গাজীপুর নগরের আক্কাস মার্কেট থেকে টঙ্গী-জয়দেবপুর সড়ক ধরে কিছুদূর সামনে এগোলে হাতের ডানে দাক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ি। গাছপালায় ঢাকা বাড়িটির মূল ফটকে ঝুলছে দুটি তালা। বাড়ির সামনেই পড়ে আছে ভাঙা কাচ, কাঠ ও সিরামিকের ছোট ছোট টুকরা। বাড়ির আশপাশে স্থানীয় বাসিন্দাদের ৪০ থেকে ৫০টি বাড়ি। প্রায় প্রতিটি বাড়িই ফাঁকা। ফটকে ঝুলছে একাধিক তালা। সদাব্যস্ত সড়কটিতে নেই মানুষ বা যানবাহনের চলাচল। এ চিত্র গতকাল শনিবার বিকেল পাঁচটার।

গত শুক্রবার রাতে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পর থেকে আতঙ্ক বিরাজ করছে পুরো দাক্ষিণখান এলাকায়। পুলিশি হয়রানি বা গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছেন এলাকার অনেক বাসিন্দা। এর ফলে এলাকাটির বেশির ভাগ বাড়িতেই ঝুলছে তালা। রাস্তাঘাটেও নেই তেমন লোকজন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, ঘটনার রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। গতকাল ভোর থেকেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান অনেকে।

আরও পড়ুনগাজীপুরে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা, মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক ডেকে মারধরে আহত ১৫০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মোজাম্মেল হকের বাড়ির পশ্চিম পাশে স্থানীয় আবুল বাছেতের বাড়ি। টিনশেড বাড়িটির মূল ফটক বন্ধ। বেশ কয়েকবার ফটকে নাড়া দেওয়ার পর বেরিয়ে আসেন বাছেতের স্ত্রী ষাটোর্ধ্ব কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, ‘গতকাল এশার নামাজের পর হঠাৎ হুনি (শুনি) ভাঙচুরের শব্দ। মসজিদের মাইকে হুজুর মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়ছে বইল্যা ঘোষণা দেয়। এরপর হুড়মুড় কইর্যা মানুষ গিয়ে হামলা চালায়। পরে হুনি ছাত্ররা আহত হইসে। হেরপর থেইক্যা ডরে সবাই এলাকা ছাইড়্যা দিছে। আমরাও গেট বন্ধ রাখতাছি।’

কথা হলে মসজিদসংলগ্ন একটি বাড়ির নারী বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘটনার রাতেই মসজিদটিতে তালা দেওয়া হয়। এর পর থেকে সেটি তালাবদ্ধ। হয়রানির ভয়ে কেউ নামাজ পড়তেও যাচ্ছেন না।

আরও পড়ুনদিনভর বিক্ষোভ, ক্ষমা চাইল পুলিশ, সন্ধ্যায় ছাত্র গুলিবিদ্ধ ৮ ঘণ্টা আগে

আফিয়া বেগম নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘প্রত্যেক দিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সড়কে মানুষ হাঁটা-চলা করে। পোলাপান খেলাধুলা করে। কিন্তু আইজক্যা কেউ নাই। দেইখ্যা মনে সব শ্মশান হইয়্যা গেছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ম ম ল হক র ব এল ক য় আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ

ধর্ষণের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ।

সংগঠনের জেলা সভাপতি মুহাম্মাদ আলীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় বুধবার ফতুল্লার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড়ে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা ধর্ষণের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানান। এছাড়া, ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে প্রজ্ঞাপন জারির আহ্বান জানানো হয়।

মুহাম্মাদ আলী বলেন, বাংলাদেশে ধর্ষণ মহামারী রূপ নিয়েছে। প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে, ফলে জাতি ক্ষুব্ধ।

তিনি আরও বলেন, যদি দ্রুততম সময়ে ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করা হয়, তাহলে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কুরআনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শন করবে।

তিনি মাগুরার শিশু আছিয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আছিয়া মিডিয়ার কল্যাণে শিরোনাম হলেও, হাজারো আছিয়া অপরাধীদের শাস্তি ছাড়াই হারিয়ে যায়। তাই, দ্রুততম সময়ে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করার দাবি জানান।

বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শিক্ষক ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা রেজাউল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের সভাপতি আরিফুল ইসলাম, ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ