দুই অটোরিকশার সংঘর্ষে স্বামী নিহত, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ আহত ৬
Published: 9th, February 2025 GMT
হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলায় দু’টি সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ইউসুফ মিয়া (৩৫) নামে একজন নিহত ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ ৬ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে এসব তথ্য দেন লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বন্দে আলী। এর আগে বিকেলে উপজেলার শালদিঘা এলাকায় হবিগঞ্জ-লাখাই সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ইউসুফ মিয়া লাখাই উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের আছমত আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, যাত্রীবাহী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা হবিগঞ্জ জেলা সদর থেকে যাত্রী নিয়ে লাখাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৪ টায় শালদিঘা (পাউন্যা সড়ক) এলাকায় যাওয়ার পর বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি অটোরিকশার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ইউসুফ ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন বেগমসহ দুই অটোরিকশায় থাকা ৬ জন আহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাদের হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক ইউসুফকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী জানান, ইউসুফ তার ৭ মাসের অসুস্থ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে গত তিনদিন অবস্থান করছিলেন। শনিবার বিকেলে ছুটি পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনা কবলিত হন।
আহতদের মধ্যে ইয়াসমিন নামে একজন জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তোফায়েল মিয়া (৭০) ও পারভেজ মিয়া (২৬) নামে দুইজনসহ অন্যান্যদের সেখানে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ঢাকা/মামুন/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন ইউস ফ
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক এমপি ভাষাসৈনিক চৌধুরী আব্দুল হাই আর নেই
হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি ভাষাসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ২৮ পঞ্চায়েত সভাপতি চৌধুরী আব্দুল হাই (৮৬) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকাল প্রায় ৯টা ৪০ মিনিটের সময় আমেরিকার নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
তার জন্ম হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড় বহুলা গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৯ সালের ২১ মার্চ। বাবা মৃত চৌধুরী আব্দুল গণি ও মা মরহুমা আছিয়া খাতুন চৌধুরী। তিনি হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে সাধারণ ও অতিরিক্ত গণিতে লেটার মার্কসহ প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে বার কাউন্সিলে ও হবিগঞ্জ অ্যাডভোকেট সমিতিতে এনরোলড হন।
১৯৬৫ সালে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করে ভাসানী ন্যাপের হবিগঞ্জ মহকুমার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি মোজাফ্ফর ন্যাপে যোগদান করে হবিগঞ্জে সভাপতির দায়িত্ব চালিয়ে যান। ১৯৮৬-৮৭ সালে আট দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে হবিগঞ্জ-লাখাই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সালে প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, বিভিন্ন অধিকার আদায় আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ এবং হবিগঞ্জবাসীর সুখ-দুঃখের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তিনি ভ্রমণ করেছেন ভারত, থাইল্যান্ড, সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া) ও আমেরিকা।
তিনি একজন ত্যাগী ভাষাসংগ্রামী। তার যুগান্তকারী ভূমিকায় ভাষা আন্দোলনে হবিগঞ্জের ছাত্ররা সোচ্চার হয়ে উঠেছিল।
হবিগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্ররা বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে শুরু করেন আন্দোলন। এ সময় তিনি ছাত্রদের মধ্যে প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন। সবার সার্বিক সহযোগিতায় হবিগঞ্জের ছাত্র-জনতা মিলে যখন আন্দোলনে ব্যস্ত, ঠিক সে মুহূর্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ভাষাসংগ্রামী মো. আবিদ আলী হবিগঞ্জে আসেন এবং চৌধুরী আব্দুল হাইকে সঙ্গে নিয়ে কোর্টস্টেশন রোড এলাকায় প্রথম সভা আহ্বান করেন। একপর্যায়ে ঢাকায় এসে ভাষাসংগ্রামীদের সঙ্গে তিনিও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
তিনি মুক্তিযুদ্ধেরও সংগঠক। হবিগঞ্জ জেলা বারের সভাপতি ও সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জের প্রিয়মুখের একজন। তার মৃত্যুর খবরে দেশ-বিদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঢাকা/মামুন/টিপু