Samakal:
2025-02-09@05:00:43 GMT

অর্থনীতিকে টেনে তুলব কীভাবে?

Published: 9th, February 2025 GMT

অর্থনীতিকে টেনে তুলব কীভাবে?

বিপ্লব আর গণঅভ্যুত্থান বলুন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সরকারের ছয় মাস অতিবাহিত হয়েছে। অর্থনীতি নিয়ে একটি পত্রিকা শিরোনাম করেছে– পতন থেমেছে, স্বস্তি আসেনি। যদিও নতুন কত্তারা বলছেন– জুন নাগাদ স্বস্তি ফিরে আসবে; অনেকেরই আস্থায় ঘাটতি আছে।

ইতোমধ্যে দেশে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগে (এফডিআই) বড় ধরনের পতন হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় নিট বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে প্রায় ৭১ শতাংশ, যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিনিয়োগ কমার পেছনে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাকেই দায়ী করেছেন ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা।

আমরা জানি, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই দেশজুড়ে ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তৈরি হয় নতুন পরিস্থিতি। এর পরও কাটেনি অস্থিরতা। নানা দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন এমনকি সামান্য কয়েকজন মিলেই বারবারই পথে নেমেছে।

শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে বিনিয়োগের পরিবেশ নেই। এমনকি গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের ধারাবাহিকতার কারণে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তা ছাড়া বিনিয়োগে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকের উচ্চ সুদহার। নতুন বিনিয়োগে যাচ্ছেন না দেশীয় বিনিয়োগকারীরা। বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

ধরতে গেলে দু-তিন বছর ধরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে বা ছিল। গেল জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পরিস্থিতি ছিল অস্থিতিশীল। এতে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস কমে যায়, তারা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন। অনেকেই বলেছেন, পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত তারা ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’ নীতি গ্রহণ করেছেন।

দুই অর্থবছর ধরেই সামষ্টিক অর্থনীতির কিছু বিষয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে; যেমন– মূল্যস্ফীতির কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়া, ডলারের বাজারে অস্থিতিশীলতার কারণে মূলধন কমে যাওয়া এবং আমদানিতে প্রভাব পড়া। এসবের সঙ্গে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে অভ্যুত্থান-পরবর্তী অস্থিরতা যোগ হয়। ফলে উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটে এবং জোগান বাধাগ্রস্ত হয়। ঘন ঘন নীতির পরিবর্তনও বিদেশি বিনিয়োগ কমার অন্যতম কারণ।

বিনিয়োগ যে কমছে, তার চিত্র দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্যেও। ২০২১ সালে ১ হাজার ৮৩টি ব্যবসা প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৩৩৪ কোটি ৫১ লাখ ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব নিবন্ধন হয়েছে। পরের বছর ১ হাজার ৮১টি ব্যবসা প্রকল্প নিবন্ধনের মাধ্যমে ১ হাজার ২৮৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল। ২০২৩ সালে আরও কমে ব্যবসার ৯৯৮টি প্রকল্পে ৮৯৭ কোটি ৮৫ লাখ ডলার হয়। ২০২৪ সালে ব্যবসার ৭৪২টি প্রকল্পে ১ হাজার ১৬৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ নিবন্ধন হলেও এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ২৫৪টি প্রকল্পে ৬৬৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার হয়। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তা কমে ১৮৬টি প্রকল্পে মাত্র ১৮৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার হয়।

বিনিয়োগ কমার চিত্র পরিষ্কার হ­য়েছে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির মাধ্যমেও। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই-নভেম্বরে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির ঋণপত্র বা এলসি খোলা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ শতাংশ কমেছে। একইভাবে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির ঋণপত্র নিষ্পত্তি কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বেকারের সংখ্যা এখন ২৬ লাখ ৬০ হাজার। আগের বছর দেশে বেকার জনগোষ্ঠী ছিল ২৪ লাখ ৯০ হাজার। তার মানে, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেকার বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার। বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৪.

৪৯ শতাংশ; গত বছর তা ছিল ৪.০৭ শতাংশ।

ব্যবসায়ী নেতাদের অনেকেই বলেছেন, বর্তমানে দেশে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট, সুদের অধিক হারসহ ব্যাংকগুলোর অসহযোগিতার কারণে বিনিয়োগ কমছে। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধিও ব্যাপক কমেছে। গত নভেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৬৬ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধি গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

যদিও আগামী মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা রয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানো অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দফায় দফায় নীতি সুদহার বেড়ে ৯ শতাংশ থেকে এখন ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমেছে। সুদের হার বাড়ার কারণেও অনেকে বিনিয়োগ থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন।

সুদহার বাড়ানো ছাড়াও ব্যবসা ও বিনিয়োগে খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে রয়েছেন ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা। অনেকে টিকে থাকার লড়াই করছেন। ব্যবসায়ীদের অনেকেরই সমালোচনা– যখন বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের কথা আসে তখন তারা দীর্ঘদিন ধরে সংকুচিত মুদ্রানীতি অনুসরণ করেছেন। আবার যখন সরকারের ঋণের বেলায় আসে তখন কিন্তু সংকোচন নেই।

মোদ্দাকথায়, নানা সংকটে ব্যবসা-বাণিজ্যে এখন বিরাট প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে বা হয়েছে। একটি হলো আইনশৃঙ্খলাজনিত, আরেকটি ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতাজনিত। সবটার মূলেই আছে রাজনীতি। তাই অর্থনীতি ঠিক করতে, বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে আগে রাজনীতি ঠিক করতে হবে।
আমরা জানি, দেশি বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিলে বিদেশি বিনিয়োগ এমনিই বাড়বে। কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করার আগে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের জিজ্ঞেস করেন– দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি কেমন।

১৫-২০ বছর ধরে আমরা প্রশ্ন করে আসছি, কেন বাংলাদেশে অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বিনিয়োগ হচ্ছে না? বিনিয়োগকারীদের একটা কমন প্রশ্ন থাকে, করের হার আসলে কত? কোনো বেঞ্চমার্ক নেই। বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স রেট আরোপ করায় কার্যকর মৌলিক করহারের কাঠামো নেই। অন্যদিকে উচ্চ করের সঙ্গে আছে অসংগত নীতিমালা। নীতি পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে যখন-তখন। এতে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে অর্থনীতিসংক্রান্ত একমাত্র টাস্কফোর্স ৩১টি সুপারিশ প্রণয়ন করেছে।

সুপারিশগুলোতে প্রস্তাব রয়েছে– ১০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ পণ্য রপ্তানির সক্ষমতা রয়েছে এমন ১৫শ কোম্পানিকে বিশেষ নীতির আওতায় আনা, এসএমই খাতকে সমর্থন করতে ‘ঢাকা হাট’ প্রকল্প স্থাপন, আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য বিদেশি বিনিয়োগ উদ্বুদ্ধ করা এবং বিভিন্ন শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ। এই প্রতিবেদনে দেশের বিনিয়োগযোগ্য খাতগুলোর বিশদ বিবরণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের উন্নয়ন এবং সরকারি দপ্তরগুলোর প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরা হয়েছে।

দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হলে সরকারি-বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। সরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে আবার সরকারের আয় বাড়াতে হবে। অনাবশ্যকীয় খরচ কমাতে হবে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে আর্থিক খাতে তারল্য বাড়াতে হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিসহ বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে হবে। উৎপাদনশীলতা বাড়াতে লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। শিক্ষার মানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। বিনিয়োগ সম্পর্কিত নিয়মনীতির আধুনিকায়ন করতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশের সরকার যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের ব্যাপারে সত্যিই সিরিয়াস, প্রতিটি ক্ষেত্রে তার প্রমাণ রাখতে হবে। যখন-তখন কারখানা ভাঙচুর আর রাস্তা অবরোধের সংস্কৃতিকে জাদুঘরে পাঠিয়ে দিতে হবে।

মামুন রশীদ: অর্থনীতি বিশ্লেষক

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বছর র একই ব ন য় গ কম পর স থ ত ব সরক র ব যবস য় সরক র র প রকল প র জন ত আমদ ন ম লধন

এছাড়াও পড়ুন:

রাজস্ব বাড়াতে বড় পরিকল্পনা

দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে কমতে পারে বৈদেশিক সহায়তা। বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হতে পারে। এরই আলোকে আগামী তিন অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে ২০ লাখ ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের(এনবিআর) আওতায় আদায়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ১৮ লাখ ৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। 

রাজস্ব আদায় বাড়াতে এই বড় পরিকল্পনার তথ্য জানা গেছে অর্থ বিভাগ ও এনবিআর সূত্রে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তৈরি এক প্রাক্কলনে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে রাজস্ব খাত থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর থেকে আসবে ৫ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। একইভাবে ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয় প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। একই অর্থবছরে এনবিআর থেকে আসবে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর থেকে আদায়ের পরিকল্পনা ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

এদিকে, বাজেট পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিবছর বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে মূল লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, সেটি অর্জন করা তো দূরের কথা, সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও অধিকাংশ ক্ষেত্রে অর্জন করা সম্ভব হয় না। গত আট অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এর মধ্যে এনবিআরের আওতাধীন রাজস্ব ঘাটতিই সবচেয়ে বেশি। আর এই ধরনের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাকে একধরনের ‘সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে অর্থমন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ( আইআরডি)’।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সম্পাদিত বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তিতে (এপিএ) বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করতে গিয়ে এমন অভিমত ব্যক্ত করেছে আইআরডি।

কাক্ষিতমাত্রায় কর আদায়ে মোটা দাগে চারটি সমস্যার কথা উল্লেখ করেছে আইআরডি। এগুলো হচ্ছে—কর পরিসর সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে জরিপ কার্যক্রমে পদ্ধতিগত সমন্বয়হীনতা ও দীর্ঘসূত্রিতা; আন্তঃকর ব্যবস্থাপনায় তথ্য বিনিময়ের অপ্রতুলতা; দক্ষ জনবলের স্বল্পতা ও ভৌত অবকাঠামোসহ প্রয়োজনীয় সুবিধাদির অভাব।
অন্যদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর মতে, সংস্থাটির সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জনবল স্বল্পতা ও প্রশিক্ষিত জনবলের অপ্রতুলতা।
আইআরডি’র তথ্যমতে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট প্রায় ৩ লাখ ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ লাখ ২৯ হাজার ৩৫০ কোটি রাজস্ব আদায় হয়েছে।

এনবিআরের সাময়িক তথ্য মতে, গত অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর নিয়ন্ত্রিত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তীতে সংশোধিত বাজেটে এনবিআর নিয়ন্ত্রিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সে হিসাবে মূল লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব কম আদায় হয়েছে ৩৮ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা।

একইভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়, ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। পরে তা সংশোধন করে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৯ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু বছর শেষে তাও আদায় করা সম্ভব হয়নি। সে বছর রাজস্ব আদায় হয়েছিল মাত্র ২ লাখ ৬৫ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা। একইভাবে ২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও পরে তা সংশোধন করে ৩ লাখ ৫১ হাজার ৫৩২ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। বছর শেষে সেটিও  আদায় করা সম্ভব হয়নি।

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরকে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট দেওয়া ছিল ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। কিন্তু বছরের মাঝামাঝি সময় এসে দেখা যায় কোনোভাবেই এই টার্গেট অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে না। ফলে টার্গেট থেকে ১৬ হাজার ২১০ কোটি টাকা কাটছাঁট করে সংশোধিত আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় দুই লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ধারে কাছেও যাওয়া সম্ভব হয়নি। অর্থ বিভাগের এক প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এনবিআর খাতে রাজস্ব আদায়ের প্রকৃত পরিসংখ্যান হচ্ছে দুই লাখ ২৫ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা; যা কিনা সংশোধিত রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা কম।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজস্ব বাড়াতে বড় পরিকল্পনা
  • পতন থেমেছে, স্বস্তি ফেরেনি
  • জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন জরুরি
  • বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি আরও কমলো
  • গ্যাসের দাম বাড়াতে ‘অবাস্তব’ আশ্বাস
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির