গত সাড়ে ১৫ বছরে দেশে একটি চৌর্যবৃত্তির অর্থনীতি দাঁড় করানো হয়েছিল। রাষ্ট্রের এমন কোনো অঙ্গ ছিল না, যা শেখ হাসিনা এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করেননি। আর্থিক খাত থেকে শুরু করে বিচারালয় পর্যন্ত তিনি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রাষ্ট্রকে এক ব্যক্তির তালুকে পরিণত করেছিলেন। ‘প্রাইভেটাইজেশন অব স্টেট’– এ ধারণা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। 

শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে আওয়ামী শাসনামলে ব্যাপক অর্থ পাচার নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.

মাহবুব উল্লাহ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, যুবলীগ-ছাত্রলীগকে বিচারক নিয়োগ দিয়ে পুরো বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করা হয়েছিল। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতি এস আলম গ্রুপের অর্থ পাচারকে অনৈতিকভাবে বিচারিক সুরক্ষা দিয়েছিল। শেখ রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ পাচারের যে অভিযোগ এসেছে, তা বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ সরকারকে যথাযথ গুরুত্বসহকারে তদন্ত করতে হবে। 

‘রাজনীতিবিদদের জন্যই আওয়ামী শাসনামলে ব্যাপক অর্থ পাচার সম্ভব হয়েছে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ঢাকার বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, গত দেড় দশকে পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে টাকা পাচারের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ীসহ সরকারের সুবিধাভোগীরা অর্থ পাচার করেছেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হয় ছ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অবশেষে ৫ বছর পর কারাগারেই বিয়ে হল শিমুল-লিমার

প্রেম করে তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা করে পালিয়ে গিয়েছিলেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ ভাদেশ্বরের শিমুল আহমদ। দীর্ঘদিন ছিলেন লাপাত্তা। এরপর ওই তরুণীর ঘরে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। সন্তানের পিতৃপরিচয় ও বিয়ের স্বীকৃতি নিয়ে বরের বাড়িতে হাজির হন কয়েকবার।

বার বার প্রত্যাখাত হয়ে এসএমপির শাহপরাণ থানায় মামলা করেন আলফাতুন্নেসা লিমা। সম্প্রতি আদালত তরুণী লিমাকে বিয়ের নির্দেশ দিলে বৃহস্পতিবার কাজী ডেকে দুই পরিবারের সম্মতিতেই কারাগারেই বিয়ের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হলে সিলেট জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এ সময় ৪ বছরের মেয়ে শিশুটিও উপস্থিত ছিল। 

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ভাদেশ্বরের কলাশহরের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে শিমুল আহমদ। তার সঙ্গে গড়ে ওঠে তরুণী লিমার প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে তরুণী লিমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখান শিমুল। এরপর থেকেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা। তাদের ঘনিষ্টতায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন লিমা। বিষয়টি শোনার পর পালিয়ে যান শিমুল। এ ঘটনায় ২০২২ সালের ৭ মার্চ এসএমপির শাহপরাণ থানায় মামলা করেন লিমা। ওই মামলায় গেল বছরের ১৯ এপ্রিল পুলিশ গ্রেপ্তার করে শিমুলকে। এরপর থেকেই হাজতবাস করছেন তিনি।

এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোকনুজ্জামানের আদালতে জামিনের আবেদন করেন শিমুল। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন জানালে আদালত একই আদেশ দেন। সম্প্রতি আদালত বিয়ের নির্দেশনা দিলে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট কারাগার কর্তৃপক্ষ বিয়ের আয়োজন করে। বিয়েতে উভয় পরিবারের কর্তাব্যক্তি ছাড়াও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। 

বিয়ের কাজী সজীব আহমদ জানান, আদালতের নির্দেশে উভয়পক্ষের স্বজনদের উপস্থিতিতে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়েছে শিমুল আর লিমার। আমি তাদের বিয়ে পড়িয়ে দিয়েছি। দীর্ঘদিন বর পলাতকও ছিল। তাদের ঘরে ৪ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারের জেলার আরিফুর রহমান বলেন, বিবাহ সম্পর্কিত একটি আদেশ আমাদের দপ্তরে আসে। এরপর আমরা আদালতের সেই নির্দেশ পালন করি। উভয়পক্ষের লোকজন ও আইনজীবীদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তারা দুজনেই ছিলেন খুশি। এক অপরকে মিষ্টিমুখও করিয়ে দেন তারা। আদালতে তাদের বিয়ের প্রতিবেদন দেওয়া হলে আর কোনো প্রকার মামলা না থাকলে শিমুল মুক্তি পেতে পারেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ