠোরতা, সমকামিতার বিরুদ্ধে অবস্থান এবং ১৯৯৮ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর বিষয়টিকে বিতর্কিত বলে অভিহিত করেন সমালোচকেরা।
নুজোমাকে ‘আফ্রিকার অন্যতম মহান বিপ্লবী নেতা’ বলে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মৌসা ফাকি মাহামাত।
স্যাম নুজোমা ১৯২৯ সালে উত্তর-পশ্চিম নামিবিয়ার একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দেশটি তখন দক্ষিণ আফ্রিকার অধীনে ছিল। তার শৈশব কাটে গবাদিপশু চরিয়ে। পরবর্তী জীবনে তিনি ওয়ালভিস বে ও রাজধানী উইন্ডহোকে কাজ শুরু করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার রেলওয়েতে চাকরির সময় তিনি বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে থাকেন।
১৯৫০-এর দশকের শেষ দিকে ওওয়াম্বো পিপলস অর্গানাইজেশনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন নুজোমা। এটি পরে একটি স্বাধীনতা সংগ্রামী সংগঠনে রূপ নেয়। ১৯৬০ সালে তিনি নির্বাসনে চলে যেতে বাধ্য হন এবং জাতিসংঘে নামিবিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে বক্তব্য রাখেন।
প্রবাস জীবন থেকেই নামিবিয়ার মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন নুজোমা। ১৯৬৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন। দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৯০ সালে ২১ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে নামিবিয়া।
স্বাধীনতার পর ১৯৯০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত নামিবিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নুজোমা। তিনি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। তার নেতৃত্বে তার দল ‘এক নামিবিয়া, এক জাতি’ নীতির মাধ্যমে সমাজে সংহতি গড়ে তুলতে কাজ করে। তবে ১৯৯৯ সালের ক্যাপ্রিভি বিদ্রোহের কঠোরভাবে দমন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর নিয়ন্ত্রণ তার ভাবমূর্তিতে কালিমা লাগায়।
নামিবিয়া ছাড়াও আফ্রিকার অন্যান্য নেতারা নুজোমার অবদান স্মরণ করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, ‘‘ড. স্যাম নুজোমা একজন অসাধারণ স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন, যিনি শুধু নামিবিয়ার মুক্তি নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তি আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।’’
নুজোমা বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘দুঃখজনকভাবে, আমাদের এই মহামান্য নেতা এবার আর সুস্থ হয়ে ফিরতে পারলেন না।’’
ঢাকা/এনএইচ