মাদ্রিদ ডার্বিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি, লাভ বার্সেলোনার
Published: 9th, February 2025 GMT
বার্সেলোনা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক যদি রিয়াল মাদ্রিদ-আতলেতিকো মাদ্রিদ ম্যাচটি দেখে থাকেন, তাহলে কিলিয়ান এমবাপ্পের গোল দেখে খুশিই হওয়ার কথা। না, রিয়ালের ফরাসি তারকার গোলের সঙ্গে এই জার্মান কোচের বিশেষ কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্কটা এখানে রিয়ালের প্রতি সমর্থন বা আতলেতিকোর প্রতি বিরোধিতারও নয়।
গত রাতে লা লিগার ডার্বি ম্যাচে মাদ্রিদের দুই ক্লাব যখন মুখোমুখি, তখন বার্সেলোনার জন্য চাওয়া ছিল পয়েন্ট ভাগাভাগি। ৩৫ মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজের গোলে আতলেতিকো এগিয়ে যাওয়ার পর ৫০ মিনিটে এমবাপ্পের ওই গোলেই ম্যাচে সমতা আনে রিয়াল। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের সমাপ্তির বাঁশিও বেজেছে ওই ১-১ সমতায়ই। পয়েন্ট ভাগাভাগির এমন স্কোরলাইনে রিয়াল-আতলেতিকো পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে না পারলেও বার্সেলোনার শতভাগ খুশিই হওয়ার কথা। মাদ্রিদ ডার্বিতে সবচেয়ে বেশি লাভ যে বার্সারই হয়েছে।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ম্যাচটিতে নামার সময় রিয়ালের পয়েন্ট ছিল ২২ ম্যাচে ৪৯, সমান ম্যাচে আতলেতিকোর ৪৮। লিগ শিরোপা দৌড়ে এগিয়ে যেতে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। জিতলেই অপর দল থেকে একাধিক পয়েন্টে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ। কিন্তু সেই সুযোগটা রিয়াল, আতলেতিকো কোনো দলই কাজে লাগাতে পারল না।
লা লিগা পয়েন্ট তালিকায় বার্সেলোনার অবস্থান তিনে, ২২ ম্যাচে পয়েন্ট ৪৫। মাদ্রিদ ডার্বিতে যে কোনো এক দল জিতলেই স্পষ্টতই বার্সার সম্ভাবনা কমে যেত।
আতলেতিকো জিতলে দলটি বার্সার চেয়ে এগিয়ে থাকত ৬ পয়েন্ট, রিয়াল জিতলে ৭ পয়েন্টে। তবে দুই দলই পয়েন্ট ভাগাভাগি করায় পয়েন্ট এখন বার্সেলোনার নাগালেই আছে। আজ রাতে কাতালান ক্লাবটি যদি নিজেদের ২৩তম ম্যাচে সেভিয়াকে হারাতে পারে, তাহলে আতলেতিকোর সঙ্গে ব্যবধান থাকবে মাত্র ১ পয়েন্টের, রিয়ালের সঙ্গে ২।
লিগ শিরোপার লড়াই জমিয়ে তোলার বাইরে গতকাল রাতের মাদ্রিদ ডার্বি একটি বিতর্কও দেখেছে। ম্যাচের প্রথমার্ধে আতলেতিকো মাদ্রিদ যে গোলে এগিয়ে যায়, সেটি এসেছে পেনাল্টি থেকে। আর পেনাল্টিটা এসেছে অঁরেলিয়ে চুয়েমেনির ফাউল থেকে। রিয়ালের ফরাসি ডিফেন্ডার বক্সে আতলেতিকোর স্যামুয়েল লিনোকে ফাউল করেন। রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। তবে চুয়েমেনি যখন লিনোকে পায়ে আঘাত করেন, ততক্ষণে বল সরে গেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় রিয়াল ডাগআউট থেকে। ম্যাচ শেষে এ নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি, ‘আমি রেফারি নিয়ে কথা বলতে চাই না। পেনাল্টি দিয়েছিল ভিএআর। রেফারি খুব কাছ থেকেই ঘটনা দেখেছিল। আমি এ রকম আরেকটা পেনাল্টি দেখলাম অ্যাথলেটিক-জিরোনা ম্যাচে। (আসলে) ফুটবলের মানুষজন এ সব বুঝে না। আমি এখন বিতর্কের মধ্যে যেতে চাই না, যেটা এর মধ্যেই অনেক বড় হয়ে গেছে।’
রিয়ালের পরবর্তী মনোযোগ চ্যাম্পিয়নস লিগ ঘিরে। মঙ্গলবার নকআউট প্লে-অফের প্রথম লেগে ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে রিয়াল।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার, ক্লাস শুরু ৪ মে
সংঘর্ষের জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার রাতে কুয়েটের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া সভায় শিক্ষার্থীদের জন্য ২ মে হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে ৪ মে।
কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ জানান, সোমবার রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ১৯ ফেব্রুয়ারি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানো নির্দেশ দেওয়া হয়।
তিনি জানান, সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম ৪ মে থেকে শুরু এবং সকল আবাসিক হল ২ মে থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে এতে সন্তুষ্ট হয়নি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা হল না খোলা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
হল না খোলা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থানের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের: তবে হল না খোলা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ৩টা থেকে তারা সেখানে অবস্থান করছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের দাবি ছিল আজ সোমবার রাত থেকেই হল খুলে দেওয়ার। এছাড়া সিন্ডিকেট সভা শেষে তারা অপেক্ষা করছিলেন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তের বিষয়গুলো তাদের জানাবে। কিন্তু কেউ তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্তগুলো জানাননি। হল খোলা ও একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর অনেক দিন দেরি রয়েছে। একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া হলে থাকতে না পারায় তাদের টিউশনি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।