সাজেকে কক্ষ না পেয়ে কটেজ ও রিসোর্টের বাইরে রাত যাপন
Published: 9th, February 2025 GMT
সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার রাঙামাটির বিভিন্ন পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে শুক্রবার কটেজ ও রিসোর্টের কক্ষ খালি না থাকায় প্রায় পাঁচশ পর্যটক বিভিন্ন ক্লাবঘর, কমিউনিটি সেন্টার, মসজিদ ও বাড়িতে রাত যাপন করেন।
সাজেক পর্যটনে শুক্রবার প্রায় ছয় হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেন। কটেজ ও রিসোর্টে পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কক্ষ না পেয়ে দুই শতাধিক পর্যটক ফিরেও গেছেন।
সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে ১১৬টি কটেজ-রিসোর্টে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার। ফলে কটেজ ও রিসোর্টের কক্ষ যারা অগ্রিম বুক করতে পারেননি, তাদের অন্যত্র রাত যাপন করতে হয়েছে।
সাজেক হিলভিউ রিসোর্টের মালিক ইন্দ্র চাকমা জানান, শুক্রবার সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে কটেজ ও রিসোর্টের কক্ষ সম্পূর্ণ বুক থাকায় কক্ষ না পেয়ে অনেক পর্যটক অন্যত্র রাত যাপন করেছেন। শনিবার পর্যটকের সংখ্যা কমেছে।
সাজেক কটেজ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জানান, শুক্রবার সাজেক পর্যটনে সর্বোচ্চ পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। এদিন পাঁচ হাজারের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন। যারা কক্ষ পাননি, তাদের জন্য সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্লাবঘর, কমিউনিটি সেন্টার, মসজিদ ও বাসাবাড়িতে রাত যাপনের ব্যবস্থা করা হয়। তিনি বলেন, কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটকরা এখন সাজেকমুখী হচ্ছেন।
রাঙামাটি সরকারি হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, শুক্রবার ঝুলন্ত সেতুতে প্রায় ছয় হাজার ও শনিবার দুই হাজারেরও বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গড়াইয়ে বিএনপি নেতার দাপট
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর সদকী ইউনিয়নের জিলাপিতলা-সংলগ্ন গড়াই নদীর চর থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ নিয়ে এক বিএনপি নেতা ও ইজারাদার কর্তৃপক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইজারাদারের লোকজনের অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজাহান আলী মোল্লা ও তাঁর সমর্থকরা ইজারা নেওয়া ঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ টাকার মাটি ও বালু কেটে নিচ্ছেন। ছয় দিন ধরে এভাবে মাটি-বালু লুট করছেন তারা।
ইজারাদারের অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করছেন বিএনপি নেতা সাজাহান ও তাঁর সমর্থকরা। তারা বলছেন, গড়াই নদীপারে তাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ফসলাদি চাষ হতো। ইজারাদার মাসুদ রানা আওয়ামী লীগের সমর্থক। দীর্ঘদিন ধরে চর ইজারা নেওয়ার নাম করে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থেকে মাটি ও বালু কেটে নিয়েছেন। তবে এখন ক্ষমতা বদল হওয়ায় নিজেদের জমি চাষাবাদের উপযোগী করার জন্য নিজেরাই মাটি ও বালু অপসারণ করছেন।
জানা গেছে, উপজেলার উত্তর মূলগ্রাম, হিজলাকর, এনায়েতপুর ও গোবিন্দপুর মৌজার বালুমহাল এক বছরের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নিয়েছেন স্থানীয় ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মাসুদ রানা। প্রায় ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা মূল্যের ঘাটের ইজারার মেয়াদ চলতি বছর ১৩ এপ্রিল শেষ হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জিলাপিতলা-সংলগ্ন গড়াই নদীতে গিয়ে দেখা যায়, নদীর চরে কলা, গম, মসুরসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করা হয়েছে। সেখান থেকে ভেকু দিয়ে বালু ও মাটি কেটে ট্রাকসহ নানা যানবাহনে করে বিভিন্ন এলাকায় নেওয়া হচ্ছে। সেখানে একটি অস্থায়ী ঘর করে রসিদের মাধ্যমে টাকা আদায় করছেন ইজারাদারের লোকজন। নদীপারের কলা বাগানের ভেতরে তাঁবু টাঙিয়ে বসে টাকা তুলছেন বিএনপি নেতা সাজাহানের সমর্থকরা।
এ সময় ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক এনামুল হক বলেন, ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য চর ইজারা নিয়েছেন। মেয়াদ
শেষ হবে ১৩ এপ্রিল। অথচ ছয় দিন ধরে বিএনপি নেতা সাজাহান আলীর নেতৃত্বে ইজারা নেওয়া ঘাট থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকার মাটি ও বালু লুট করা হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তিনি অবৈধভাবে বালু ও মাটি কাটা বন্ধের দাবি জানান।
গড়াই নদীর কূল থেকে মাটি ও বালু কাটার বিষয়টি স্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজাহান আলী মোল্লা। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জিলাপিতলা এলাকায় তাদের কয়েক পুরুষের অন্তত ৮৫-৯০ বিঘা জমি আছে। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ইজারাদার মাসুদ তাদের জমি থেকে এতদিন মাটি ও বালু কেটে নিয়েছেন। ভবিষ্যতে চাষাবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করার লক্ষ্যে এখন মাটি ও বালু অপসারণ করে ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এখানে কোনো অন্যায় কাজ করা হচ্ছে না।
কুমারখালীর ইউএনও এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক বিষয়টি জানিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।