সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পবিত্র হজ সামনে রেখে নিরাপত্তা ও বাড়তি ভিড় এড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ নিল সৌদি আরব। বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের মাল্টিপল ভিজিট ভিসা সাময়িক স্থগিত করেছে দেশটির সরকার। পহেলা ফেব্রুয়ারিতে কার্যকর করা ভিসা নীতির অধীনে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে এই দেশগুলোর জন্য সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা চালু রাখা হয়েছে।

গত বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এবার হজের আগেই বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি আরব। হজের মৌসুমে অনুমোদনহীন হজযাত্রীর ভিড় ও নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে বাংলাদেশসহ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের ১৪টি দেশের নাগরিকদের এক বছরের মাল্টিপল ভিজিট ভিসা বা একাধিকবার প্রবেশের ভিসা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

এ ১৪টি দেশের সাধারণ নাগরিক সর্বোচ্চ ৩০ দিনের একক প্রবেশ ভিসা পাবেন। কূটনৈতিক, আবাসিক, হজ এবং ওমরাহ ভিসার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আসবে না।

তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো হলো- আলজেরিয়া, মিশর, ইথিওপিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, জর্ডান, মরক্কো, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, সুদান, তিউনিসিয়া ও ইয়েমেন। মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা স্থগিত করা একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার।

হজের কার্যক্রম শেষ হলে এ সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করছেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা। তারা বলেন, হজের কারণে হয়তো সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হজের কার্যক্রম শেষ হলে এ সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হতে পারে।

মূলত একাধিক প্রবেশ ভিসার অপব্যবহার রোধ করতেই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। গত বছর, ২০২৪ সালে হজের সময় অতিরিক্ত ভিড় এবং তীব্র গরমে প্রায় বারো’শ হজযাত্রী মারা যান। এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই এ বছরে পবিত্র হজের আগেই কর্তৃপক্ষ নতুন ভিসা নীতির কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

বিএইচ

.

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: পদক ষ প

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার নিয়তের বিধান কী

 ‘নিয়ত’ অর্থ ইচ্ছা বা সংকল্প করা। নিয়ত করা রোজার একটি অন্যতম রোকন। সুতরাং নিয়ত করা জরুরি। প্রতিটি ফরজ ইবাদতের মতো রোজার জন্যও নিয়ত করা ফরজ এবং রোজা বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত। নিয়ত সম্পর্কে রোজা রাসুল (সা) বলেন, ‘নিশ্চয় সমস্ত আমল নিয়তের ওপরই নির্ভরশীল। ব্যক্তি যা নিয়ত করে তা-ই সে পায়।’ (বুখারি, হাদিস: ১)

 নিয়তের পদ্ধতি

রোজা আদায়ে ইচ্ছুক ব্যক্তি রোজা শুরু করার সময় যেই রোজা পালনের ইচ্ছা করছে, তা তার অন্তরে উপস্থাপন করবে। যেমন: অন্তরে নির্ধারণ করবে যে, আমি রমজানের রোজা রাখছি অথবা কাজা রোজা আদায় করছি কিংবা মান্নত বা কাফ্ফারার রোজ পালন করছি। অথবা ‘আমি আগামীকাল রোজা রাখব’ কিংবা নফল রোজা হলে দিনের বেলা ‘আজ রোজা রাখব’—এভাবে নিয়ত করলেও যথেষ্ট হবে।

 রাসুল (স.) ও সাহাবিদের কারও থেকে ‘নাওয়াইতু আন আসুমা’ বা ‘নাওয়াইতু আন উসল্লি’—এ-জাতীয় নিয়ত করার বর্ণনা পাওয়া যায় নি। তবে একদল আলেম মুখে নিয়ত করাকে উত্তম বলেছেন। (ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৩৪৫)

রোজার নিয়তে সাহরি খাওয়া যথেষ্ট, এতে নিয়তের কাজ হয়ে যাবে। কেননা, রোজাদার রাতের খাবার রোজা রাখার ইচ্ছায় খায়। তবে সাহরি খাওয়ার সময় রোজা রাখার ইচ্ছা না থাকলে তা নিয়ত বলে গণ্য হবে না। (কিতাবুল ফিকহ, ১/৮৮১)

নিয়ত কখন করতে হবে

 ফরজ রোজার নিয়ত রাত থেকেই করতে হবে। আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি সুবহে সাদেক উদয় হওয়ার পূর্বে রাতেই রোজার রাখা স্থির করে না, তার রোজা বিশুদ্ধ হয় না।’ (দারাকুতনি. ২/১৭২; বাইহাকি, ৪/২০২)

 তবে নিয়ত করার বিষয়টি মনে না থাকলে দিনে যখন মনে হবে, তখনই নিয়ত করে নিলেও হয়ে যাবে। শর্ত হলো নিয়ত অর্ধদিবসের পূর্বে হওয়া এবং ততক্ষণ রোজার পরিপন্থী কোনো কাজ সংঘটিত না হওয়া। (ফাতাওয়া দারুল উলুম, ৬/৩৪৬, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১৯৬; আল-বাদায়েউস সানায়ে, ২/২২৯)

 রমজানে প্রতিদিনই রোজার নিয়ত করতে হবে। এক দিন নিয়ত করলে পুরো রমজানের জন্য তা যথেষ্ট হবে না। (ইলমুল ফিকহ, ৩/১৮)

আরও পড়ুনরোজার তাৎপর্য, ইতিহাস ও উদ্দেশ্য০২ মার্চ ২০২৫

নফল রোজার নিয়ত দিনের বেলায় করাও বৈধ। আয়েশা রা. বলেন, একদিন রাসুল (স.) এসে আমাকে বললেন, তোমার কাছে খাওয়ার কি কিছু আছে? আমরা বললাম, না। তখন তিনি বললেন, তাহলে আমি রোজা রাখলাম। (মুসলিম: ১১৫২ )

 রাসুলের (সা.) খাবার চাওয়া থেকে অনুমিত হয় তিনি পূর্ব থেকে রোজা রাখার নিয়ত করেননি। এই হাদিস নফল রোজার জন্য প্রযোজ্য হবে। কেননা, নফলের ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা ফরজের তুলনায় বেশি। এক্ষত্রেও শর্ত হলো নিয়ত অর্ধদিবসের পূর্বে হওয়া এবং নিয়তের সময় পর্যন্ত রোজার পরিপন্থী কোনও কাজ সংঘটিত না হওয়া। কিন্তু যদি এমন হয় যে, সারা দিন পানাহার করে নি আবার রোজা রাখার ইচ্ছাও তার ছিল না, তাহলে রোজা হবে না। (ফাতাওয়া দারুল উলুম, ৬/৩৪৬)

আরও পড়ুনযে কারণে রোজা ভেঙে যায়০৪ মার্চ ২০২৫

দুটি কথা মনে রাখতে হবে

 ১. রোজা যেহেতু সুবহে সাদিক হতে শুরু হয়, তাই ফজর উদয় না হওয়া পর্যন্ত পানাহার বা যৌনকর্মে আপত্তি নেই। রাতের বেলায় মনে মনে রোজা রাখার ইচ্ছা নিয়ে শুয়ে পড়লে তার জন্য ফের নিয়ত করার প্রয়োজন নেই। অনেকে রাতের শুরুতে বা মাঝামাঝি সময়ে সাহরি খেয়ে শুয়ে পড়েন এবং মনে করেন, রোজার নিয়ত করার পর বা সাহরি খাওয়া পর আর পানাহার করা যাবে না—এমন ধারণা সঠিক নয়। সুবহে সাদিক উদয় না হওয়া পর্যন্ত পানাহার করতে কোনও দোষ নেই, অপবিত্র হলেও অসুবিধা নেই। তাতে নিয়তের কোনও ক্ষতি হবে না এবং রোজারও নয়। (বুখারি, হাদিস: ১,৮২৯ ও ১,৯২৬; মুসলিম, হাদিস: ১,১০৯; হাশিয়ায়ে ফাতাওয়া দারুল উলুম, ৬/৪৪৬; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১৯৬)

একই বিধান হায়েজ ও নেফাসগ্রস্ত নারীদের বেলায়ও। ফজর হওয়ার পূর্বেই যদি তারা পবিত্র হয়ে যায়, তবে গোসল না করেই নিয়ত করে নেবে। (হাকাযা কানান নাবিয়্যু সা. ফি রমাদান, ৪৩)

 দুই. দিনের দ্বিপ্রহরের আগে রোজার নিয়ত করা না হয়ে থাকলে সেই রোজা সহিহ হবে না বটে, কিন্তু রোজাহীন অবস্থায় দিনের বাকি সময়ে পানাহার করা রমজানের মর্যাদা বিরোধী এবং তা বৈধ নয়। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, ১/১৭৩)

আরও পড়ুনইফতারের দোয়া আরবি ও বাংলা উচ্চারণ, অর্থসহ০৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ