হিমাগারে আলু রাখতে এ বছর কেজিপ্রতি ১ টাকা করে বেশি গুনতে হবে চাষিকে। গত বছর প্রতি কেজির ভাড়া ছিল ৭ টাকা, এবার তা ৮ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ)। সব খরচ হিসাব করে মৌসুমভিত্তিক (এককালীন) এই ভাড়াকে যৌক্তিক বলছেন সংগঠনের নেতারা।

শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিএসএর নেতারা দাবি করেন, বর্তমানে উচ্চ ঋণের সুদহার, বিদ্যুৎ বিল, মজুরিসহ অন্যান্য খরচ যেভাবে বেড়েছে, তাতে ভাড়া কমানোর সুযোগ নেই। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী।

তিনি জানান, সারাদেশে এখন হিমাগার রয়েছে প্রায় ৪০০। ব্যাংক ঋণ ও অন্যান্য পরিচালন খরচের ধাক্কা সামলাতে না পেরে এর মধ্যে তিন শতাধিক হিমাগার রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এদের মধ্যে কিছু হিমাগার এরই মধ্যে ঋণখেলাপি হয়েছে। তিনি বলেন, হিমাগারে আলু আনা-নেওয়া (লোডিং-আনলোডিং), কর্মীর বেতন-ভাতাসহ আনুষঙ্গিক সব খরচই বেড়েছে। এসব খরচ বিবেচনায় নিয়ে এ বছর আলু সংরক্ষণে কেজিপ্রতি ভাড়া দাঁড়ায় ৯ টাকা ৬২ পয়সা। চাষি ও সংরক্ষণকারী ব্যবসায়ীর আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় ভাড়া ৮ টাকা নির্ধারণ করেছে সমিতি। এই ভাড়া যৌক্তিক কিনা, তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যাচাই করতে পারে।

মোস্তফা আজাদ বলেন, হিমাগারে ৫০ কেজির বস্তায় আলু সংরক্ষণের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। গত বছর কেজিপ্রতি ৭ টাকা করে ৫০ কেজির বস্তার ভাড়া নেওয়া হয় ৩৫০ টাকা। তবে দেখা গেছে, অতীতে অনেক ব্যবসায়ী এ নিয়ম না মেনে ৭০ থেকে ৭২ কেজি আলু বস্তায় ভরে হিমাগারে রেখেছেন। তারাও ভাড়া দিয়েছেন ৩৫০ টাকা করে। সেই হিসাবে তাদের কেজিতে খরচ হয়েছে ৫ টাকার মতো। এবার এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ কারণেই একটি মহল অপপ্রচার ও ভাড়া কমানোর আন্দোলন করছে।

হিমাগার মালিকরা জানান, দেশে আলুর চাহিদা প্রায় ৯০ লাখ টন। এর মধ্যে হিমাগারের ধারণক্ষমতা ৪৫ টনের মতো। চলতি বছর আলু উৎপাদন হতে পারে ১ কোটি ২০ লাখ টনের মতো। সেই হিসাবে বিপুল পরিমাণে আলু হিমাগারের বাইরে থাকবে এবং পণ্যটির দাম সেভাবে বাড়বে না। এতে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। এমন বাস্তবতায় উদ্বৃত্ত আলুর রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

হিমাগার ভাড়া কৃষকদের সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পাঁচটি দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। সেগুলো হলো– ঋণের সুদহার ১৭ শতাংশ (দণ্ডসুদসহ) থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করা, বিদ্যুৎ বিলের ইউনিটপ্রতি খরচ কমিয়ে ৫ টাকা করা, হিমাগারের বিভিন্ন ব্যয়ের ওপর ভ্যাট ও উৎসে কর প্রত্যাহার, ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় তিন মাসের বদলে বার্ষিক করা এবং হিমাগার খাতকে কৃষি শিল্প ঘোষণা করা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আল

এছাড়াও পড়ুন:

দুই নারীর কীর্তির সাক্ষী চার শ বছরের পুরোনো দুই মসজিদ

ছবি: প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ