যতদিন পর্যন্ত দেশ থেকে ডেভিল নির্মূল না হবে ততদিন পর্যন্ত অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

তিনি বলেছেন, “গাজীপুরের ঘটনায় অনেককে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আর যারা দেশকে অস্থিতিশীল করবে। ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।” 

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকার ফার্মগেটে মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউটের নতুন মৃত্তিকা ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। তারই অংশ হিসেবে গাজীপুরসহ সারা দেশে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।”

গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে গাজীপুর নগরের ধীরাশ্রম দাক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঠেকাতে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন। পরে সেখানে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে স্থানীয়রা তাদের ওপর হামলা চালায়। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুরের নেতাকর্মীরা বলেছেন, “হামলায় আহতদের সবাইকেই প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাত ১টার দিকে গুরুতর আহত পাঁচ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।”

ওই হামলার প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে জাতীয় নাগরিক কমিটি গাজীপুর জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে নগরের ভাওয়াল রাজবাড়ি সড়ক অবরোধ করেন নেতাকর্মীরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন।

শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে গিয়ে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সে সময় তিনি গাজীপুরে হামলার ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করা হবে বলে আশ্বাস দেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই সারা দেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামের অভিযান শুরু কথা জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল হাসানের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এই অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে বিক্ষোভের ডাক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

গাজীপুরের রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ হবে বলে জানানো হয়েছে পোস্টে।

গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দাখিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং এর প্রেক্ষিতে স্থানীয়দের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত তিনজনের অবস্থা গুরুতর মনে করা হচ্ছে।

এদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান সংগঠক সরজিস আলম তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‌‘গাজীপুরে আজকেই হবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেষ দিন। আমরা আসছি...।'

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই আ ক ম মোজ্জামেলের ধীরাশ্রমের বাড়ির আশপাশে বেশ কয়েকজন লোক ঘোরাফেরা করতে থাকেন। হঠাৎ তারা বাড়িতে হামলা চালায়, তারপর ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর করতে থাকেন। এ সময় ডাকাত এসেছে বলে পাশের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও এলাকার লোকজন প্রতিরোধ করতে আসেন। তখন তাদের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর ৮ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

আহতদের উদ্ধার করে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো দেশীয় অস্ত্রের আঘাতজনিত রক্তাক্ত জখম দেখা যায়।

এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, হামলার খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই। আহত অবস্থায় ১৫ জনের মতো উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার বিষয়ে কোনো পক্ষের কাউকেই আমরা পাইনি। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বা তথ্য নেওয়ার জন্য কথা বলতে পারিনি। ফলে এখানে আসলে কী ঘটেছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের যুগ্ম আহ্বায়ক নাবওল আহমেদ বলেন, আমাদের রাত সাড়ে ৮টার দিকে বলা হয়, সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা হয়েছে। সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটকে রাখা হয়েছে, আপনারা এসে তাদের বাঁচান। পরে আমাদের শিক্ষার্থীরা সেখানে তাদের উদ্ধার করতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে নিয়ে আটকে মারধর করে।

এদিকে পুলিশ আসতে দেরি করেছে অভিযোগ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক নাবওল আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা ফাঁদে পড়েছে, এটা বুঝতে পেরে আমরা বহুবার পুলিশকে জানিয়েছি। তারা ঘটনার দুই ঘণ্টা পর এসেছে। যারা হামলা করেছে, তারা সবাই আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের লোক।  
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হবিগঞ্জে কুমিল্লা থেকে শিক্ষা সফরে আসা বাস দুর্ঘটনায়, আহত ১৫
  • স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ ও পুলিশ কমিশনার-জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবি
  • গাজীপুর থেকে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার ঘোষণা
  • হামলায় আহতদের দেখতে হাসপাতালে হাসনাত-সারজিস
  • সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেলের বাড়িতে হামলায় আহত ৫ জন ঢামেক হাসপাতালে
  • মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা
  • মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা
  • মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ভাঙচুর ও সংঘর্ষ: আহতদের দেখতে হাসপাতালে হাসনাত ও সারজিস
  • গাজীপুরে বিক্ষোভের ডাক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের