বিসিএস পরীক্ষার নতুন রোডম্যাপ দিলো জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন
Published: 9th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
সংস্কার প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষা নিয়ে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। বিসিএস পরীক্ষা থেকে শুরু করে পদায়নের একটি রোডম্যাপ দেওয়া হয়েছে এতে। এছাড়া পরীক্ষায় মৌলিক বিষয়ের নম্বর পুনর্বণ্টনসহ তিনটি পূর্ণ কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন থেকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা গেছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিসিএস পরীক্ষা সংক্রান্ত তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। চেয়ারম্যানসহ প্রতিটি কমিশনে ৮ জন সদস্য রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
এর মধ্যে আছে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (সাধারণ); শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সার্ভিস ব্যতীত অন্য সব সার্ভিসে নিয়োগ ও পদোন্নতি পরীক্ষা আয়োজন করবে এটি। এছাড়া আছে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (শিক্ষা) ও পাবলিক সার্ভিস কমিশন (স্বাস্থ্য)। এই কমিশন দুটো শুধুমাত্র শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সার্ভিসের জনবল নিয়ে কাজ করবে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসনে মেধাভিত্তিক নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালা বা আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে যাতে সহজেই সেটি পরিবর্তন করা না যায়। সরকারি চাকরিতে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়রেখা প্রতিষ্ঠা করা উচিত।
প্রতিবেদনে একটি পরীক্ষা ও পদায়নের রোডম্যাপ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী, পিএসসির পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এবং প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে। পরে প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশ হবে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। এরপর লিখিত পরীক্ষা হবে জুন মাসের দ্বিতীয়ার্ধে এবং পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হবে পরবর্তী বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। এর ফল প্রকাশিত হবে এপ্রিল মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। এরপর নিয়োগের আদেশ গেজেটে প্রকাশ হবে জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। জুলাইয়ের এক তারিখে তারা যোগদান করবেন।
সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, পরীক্ষার জন্য ৬টি আবশ্যক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। সেগুলো হলো- বাংলা রচনা ১০০ নম্বর, ইংরেজি রচনা ১০০ নম্বর, ইংরেজি কম্পোজিশন এবং প্রেসি ১০০ নম্বর, বাংলাদেশের সংবিধান, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ১০০ নম্বর, আন্তর্জাতিক ও চলতি বিষয়াবলি ১০০ নম্বর, সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সমাজ ও পরিবেশ এবং ভূগোল ১০০ নম্বর। তবে মৌলিক বিষয়ের মধ্যে গণিত রাখার সুপারিশ করা হয়নি।
বিসিএসের মূল লিখিত পরীক্ষায় আবশ্যিক বিষয় ছাড়াও সিলেবাসে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পঠিত কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান, বাণিজ্য এবং আইন ইত্যাদি গুচ্ছ থেকে ৬টি ঐচ্ছিক বিষয় (প্রতিটি ১০০ নম্বরের) অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করা হয়েছে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে। তবে, সংস্কার কমিশন বলেছে, কোনো গুচ্ছ হতে দুটির বেশি বিষয় বা পেপার নির্বাচন করা যাবে না।
এছাড়া, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণের ন্যূনতম নম্বর ৬০ শতাংশ নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল ব্রেকডাউনসহ প্রকাশ করা উচিত বলে অভিমত কমিশনের।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: র স প র শ কর পর ক ষ র ব স এস
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ধুলিস্যাৎ করা উচিত ছিল: হাসনাত আবদুল্লাহ
৫ আগস্টই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ধুলিস্যাৎ করা উচিত ছিল বলে মনে করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে ফ্যাসিবাদকে নির্মূলের পর তার প্রতীকগুলোকে রেখে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং ধানমন্ডি ৩২ এর বাড়িটি ৫ আগস্টেই ধুলিস্যাৎ করে দেওয়ার কথা ছিল। একটা ঘৃণাস্তম্ভে পরিণত করা দরকার ছিল। সেটি পরবর্তীতে এসে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে করেছে। শুক্রবার ফেসবুকে ভেরিফায়েড আইডিতে এক লাইভে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এখন আর এ দেশে নির্যাতকের জায়গা হবে না। বর্তমান আদর্শকে নিয়ে আওয়ামী লীগকে কোনোভাবে রাজনীতি করতে দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগকে অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এরপর তাদের নেতাকর্মীদের ‘রিকনসিলিয়েশনের’ মাধ্যমে সমাজের মূলধারায় যুক্ত করা যায় কিনা- সেটা আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করতে হবে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভেঙে ফেলার বিষয়ে হাসনাত বলেন, এই বাড়িটিকে আওয়ামী লীগের তীর্থস্থান বলা হয়। এই তীর্থস্থানকে জনগণ ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। এটা আটকানোর জন্য আওয়ামী লীগের কাউকে পাওয়া গেছে? কাউকেই পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ ২৬০ বিলিয়নের বেশি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকা দিয়ে এখন এ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। এই দেড় দশকে আওয়ামী লীগ নিপীড়কের শ্রেণিতে ছিল। আর বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ছিল। আওয়ামী পরবর্তী লড়াইটা অব্যাহত রাখতে হবে।
গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষকে নাগরিক নয়, বরং প্রজা বানিয়ে রেখেছিল বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে এ দেশে অপ্রাসঙ্গিক। দলটি প্রাসঙ্গিক থাকলে ৫ আগস্ট হতো না।
আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর মধ্যে অপরাধবোধ নেই বলে মনে করেন এই ছাত্রনেতা। তার মতে, তাদের মধ্যে কোনো ধরনের অপরাধ বোধ নেই। বরং এত মানুষকে হত্যা করার পরও তারা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বরং ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে প্রহসনের তিনটি নির্বাচন কিংবা দুই হাজার ছাত্র-জনতা হত্যার পরও তাদের মধ্যে কোনো ধরনের অনুতাপ নেই। তাদের মধ্যে কোনো ধরনের ভীতিই নেই। ৫ আগস্টের আগে আমরা ফেসবুকে কিছু লিখলে আমাদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু এখন তারা ফেসবুকে নানা ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্টের পর তারাই বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে। আওয়ামী লীগের আদর্শকে ধারণ করে পরবর্তীতে আর কেউ রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হতে পারবে না।
আমলা ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের আওয়ামী লীগ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। জনগণের ক্ষমতাকে আপনারা বুঝুন। রাষ্ট্র যে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ– এ বিষয়টাকে ধারণ করুন। আওয়ামী লীগ আপনাদের জনগণের বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছে। আপনারা এটা বুঝুন। আমি মন থেকে চাইবো, সচিবালয়ের পরিণতি যেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের মতো না হয়।