শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিএনপির ছয়টি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার এ কে এম নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিলুপ্ত করা কমিটিগুলো হলো ভেদরগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা, ডামুড্যা উপজেলা ও পৌরসভা, গোসাইরহাট উপজেলা ও পৌরসভা কমিটি। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটিগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে এমন দাবি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সভাপতি আবুল হাসেন ঢালী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়নি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণ দেখিয়ে আমাদের কমিটি বিলুপ্ত করেছেন। বিষয়টি তাঁর কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাইনি। আমার এখান থেকে নির্বাচন করতে চান ও আমাদের নেতা তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ এক নেতা আমাকে জানিয়েছেন দলীয় প্রয়োজনে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। শিগগিরই আহ্বায়ক কমিটি অথবা মূল কমিটি দেওয়া হবে।’

ডামুড্যা উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাহাদাৎ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটির মেয়াদ নেই। আমরাও চাইছিলাম কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন করে কমিটি গঠন করা হোক। সামনে নির্বাচন, অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তাই নেতা-কর্মীর কার্যক্রম ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড গতিশীল করা জরুরি। তাই নতুন কমিটিরও প্রয়োজন।’

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার এ কে এম নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন ইউনিটের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। তাই দলের কর্মীদের গতিশীল করতে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নতুন কমিটি করে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। সেখানে সরাসরি কমিটি গঠনও করা হতে পারে। আবার তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে সম্মেলনের মাধ্যমেও কমিটি গঠন করা হতে পারে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ল প ত কর ব এনপ র কম ট র আম দ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, হত্যার পর ঝলসানো হয় মুখ

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিখোঁজের পরদিন গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে মুখ ঝলসানো অবস্থায় শিশুটির বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগীর বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায়। সে ছিল স্থানীয় একটি হেফজখানার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।

স্বজনরা জানান, সোমবার পহেলা বৈশাখ বিকেলে দাদাবাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় শিশুটি। এর পর আর ফেরেনি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালে চাটমোহরের হরিপুর এলাকায় ভুট্টাক্ষেতের মধ্যে লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ তা উদ্ধার করে। এ সময় তার মুখে পোড়া ক্ষতচিহ্ন এবং পরনের প্যান্ট গলায় পেঁচানো ছিল। 

পুলিশের ধারণা, ধর্ষণ ও শ্বাসরোধে হত্যার পর শিশুটির মুখ ঝলসে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, তার মুখ এসিড দিয়ে পোড়ানো হয়েছে।

চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, শিশুটির স্বজন লাশ দেখে পরিচয় শনাক্ত করেছেন। লাশ উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

এদিকে ফেনীতে থাইল্যান্ডের নাগরিক এক নারীকে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই নারীর করা মামলায় মোখসুদুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে সোমবার গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মোখসুদুর ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের নোয়াবাদ মুসলিম মেম্বার ভূঁইয়াবাড়ির আব্দুর রবের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জন্মসূত্রে ভারতীয় হলেও থাইল্যান্ডের নাগরিক ওই নারী ২০২০ সাল থেকে হংকংয়ের একটি মুদি দোকানে ব্যবসা করেন। সেখানেই মোখসুদুরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এর পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে মোখসুদুর তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে মোখসুদুর বাংলাদেশে চলে এলেও তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। বিয়ের কথা বলা হলে গত বছরের ২২ মার্চ তিনি প্রথমবার বাংলাদেশে আসেন। একইভাবে মোখসুদুর গত বছরের ১২ অক্টোবর আবার ওই নারীকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে ধর্ষণ করেন। 

সবশেষ ১৩ এপ্রিল ওই নারী বাংলাদেশে এসে মোখসুদুরের ফেনীর বাড়িতে গেলে তাঁকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন মোখসুদুর। 

ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগী ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। 

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববারের এ ঘটনায় উলফাত মোল্লা নামে এক দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী একটি মহল ভুক্তভোগীর পরিবারকে আইনগত পদক্ষেপ না নিতে চাপ দেয় এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। ঘটনার রাতেই অভিযুক্ত উলফাতকে নিয়ে বাজারের সভাপতি কামরুল ইসলাম সাবু ও স্থানীয় মাতবর লাভলু, নাজির, তাইজেল, জাকির, বোরাকসহ ১০-১২ জন বাজারের মধ্যে সালিশ বৈঠকে বসেন। তারা সবার সম্মতিতে উলফাতকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

ভুক্তভোগীর চাচা বলেন, ‘ওই বৈঠকে আমাদের ডাকা হয়নি। ইজ্জত তো চলেই গেছে; টাকা দিয়ে কী হবে?’ এ ব্যাপারে মাতবর নাজিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি সালিশ বৈঠকের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

লোহাগড়া থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, উলফাতকে সোমবার সন্ধ্যায় আটক করা হয়। ভুক্তভোগীর পরিবার লিখিত অভিযোগ না করায় তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মোজাম্মেল হোসেন নামে এক মুদি দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত জানুয়ারি মাসে মেয়েটিকে কয়েক দফায় ধর্ষণ করে মোজাম্মেল। এ ঘটনায় মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে কলমাকান্দা থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা। এর পর মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় ভাড়া বাসায় আলু তোলার কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগে বাবু মোল্লা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার রাতে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার বাবুকে মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-৪ এ তোলা হলে বিচারক নুসরাত শারমিন কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাবু উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের শামসুল মোল্লার ছেলে। টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মহিদুল ইসলাম জানান, ২০ মার্চ ধর্ষণের ঘটনার পর মামলা হলে বাবু পালিয়ে যায়। 

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)

সম্পর্কিত নিবন্ধ