অ্যাটলেটিকোর বিতর্কিত পেনাল্টিতে ড্র মাদ্রিদ ডার্বি
Published: 9th, February 2025 GMT
কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। লা লিগার গুরুত্বপূর্ণ এই ডার্বিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করলেও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
ম্যাচের প্রথমার্ধে বিতর্কিত এক পেনাল্টি থেকে অ্যাটলেটিকোর হয়ে গোল করেন জুলিয়ান আলভারেজ। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান এমবাপ্পে। এই ড্রয়ের ফলে ২৪ ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শীর্ষেই থাকলো রিয়াল, এক পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অ্যাটলেটিকো। তৃতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনা আজ সেভিয়ার বিপক্ষে জিতলে শীর্ষ দুই দলের সঙ্গে ব্যবধান কমাতে পারবে।
মাদ্রিদ ডার্বিতে প্রথমবারের মতো মাঠে নামেন এমবাপ্পে। ম্যাচে আনচেলত্তি রক্ষণাত্মক কৌশলের বদলে এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, জুড বেলিংহাম ও রদ্রিগোকে একসঙ্গে খেলান। প্রথমার্ধে দুই দলই রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত থাকায় তেমন গোলের সুযোগ তৈরি হয়নি। মাঝমাঠের লড়াইয়ে খেলা গতি হারালেও ভিনি একবার সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন তিনি।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে বিতর্কের জন্ম দেয় অ্যাটলেটিকোর পেনাল্টি। রিয়ালের মিডফিল্ডার অরেলিয়েন চুয়ামেনি পেনাল্টি বক্সে সামুয়েল লিনোর পায়ে চাপ দিলে ভিএআর দেখে স্পট কিকের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। পেনাল্টি থেকে আলভারেজ ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠিয়ে অ্যাটলেটিকোকে এগিয়ে দেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরে রিয়াল। রদ্রিগোর ডানদিক থেকে বাড়ানো ক্রসে বেলিংহামের শট প্রতিহত হলে ফিরতি বলে গোল করেন এমবাপ্পে।
এরপর একাধিক সুযোগ পায় রিয়াল। বেলিংহামের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে, আরেকটি শট অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক ঠেকিয়ে দেন। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে এমবাপ্পের শটও দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন ওবলাক। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগির মাধ্যমেই শেষ হয় উত্তেজনাপূর্ণ এই ডার্বি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন এমব প প
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠের বিদায় কেন ফেসবুকে
‘সব কিছু নিখুঁতভাবে শেষ হয় না। তার পরও একটা সময় শেষ বলে সামনে এগিয়ে যেতে হয়’– বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে দেওয়া অবসরের ঘোষণায় এই দুটি লাইনে মাহমুদউল্লাহর আক্ষেপটা টের পাওয়া যায়।
কী নিয়ে আক্ষেপ, সেটা সবার জানা। আর মাহমুদউল্লাহ একা নন; মাশরাফি মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম– বাংলাদেশের ক্রিকেটের সোনালি প্রজন্ম হিসেবে খ্যাত এই পাঁচজনের একই আক্ষেপ। মাঠের বদলে তাদের অধিকাংশের বিদায় নিতে হয়েছে ফেসবুক থেকে! যাদের হাত ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সিংহভাগ অর্জন, তাদের এমন আক্ষেপভরা বিদায় কেন? দায়টাই বা কার?
মাশরাফি মুর্তজাকে দিয়ে এই পঞ্চপাণ্ডবের বিদায়ের সূচনা। ১২ মার্চ মাহমুদউল্লাহকে দিয়ে সেই অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো। তবে মুশফিকুর রহিম এখনও টেস্ট থেকে অবসর নেননি। মাশরাফি অবশ্য অবসরের কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেননি। ২০০৯ সালে উইন্ডিজ সফরে চোট পাওয়ার পর থেকে তিনি আর টেস্ট খেলেননি।
২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে অভিমান করেই টি২০ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়েন। এরপরই গুঞ্জন ওঠে মিরপুরে বিদায়ী ম্যাচ খেলতে চান মাশরাফি। বিসিবি থেকেও আয়োজনের কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কী এক কারণে সেই ম্যাচ হয়নি।
সাকিব আল হাসান দেশের মাটি থেকে অবসর নেওয়া ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট শেষে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, শেষ টি২০ খেলে ফেলেছেন, দেশের মাটিতে টেস্ট থেকে অবসর নিতে চান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে ওয়ানডে ছাড়ার ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন। কিন্তু দুটোর একটাও হয়নি।
২০২৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার জেরে গত আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আর দেশে ফিরতে পারেননি। তাঁর নামে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে। তাই সাকিবের ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ বলেই ধরে নেওয়া যায়।
তামিম ইকবালের অবসর নিয়ে নাটক হয়েছে সবচেয়ে বেশি। জাতীয় দলে খেলবেন নাকি অবসর নেবেন, এ নিয়ে প্রায় দুই বছর নানা আলোচনার পর গত ১০ জানুয়ারি ফেসবুকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম। ফলে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেটি জাতীয় দলের হয়ে তাঁর শেষ ম্যাচ হয়ে রইল।
মুশফিকুর রহিম টি২০ বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের জেরে সমালোচনার শিকার হলে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে কুড়ি ওভারের ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বাজ পারফরম্যান্সের কারণে সমালোচনা হলে ওয়ানডে থেকে তিনি অবসরের ঘোষণা দেন ৫ মার্চ।
গত বুধবার মাহমুদউল্লাহর অবসরের পর একটা বিষয়ে জোরেশোরেই আলোচনা শুরু হয়েছে। কেন তারা মাঠ থেকে অবসর নিতে পারলেন না? মাঠ থেকে অবসর নেওয়ার সংস্কৃতি কী দেখা যাবে?
এ বিষয়ে গতকাল কথা বলেছেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন, ‘ওদের (মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ) ক্যারিয়ারটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য উজ্জ্বল ব্যাপার। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে একটা জায়গা থেকে আরেকটা জায়গায় নিয়ে এসেছিল ওরা। আমি মনে করি মাঠ থেকে অবসর ওদের প্রাপ্য। কেন ওরা মাঠ থেকে অবসর নিল না, সেটা ওরাই ভালো বলতে পারবে।’
বিষয়টা নিয়ে আফসোস করেছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারও, ‘মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারলে অবশ্যই ভালো হতো। সেটা তাদের প্রাপ্যও। বাংলাদেশ দলের জন্য যা করেছে, মাঠ থেকে নিতে পারলে খুব ভালো হতো। ভরা স্টেডিয়াম থেকে নিতে পারলে বিদায়টা প্রকৃত অর্থেই সুন্দর হতো।’
মাহমুদউল্লাহর বিদায় নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট সবার জন্যই বিষাদের একটি মুহূর্ত। প্রায় দুই দশক জাতীয় দলের অন্যতম প্রধান ভরসা ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। খেলার প্রতি তাঁর নিবেদন ও পারফরম্যান্স ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা মানদণ্ড তৈরি করেছে।’ তবে মাঠ থেকে বিদায় বিষয়ে কিছু বলেননি বিসিবি সভাপতি।