অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আসা বেড়েছে। প্রবাসীদের আস্থা অর্জন করায় গত ছয় মাসে আমরা প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক ধারা দেখতে পাচ্ছি। বর্তমান সরকারের সময়ে অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে ভালো দিক এটি।

তবে সরকার মোটাদাগে ব্যবসায়ীদের আস্থায় নিতে পারেনি। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে, তা আইন অনুযায়ী নিজস্ব গতিতে চলুক। কিন্তু ব্যবসায়ীদের কথাও সরকারকে শুনতে হবে। বাণিজ্য সংগঠনগুলোর বেশির ভাগই এখন প্রশাসক দিয়ে চলছে। এসব সংগঠনে নির্বাচন হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীরা তাঁদের সমস্যার কথা যথাযথ ফোরামে বলতে পারছেন না। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব বাড়লে বিনিয়োগে সুখবর আসবে না। বিনিয়োগ না হলে নতুন কর্মসংস্থানও বাড়বে না।

আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশের ব্যবসায়ীরা স্বস্তিতে না থাকলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। আইএমএফের পরামর্শে সরকার নতুন করে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ওপর কর–ভ্যাট বাড়িয়েছে। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না। সুদের হার বাড়িয়ে সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তারও সুফল দেখা যাচ্ছে না; বরং ব্যাংকগুলোর মুনাফা বেড়েছে তাতে। আর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অধিকার আদায়ের নামে ভাঙচুর–বিক্ষোভের বহু ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনার আগে আলোচনা করে সমাধান করা যায়। আমরা দেখছি, আইনশৃঙ্খলা কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যদি উন্নতি না হয়, তাহলে অর্থনীতিতে সুদিন ফিরবে না।

সরকার সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। এটা ভালো উদ্যোগ। তবে অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলা, কীভাবে সংস্কারগুলো বাস্তবায়িত হবে, তাতে লাভবান হবেন কারা—এসব বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দরকার। সমস্যা হলো সরকার নিজের কথা নিজে বলছে। অন্য কারও সঙ্গে কথা বলছে না। আমাদের চাওয়া হলো সরকার কথার চেয়ে কাজ বেশি করে দেখাক। যেমন সরকারের কাছ থেকে আমরা শুধু ডলার পাচার হওয়ার কথা শুনছি। এখন আমরা দেখতে চাই, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এনেছে সরকার। অন্তত একটা উদাহরণ তৈরি করা হোক।

সবচেয়ে বড় চাওয়া হলো সরকারের এখন নির্বাচনের আবহ তৈরি করা দরকার। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার আসবে। অন্তর্বর্তী সরকার অভিজ্ঞতাগুলো নতুন সরকারকে শেয়ার করবে। নির্বাচনের আবহ তৈরি হলে অর্থনীতিতে গতি আসবে।

— আমিরুল হক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রিমিয়ার সিমেন্ট ও সী কম গ্রুপ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলের জনগণকে আলাস্কায় নিয়ে যান: নেতানিয়াহু-ট্রাম্পকে সৌদি কর্মকর্তার উপহাস

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সৌদি আরবের ভেতরে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরামর্শকে উপহাস করেছেন দেশটির শুরা কাউন্সিলের সদস্য ইউসুফ বিন ত্রাদ আল-সাদুন। এর পরিবর্তে ইসরায়েলের জনগণকে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে এবং ‘দখল’ করার পর গ্রিনল্যান্ডে সরিয়ে নেওয়া উচিত বলে প্রস্তাব করেছেন তিনি।

 গত শুক্রবার সৌদি আরবের আরবি ভাষাভাষী সংবাদমাধ্যম ওকাজে লেখা এক প্রবন্ধে আল-সাদুন এই প্রস্তাব করেন। এতে তিনি ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নীতির সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ট্রাম্পের বিভিন্ন বেপরোয়া সিদ্ধান্তে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ উপেক্ষা করা হয়েছে এবং সংলাপের প্রয়োজনীয়তা বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে।

সতর্ক করে সৌদি শুরা কাউন্সিলের এই সদস্য বলেন, ‘জায়নাবাদী ও তাদের মিত্ররা’ রাজনৈতিক কৌশল ও সংবাদমাধ্যমের চাপের মাধ্যমে রিয়াদের নেতৃত্বকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারবে না।

আরও পড়ুনসৌদি আরবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে নেতানিয়াহুর মন্তব্যের কড়া জবাব দিল রিয়াদ৫ ঘণ্টা আগেইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

সম্পর্কিত নিবন্ধ