দুদকের জালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩৫ কর্মকর্তা
Published: 9th, February 2025 GMT
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান ৩৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ, অর্থ পাচার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিষয়ে এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি। সেগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। অনুসন্ধানে কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) ব্যক্তিগত লকার খুলে ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অর্থসম্পদ পায় দুদক। ঢাকায় তাঁর বাসায় তল্লাশিকালে ১৬ লাখের বেশি টাকা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখা গোপন লকারের তথ্য পায় সংস্থাটি। এরই সূত্র ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা (কয়েন) ভল্টে অন্য কর্মকর্তাদের লকার খোলার ব্যাপারে আদালতের অনুমতি নিয়েছে দদুক।
আজ রোববার ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের উপস্থিতিতে দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশেষ টিমের সদস্যরা লকারগুলো খুলবেন। পরে লকারের অর্থসম্পদের তালিকা করে দুদকের পক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতকে জানানো হবে।
আদালত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষণ করা লকার খোলার অনুমতি দেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কর্মকর্তাদের একাংশ লকার খোলার বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। অবশ্য অন্য অংশ চাচ্ছে, কর্মকর্তারা অতীতে অপকর্ম করে থাকলে, তা প্রকাশ পাক।
দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক দুই গভর্নর ড.
দুদকের তালিকায় সাবেক নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, খুরশিদ আলম, সাবেক পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ, সাবেক উপপরিচালক মোফাজ্জল হোসেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বরখাস্ত) সিকদার লিয়াকত ছাড়াও বিএফআইইউর তিন অতিরিক্ত পরিচালক, দুই যুগ্ম পরিচালক ও এক উপপরিচালক রয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি গত বছর ৫ আগস্টের পর ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ ও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, সেসব আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করছে দুদক। ২০০৬ সাল থেকে যেসব কর্মকর্তা বিএফআইইউতে কর্মরত ছিলেন বা এখনও আছেন, তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ সম্পদ অর্জন, জালিয়াতি করে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থ পাচার, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, প্রতারণার মাধ্যমে সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে টাকা আত্মসাৎ, রিজার্ভের অর্থে গঠিত তহবিল তছরুপের অভিযোগও অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি। ফলে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামে লকার রয়েছে, তারা চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে সড়ক নির্মাণে অনিয়ম অনুসন্ধানে দুদকের অভিযান
দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে সড়কে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে সড়ক পরিদর্শন করেন দিনাজপুর দুদকের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। তারা দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক পরিদর্শন করে সড়কে মাপজোখ করেন।
এ সময় দিনাজপুর দুদকের উপপরিচালক আতাউর রহমান সরকার, সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন, সহকারী পরিচালক খাইরুল বাশার, সহকারী পরিদর্শক শাহাজান আলী উপস্থিত ছিলেন। তদন্ত কমিটির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, দিনাজপুর সড়ক ও জনপদের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আমানুল্লাহ আমান।
দিনাজপুর দুদকের উপপরিচালক আতাউর সরকার জানান, দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ সড়কটি নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ মোতাবেক দিনাজপুর দুদক জেলা কার্যালয় থেকে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
সাবেক ওসি মাজহারের স্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ
আবেদ আলীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, ফ্ল্যাট-বাড়িসহ জমি জব্দ
তিনি বলেন, ‘‘ইতোমধ্যে দিনাজপুর থেকে বিরামপুর পর্যন্ত এসেছি। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দেখেছি ফুলবাড়ী থেকে বিরামপুর পর্যন্ত।’’
তিনি আরো জানান, তারা গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত যাবেন এবং তদন্ত করে তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যালোচনা করে কমিশনে পাঠাবেন।
ঢাকা/মোসলেম/বকুল