যুদ্ধবিরতির মধ্যেই লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৬
Published: 9th, February 2025 GMT
লেবাননের পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ছয়জন নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন। ইসরায়েল আর হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার লেবাননের পূর্বাঞ্চলের বেক্কা অঞ্চলের জেন্নাতা শহরের কাছে শারা এলাকা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। দেশটির জাতীয় সংবাদ সংস্থার খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, হিজবুল্লাহর কৌশলগত অস্ত্রের উৎপাদন ও সংরক্ষণাগারকে এই হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ওই লক্ষ্যবস্তুতে যে ধরনের কর্মকাণ্ড চলছিল, তা ইসরায়েল আর লেবাননের মধ্যকার সমঝোতার স্পষ্ট লঙ্ঘন। দুই পক্ষের মধ্যে গত ২৭ নভেম্বর যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েল ও লেবাননের হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত বন্ধ হয়।
চুক্তি কার্যকরের পরও বিভিন্ন সময় লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েল বারবার দাবি করে এসেছে, তারা লেবাননে হিজবুল্লাহর স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মেনে হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীর পাশাপাশি দেশটির সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
লেবাননের পূর্বাঞ্চলের বেক্কা উপত্যকায় বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির ওই এলাকায় হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি লেবানন-সিরিয়া সীমান্তে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত দুজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করে, তারা হিজবুল্লাহর একাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
ওই সময়ে বিমান হামলার সমালোচনা করে হিজবুল্লাহর কর্মকর্তা ইব্রাহিম মাউসাওয়ি বলেন, ‘এটা খুবই বিপজ্জনক লঙ্ঘন এবং ভয়ানক ও স্পষ্ট আগ্রাসন।’ তিনি লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলা বন্ধের আহ্বান জানান।
যুদ্ধবিরতির মধ্যে লেবাননে বিমান হামলা চালাল ইসরায়েললেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন নিয়ে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর লেবাননে এখন কী হবে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সড়ক অবরোধমুক্ত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে সেনাবাহিনী
সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করলে দেশের অর্থনীতিসহ সব সেক্টরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সড়ক অবরোধমুক্ত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে থাকে সেনাবাহিনী। যত কম সময়ের মধ্যে মুক্ত করা যায়– এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিগত সময়ে শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী ১৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। ৩১ বার বিভিন্ন মূল সড়ককে অবরোধ থেকে অবমুক্ত করেছে।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৮২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। গত দুই মাসে নিয়ন্ত্রণ করেছে ২৩২টি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ৩৭টি, সরকারি সংস্থা ও অফিস-সংক্রান্ত ২৪টি, রাজনৈতিক কোন্দল ৭৬টি এবং অন্য ঘটনা ৯৫টি।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ বিদেশি কূটনীতিক ও দূতাবাসগুলোর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্বও সুষ্ঠুভাবে পালন করে যাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগে সেনাবাহিনী কোনো বাধা পাচ্ছে না। এই ক্ষমতা যেখানে যতটুকু ব্যবহারের দরকার, সেটা করা হচ্ছে। অপরাধী গ্রেপ্তারের পর অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের পর বিচারকার্যে সেনাবাহিনীর কিছু করার থাকে না।
গুজবে সেনাবাহিনী বিচলিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী একতাবদ্ধ হয়ে সরকারের নির্দেশে দেশ-জাতির পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সততা, ন্যায়নীতি, প্রত্যয় ও সহনশীলতার সঙ্গে এটি করা হচ্ছে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগেও দেখেছেন মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে দীর্ঘ মিছিলে কালো পতাকাধারীদের রহিত করেছে সেনাবাহিনী। কালো পতাকাধারী হলেই জঙ্গি, এর প্রমাণ পাইনি। তবে এ ব্যাপারে সেনাবাহিনী সোচ্চার আছে।
সেনাপ্রধানের রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সফর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশে সেনাবাহিনী প্রধানের সফর একটি ‘রুটিন অ্যাফেয়ার’। সেখানে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে। বেশ কিছু মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রি পরিদর্শন করেছেন। এতে আমাদের সামরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রগাঢ় হবে বলে বিশ্বাস করি।