সফলতা বা আবেগ প্রকাশের আগে নিজেকে গড়ে তুলুন: শাও জি চিউ
Published: 9th, February 2025 GMT
শাও জি চিউ। বিশ্বের আলোচিত এবং জনপ্রিয় শর্ট ভিডিও শেয়ারিং সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম টিকটকের প্রধান নির্বাহী। আলোচিত এই নির্বাহীর বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক।
অনেকেই টিকটকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চায়। কেউ আবার এ প্ল্যাটফর্মকে শুধু শর্ট ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করে। আসলে সবারই একটি মিশন থাকে। সেটি ব্যক্তিগত হোক আর ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে হোক। টিকটক নিয়ে আমার মিশন হচ্ছে, মানুষের সৃজনশীলতা সবার কাছে তুলে ধরার মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করা এবং অন্যের কাছ থেকে শেখা। এই সৃজনশীলতা শুধু ভিডিওর মাধ্যমেই হতে হবে তা বলছি না। প্রতিনিয়ত নতুন তথ্যের সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করানোর পাশাপাশি সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াস সবার মতো টিকটকেরও আছে!
চীনে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম ভেঙে.
..
টিকটক চেনে না এমন মানুষ খুব কমই দেখা যায় বিশ্বে। এটিই একমাত্র চীনা প্রতিষ্ঠান, যা অন্যান্য দেশেও বেশ জনপ্রিয় শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। আপনারা এটি খুব ভালো করেই জানেন যে চীনে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সেবা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে পছন্দ করে। টিকটকের ক্ষেত্রে নিয়ম যেন বদলে যায়। টিকটকের শুরু থেকেই আমরা এর পরিধি বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করেছি এবং এখনও সেই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
মানুষের কথা মাথায় রেখেই টিকটকের গড়ে ওঠা
টিকটক নিয়ে নেতিবাচক কথা শোনা গেলেও এর ইতিবাচক দিকটাই সম্ভবত বেশি। দেখুন, সব মানুষই তার সফলতা বা আবেগ প্রকাশের শক্তিশালী একটি মাধ্যম খোঁজে। কেবল তাই নয়, মানুষ তার জীবনযাপনে যে পথ পাড়ি দেয়, তার রীতিনীতি, আনন্দ-বেদনা সবকিছুই ভিডিওর মাধ্যমে শেয়ার করার উপায় খুঁজে ফেরে। কিন্তু এমন কোনো প্ল্যাটফর্ম টিকটকের আগে ছিল না। বিষয়টি আমরা বুঝতে পেরে সবার কর্মতৎপরতার একটি ভিজুয়াল প্ল্যাটফর্ম তৈরির চেষ্টা করি। শুধু তা-ই নয়, আমি মনে করি, এখন সবার কাছে এটি পরিষ্কার যে সফলতার সঙ্গেই টিকটক তার যাত্রা শুরু করতে পেরেছে।
নিরাপত্তা ও পরিশ্রমের ইতিহাস
যে কোনো ব্যবসায় সফলতার জন্য তার ক্রেতার ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা খুবই জরুরি। সেই দিক বিবেচনায় টিকটক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য যাতে নিরাপদে থাকে, সে জন্য আমরা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করি। এই নিরাপত্তার ফলেই প্রতিনিয়ত টিকটকের জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। এত কিছুর পরও আমি বলব, টিকটকে আপনারা নিজেদের যে সাফল্য বা আবেগ প্রকাশ করেন তার আগে নিজেদের গড়ে তুলুন। আজ আমার এই অবস্থানে আসার পেছনেও আছে পরিশ্রমের ইতিহাস। পৃথিবীর কোনো মানুষই পরিশ্রম ছাড়া সাফল্য পায়নি। তাই নিজেকে গড়ে তোলায়ও মন দিন। করুন কঠোর পরিশ্রম।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ট কটক প ল য টফর ম ট কটক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিলুপ্তপ্রায় গোটালি মাছের কৃত্রিম প্রজননে সাফল্য
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিলুপ্তপ্রায় সুস্বাদু দেশীয় গোটালি মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদনে প্রাথমিক সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) একদল বিজ্ঞানী।
মিঠাপানির জলাশয় বিশেষ করে পাহাড়ী ঝর্ণা ও অগভীর স্বচ্ছ নদী এদের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত। উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, আত্রাই ছাড়াও নেত্রকোনার সোমেশ্বরী, কংস, সিলেটের পিয়াইন, পদ্মা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে এক সময় মাছটির প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। এখন মাছটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
মাছটির কৃত্রিম প্রজনন এবং পোনা তৈরির কলাকৌশল উদ্ভাবনের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বিএফআরআইয়ের পাবলিকেশন অফিসার এসএম শরীফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ২৬১ প্রজাতির মিঠাপানির মাছের মধ্যে গোটালি (বৈজ্ঞানিক নাম Crossochelius latius) একটি গুরুত্বপূর্ণ সুস্বাদু ছোট মাছ। মাছটি অঞ্চলভেদে কালাবাটা নামেও পরিচিত।”
তিনি আরও বলেন, “জলাশয় দূষণ, অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, নদীতে বান ও কারেন্ট জালের ব্যবহার, খরা মৌসুমে জলাশয় শুকিয়ে মাছ ধরা এবং নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরা, বাসস্থান ও প্রজননক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়াসহ নানা কারণে অন্যান্য দেশীয় ছোট মাছের ন্যায় এ মাছের প্রাপ্যতাও ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তথ্য মতে, ২০১৫ সালে মাছটি বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রজাতিটি বিপন্নের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটের সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকা থেকে মাছটি সংগ্রহ করেন। এরপর উপকেন্দ্রের গবেষণা পুকুরে অভ্যস্তকরণ ও কৃত্রিম প্রজননের জন্য গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশে প্রথমবারের মত কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জিত হয়।
এ গবেষণায় নেতৃত্বে দেন বিএফআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার আলী। এছাড়াও গবেষক দলে ছিলেন, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ড. সোনিয়া শারমীন, মালিহা হোসেন মৌ ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শ্রীবাস কুমার সাহা।
এসএম শরীফুল ইসলাম বলেন, “বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এ মাছটির কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় মাছটি চাষের আওতায় চলে আসবে। এতে উত্তর জনপদে তথা দেশের মৎস্য খাতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে এবং মাছটি বিলুপ্তির হাত থেকেও রক্ষা পাবে।”
ঢাকা/মেহেদী